Start the With a Smile

Author Topic: Start the With a Smile  (Read 1316 times)

Offline Narayan

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 426
  • যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে।
    • View Profile
Start the With a Smile
« on: April 07, 2013, 12:24:59 PM »
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খানের জন্ম ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে। শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিওর উদ্ভাবক হিসেবে সালমান বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। ২০১২ সালের ৮ জুন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ১৪৬তম সমাবর্তনে তিনি এই বক্তব্য দেন।

আজকে এখানে আসতে পেরে আমি অসম্ভব সম্মানিত বোধ করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যে শুধু আমার জীবনের কয়েকটি শ্রেষ্ঠ বছর কাটিয়েছি, তাই নয়, বলা যেতে পারে, আমার জীবনকে গড়ে দিয়েছে এমআইটি। আজকে খান একাডেমি সৃষ্টির পেছনে এমআইটির অনুপ্রেরণা অনস্বীকার্য। তবে এমআইটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক শুধু অনুপ্রেরণার নয়, আরও বেশি কিছু। আমার অনেক কাছের বন্ধুরাই এখানকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী। আমার স্ত্রীও তাদেরই একজন। এখন খান একাডেমির যিনি প্রেসিডেন্ট, তিনি ছিলেন আমার ফার্স্ট ইয়ারের রুমমেট। তাঁর স্ত্রীও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সত্যি কথা বলতে কি, আমার এমআইটির বন্ধুদের শতকরা ৯০ ভাগই নিজেদের মধ্যে বিয়ে করেছে। আমি সব সময় বলি, এমআইটি হচ্ছে পৃথিবীর বুকে হ্যারি পটারের জাদুর স্কুল হগওয়ার্টস। এখানে যে উদ্ভাবনাগুলো জন্ম নেয়, তা জাদুর চেয়ে কিছু কম অবাক করা নয়। সারা পৃথিবী থেকে সম্ভাবনাময় তরুণেরা এখানে আসে। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকেই স্বাগতম জানায় এমআইটি। কেউ আসে বিপুল সম্পদশালী পরিবার থেকে, আবার অনেকের জীবনের ইতিহাস চরম দারিদ্র্যের। আমরা বুঝতে পারি এমআইটি হচ্ছে সেই স্থান, যেখানে আমরা নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো অতিক্রম করে এক অন্য উচ্চতায় উঠতে পারব।
নেতিবাচক জিনিসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকার জন্য, এই পৃথিবীতে তোমার নিজের ও চারপাশের মানুষের জীবনে সুখ বয়ে আনার জন্য আমি তোমাদের কিছু পরামর্শ দিতে পারি। প্রথমত, প্রতিটি দিন হাসি দিয়ে শুরু করো, জোর করে হলেও হাসতে চেষ্টা করো—একসময় সত্যিই তুমি অনেক ঝামেলার মধ্যেও খুশি থাকতে শিখে যাবে। ‘আমাকে করতে হবে’ এমনটা না বলে বলো, ‘আমি করব’, আগ্রহ আর উদ্যোগকে নিজের অন্তরের ভেতর থেকে আনতে চেষ্টা করো। প্রতিদিন যাদের সঙ্গে দেখা হয়, সবার সঙ্গে হাসিখুশি থাকো, শুধু ঠোঁটে নয়, তোমার চোখ, কান, মুখ, সারা শরীরে যেন সেই হাসির ছোঁয়া লেগে থাকে। নিজেকে ইতিবাচক চিন্তা আর শক্তির আধারে পরিণত করো। বিশ্বাস করো, নদীর ওপারের ঘাস নয়, বরং তুমি যে পারে আছ, সেদিকের ঘাসের রংই বেশি সবুজ। এই বিশ্বাসটুকুই তোমাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।
যখন খুব চাপের মধ্যে থাকবে, সমস্যার জালে জড়িয়ে পড়বে, তখন মনে করো, এটা একটা গভীর কৌশলের খেলা। এখানে সেই জিতবে, যে নিজের চিন্তাকে সঠিকভাবে কেন্দ্রীভূত করে যেখানে দরকার, ঠিক সেখানেই মনোযোগ দিতে পারে। সংকটের মুহূর্তে আবেগ কিংবা অহংবোধ যাতে তোমার যুক্তিকে আচ্ছন্ন করে ফেলতে না পারে। যখন দেখবে তোমার কাছের মানুষের সঙ্গে ঝগড়া বেধে গেছে, নিজের আত্মমর্যাদাকে ক্ষণিকের জন্য বিসর্জন দিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে সম্পর্কটাকেই বড় করে দেখো। যখন সংঘাত চরমে পৌঁছে, তখন তোমার ভেতরের গর্বিত, আত্মাভিমানী সত্তা তোমাকে যা করতে প্ররোচনা দেয়, ঠিক তার উল্টো কাজটিই করো। যদি পারো, নিজের মনকে একটু সংযত করে, ঝগড়ারত বন্ধুটিকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরো। তাকে বোঝাও, তুমি যে তোমার কাছে কতটা মূল্যবান, কতটা প্রিয়। যখন কোনো বৈষয়িক ব্যাপারে লাভ কিংবা ক্ষতি হয়, মনে রেখো, এসবই ক্ষণস্থায়ী। তোমার সুস্বাস্থ্য কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনায় এসব কিছুই নয়।
যখন কোনো কিছু অসহ্য লাগবে, রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখো। একবার ভাবতে চেষ্টা করো, ওই তারাগুলো কতদূরে, কত অসীম এই মহাকাশ, কতকাল আগে সৃষ্টি হয়েছিল এই মহাবিশ্ব! অসীম শূন্যতার দিকে তাকিয়ে একবার ভেবে দেখো তোমার মতো আরও কত মানুষ, জানা-অজানা কত প্রাণী ঠিক তোমার মতোই বিস্ময় নিয়ে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে, হয়তো এখনো আছে। কোনো নির্জন স্থানে চলে যাও, নিজের নাম, চিন্তা, ব্যস্ততা, দায়িত্বের বোঝা সব ভুলে গিয়ে নিজের ভেতরের সত্তার দিকে একবার তাকাও। একবার ভেবে দেখো, এই অনন্ত মহাবিশ্বের শূন্যতায় কোথায় তুমি দাঁড়িয়ে আছো, এত যে দুশ্চিন্তা তারই বা মূল্য কতটুকু!
মনের ভেতর থেকে যখন সুখী হতে পারবে, শান্তি পেতে পারবে, তখন বুঝবে সেটাই প্রকৃত সাফল্য। এসব কখনো অর্থ, বিত্ত, সামাজিক মর্যাদা এমনকি প্রশংসা থেকেও আসে না।
একটা কথা জেনে রেখো, জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নিচ্ছো, তা তোমার ক্যারিয়ারের চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি তুমি এমন কাউকে পাও যে তোমার মন খুশিতে ভরিয়ে দিতে পারে, যার সঙ্গে তোমার মূল্যবোধ মিলে যায়, যে তোমাকে সম্মান করে, তোমার বাইরের সবকিছু, সাফল্য, ব্যর্থতা—সবকিছুকে অগ্রাহ্য করে শুধু মানুষটি তুমি বলেই তোমাকে ভালোবাসে; তাহলে পৃথিবীর কোনো কিছু তোমাকে অসুখী করতে পারবে না।
আমি বলব, কখনো কোনো কিছুতে উৎসাহ পেলে, সোজা কাজে লেগে যাও। কাউকে উল্টোপাল্টা কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের মতো কাজ শুরু করো, অন্তত একবার চেষ্টা করে দেখ। অলসতা, অহংকার অথবা ভয়—এসব কিছু যাতে কখনো তোমাকে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা থেকে দমিয়ে রাখতে না পারে। নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলো, কিন্তু সেই সঙ্গে নিজের পছন্দের কাজগুলো করতে ভুলে যেয়ো না। শুধু একটি পদমর্যাদা, বা বিশাল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মালিকানাই তোমার সবকিছু নয়। তুমি নৃত্যশিল্পী, তুমি কবি, তুমি আবিষ্কারক, তুমি উদ্ভাবক! নিজের শখের জিনিসগুলোকে জীবনে জায়গা করে দিলে সেগুলো তোমাকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যাবে।
২০১২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, আমাদের তরুণ জাদুকরের দল, ভেবে দেখো, এই দ্বিতীয় জীবন নিয়ে তোমরা কী করবে!


Courtesy: Prothom-Alo
« Last Edit: April 07, 2013, 04:37:37 PM by Shamim Ansary »
Narayan Ranjan Chakraborty
Assistant Professor
Department of CSE
Daffodil International University.