আজকের ফ্লাই ওভার ভেঙ্গে পড়ার ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি , আজ হয়ত আমারও সলিল - সমাধি হতে পারতো শুধু ৪/৫ মিনিটের ব্যাবধানের জন্য । রাস্তার উপর ফ্লাই ওভারের নিচে , আজকেও পসরা সাজিয়ে বসে ছিল ৮/১০ জন দোকানী , গার্ডারের মাঝখানে ছিল রতন নামের এক কিশোরের চা-সিগারেটের দোকান। আমি আর আমার বড় মামা গিয়েছিলাম ভেঙ্গে পড়া গার্ডারের বিপরীতে একটি স্টুডিওর দোকানে ওয়াশ করা ছবি গুলো নিয়ে আসতে । মামা আর আমি রাস্তার ডান পাশ (যে পাশে গারডার ভেঙ্গে পড়েছে) দিয়ে হেটেই গিয়েছি!! মামা এই রতন একটা সিগারেট দে বলায় বুঝতে পারি ছেলে টি রতন এবং মামার পূর্ব পরিচিত ছিল , সে সময়ে বহদ্দার বাড়ির পুকুর পাড়ের দেয়ালের উপর বসা ১৩-১৫ জন কে দেখেছি, যারা নশ্চিত ভাবে ভেঙ্গে পডা গার্ডার সহ পুকুরের জলে চির নিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়েছে, আর দুটি গার্ডার ভেঙ্গে পড়েছে রতনের দোকানের উপর। উল্লেক্ষ, সে সময় তার দোকানে চা পান করা অবস্থায় ৪-৫ জন ছিল , আর
বাজারে ছিল ৮-৯ জনের মতো । সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২০-২৫ এর বেশি নয়।
গার্ডার ভেঙ্গে পড়া আর অলৌকিকভাবে বেচে ফেরাঃ-
মামা রতনের কাছ থেকে সিগারেট নিয়ে বলেন ,
ভাগ্ন
ে চল , আজকে হালকা শীত
লাগছে, ছবি গুলো নিয়ে বাসায় চলে যাই, আমি বললাম
ওকে মামা চলেন , গার্ডারের নিচ
থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হলাম । মামা দোকানে ঢুকলেন
আমি দোকানের
বাইরে দাড়িয়ে রইলাম। হঠাত্
কচ কচ শব্দ শুনে উপরে তাকাতেই দেখি ভেতরের
দিকে থাকা গার্ডার টা দু নম্বর
গার্ডারের গায়ে আছড়ে পরল আর দু
নম্বর টা পরল ৩ নম্বর টার উপর , ফলাফলঃ
মুহূর্তেই বিকট শব্দ , ৩ নম্বর
গার্ডারের অংশ বিশেষ পড়ল পুকুর
পাড়ে বসে থাকা অই ছেলে গুলোর
উপর, আর অর্ধেক অংশ উপরে, আর
দুটি গার্ডার সোজা বাজারের উপর । রতনের সাথে আর আমার
মামার দেখা হবেনা কোনোদিন। আজকের ঘটনা ঘটে যাবার পর গটল
আরেক নাটক , পুলিশ , আর ব্রিজের লোকজন লাশ উদ্ধার
করে সেগুলো কে কড়া পাহারায়
পুকুরে ফেলে দেবার চেষ্টা করে ।
অনেক নাড়ি -ভুড়ি, ছিন্ন-ভিন্ন
হাত পা ইত্যাদি ইত্যাদি । সাধারন জনতা এহেন কাণ্ড
দেখে অবাক হয় , হঠাত্ ই বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ।
ফলে জনতা মারমুখি হয়ে পড়ে রক্ষাকারী বাহিনীর
উপর । জনতা মিডিয়ার সামনে যখন
জিজ্ঞেস করে , দশ গজের মধ্যেই তো পুলিশ
ফাড়ি আপনারা বাজারের অনুমতি দিলেন কেন ? তখন
লেলিয়ে দেয়া হয় দাংগা পুলিশ , উত্তেজিত জনতা বহদ্দার হাট
পুলিশ ফাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, অগ্নি সংযোগ করে পুলিশের মোটর
সাইকেলে , এই সময় মুরাদপুর-কালুরঘ াট+ চকবাজার টু টারমিনাল সব
রাস্তায় যান
চলাচলে নিষেদ্ধাজ্ঞা জারি করা হয়। এখন জানিনা রাস্তায় আমার মৃত্যু
হলেও আমার লাশ পানিতে চেপে মৃতের
সংখ্যা কমানো হবে কিনা , এটি কোন কপি-পেস্ট পোস্ট নয়,
সো কেউ কোন বিরুপ মন্তব্য করবেন
না দয়া করে। আজ আসলেই মনে প্রশ্ন জাগল এ
কোন দেশে বাস করি আমরা ? পুলিশ কি উদ্ধার
তত্পরতা চালানোর জন্য ? নাকি মরা লাশ গুলোকে বাঁশ
দিয়ে চেপে চেপে পুকুরে পচিয়ে ফেলার জন্য ? আগে জানতাম পুলিশ আর
ফায়ার ব্রিগেত ডুবুরি দিয়ে লাশ
উদ্ধ্রার করে আর আজ জানলাম তারা লাশ
পানিতে কাদা মাটিতে চেপে ফেলতে জানে!! (Collected)