রি জি’র তরঙ্গের নিলামে প্রতি মেগাহার্টজের ফ্লোর প্রাইস ধরা হচ্ছে দেড় শ' কোটি টাকার সমপরিমান ডলার (প্রায় ১.৮ কোটি মার্কিন ডলার)। এর আগে খসড়া নীতিমালায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা -বিটিআরসি প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ফ্লোর প্রাইস ৩ কোটি ডলার ধরার প্রস্তাব করেছিল।
সম্প্রতি থ্রি জি নীতিমালা চূড়ান্তকরণের কাজ শুরু করেছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়। এ মাসেই এটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোস, যিনি আবার খুব তাড়াতাড়িই বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবেন তিনি। তার আগে থ্রি জি’র নীতিমালা চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে দেবেন তিনি। এ জন্যে আগামী ৭ অক্টোবর বিটিআরসি’র সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। খসড়া নীতিমালা তৈরী করতে গিয়ে এর যে সব বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে তা নিয়ে বিটিআরসি’র সঙ্গে আলোচনা করতে চায় মন্ত্রনালয়। বর্তমানে এ বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছে মন্ত্রনালয়ের তিন কর্মকর্তা। সব প্রক্রিয়া শেষ করে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহেই তা অর্থমন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে।
এর আগে গত ২৮ মার্চ বিটিআরসি থ্রি জি নীতিমালার একটি খসড়া তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। খসড়া ওই নীতিমালায় বিটিআরসি টেলিটকসহ পাঁচটি অপারেটরকে থ্রি জি সেবা দেওয়ার কথা বলে। এর মধ্যে আবার একটি নতুন অপারেটর রাখতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে এখানে খানিকটা ভিন্নমত করছে মন্ত্রনালয়। তারা বলছেন, একটি নতুন অপারেটর আসতে পারে। কিন্তু নতুন অপারেটরের জন্যে একটি জায়গা রেখে দেওয়া হবে এমনটি করা ঠিক হবে না। যদি নতুন অপারেটরের চেয়ে বিদ্যমানদের মধ্য থেকে নিলামে বেশী টাকা আসে সেটিই বরং বেশী ভালো হতে পারে। সে কারণে এই জায়গায় খানিকটা শীথিলতা আনতে চায় মন্ত্রনালয়।
যে সব কর্মকর্তারা থ্রি জি’র নীতিমালা নিয়ে কাজ করছে তাদের একজন জানিয়েছেন, টু জি’র লাইসেন্স নবায়নের তরঙ্গের মূল্য যেহেতু দেড়শ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল থ্রি জি’র নিলামের ফ্লোর প্রাইসেও সেটি রাখা যায়। ওই কর্মকর্তা বলেন, বেশী টাকা আনতে গিয়ে আবার যাতে উল্টো সরকারের টাকা পাওয়ার পথ বন্ধ না হয়ে যায় সে দিকেও তাদেরকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে।
আবার খসড়া নীতিমালায় প্রতি অপারেটরের জন্যে দশ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ রাখতে বলা হয়েছে। তবে মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। তারা শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাব গ্রহন করবে নাকি মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর বিকল্প প্রস্তাব গ্রহন করবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে আরো কিছুদিন লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
বিনিয়োগের অর্থ সব ডলারে আনতে হবে। খসড়া নীতিমালায় এমন শর্ত দেওয়া আছে। কিন্তু মন্ত্রনালয় মনে করে থ্রি জি’র নিয়োগের পুরো অর্থ ডলারে আনতে বলা যুক্তিযুক্ত নয়। সেক্ষেত্রে কেবল তরঙ্গ কেনা এবং লাইসেন্স ফি’র অর্থই ডলারে (সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ) হিসেবে আনাতে বলা যেতে পারে। ওই কর্মকর্তা বলেন, কোনো অপারেটরের হঠাৎ করে দুই কোটি টাকা লাগবে আর তাও বিদেশ থেকে ডলারে আনতে হবে সেটি করা ঠিক হবে না।
তবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের পর্যালোচনার পরেও এ বিষয়ক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রনালয় এমনকি সরকার প্রধানের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে আরো কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তাছাড়া মোবাইল ফোন অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও বৈঠক করবে মন্ত্রনালয়। ফলে সংযোজন বিয়োজনের সুযোগ থাকছেই।