কোরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে মেরাজ

Author Topic: কোরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে মেরাজ  (Read 4247 times)

Offline yousuf miah

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 173
    • View Profile
 সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (স.)  এর ২৩ বছরের নবুয়তি জীবনের অন্যতম অলৌকিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো মেরাজ। মেরাজ গমন করে হজরত মুহাম্মদ (স.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছ থেকে উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আদেশসহ ইসলামী সমাজ পরিচালনার বিধিবিধান নিয়ে আসেন। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে সূরা বনি ইসরাইলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বিশ¡ মানবতার মুক্তির ল্েয ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীন জীবন ব্যবস্থা হিসেবে রূপ দেওয়ার জন্য তিনি বিশ¡ পালনকর্তা আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পেয়েছিলেন মেরাজ রজনীতে। এ জন্য এ রাতটি মুসলমানের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সব মুজিযার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুজিযা হলো মেরাজ। এ রাতে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজে সব নবীর ইমাম হয়ে সাইয়িদুল মুরসালিনের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ফলে এ রাতটি নিঃসন্দেহে তার শ্রেষ্ঠত্বের গৌরবোজ্জ্বল নিদর্শন বহন করে।

মেরাজ রজনীতে (২৬ রজব) হজরত রাসূলুল্লাহ (স.) উম্মে হানী বিনতে আবু তালিবের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম এসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে মসজিদুল হারামে নিয়ে যান। যেখানে তার বুক বিদীর্ণ করে জমজম কূপের পানি দিয়ে সীনা মোবারক ধৌত করে শক্তিশালী করেন। এ ঘটনাকে  ’'শাক্কুস সদর’ বলে। নবী (স.)-এর জীবনে অন্তত তিনবার এমনটা হয়েছে। তারপর সেখান থেকে তিনি ‘বোরাক’' নামক এক ঐশী বাহনে চড়ে বায়তুল মোকাদ্দাসে এসে সব নবীর ইমাম হয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। তারপর তিনি বোরাকে চড়ে ঊধর্্েব গমন করতে থাকেন। একের পর এক আসমান অতিক্রম করতে থাকেন। পথিমধ্যে মূসা (আ.)সহ অনেক নবী-রাসূলের সঙ্গে সাাৎ হয়। সপ্তম আসমানের পর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বায়তুল মামুর পরিদর্শন করানো হয়। বায়তুল মামুরে দৈনিক ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রবেশ করেন।
ফেরেশতাদের সংখ্যা এত বেশি যে, যারা একবার এই বায়তুল মামুরে প্রবেশ করেন কেয়ামত পর্যন্ত তাদের সেখানে প্রবেশ করার পালা আসে না। সেখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (স.) স্বচে জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্য করেন। এরপর হজরত রাসূলুল্লাহ (স.)-এর সামনে একপাত্র মদ, একপাত্র দুধ এবং একপাত্র মধু আনা হয়। তিনি এর মধ্য থেকে দুধের পাত্রটি গ্রহণ করেন। তখন হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, এটা ফিৎরত বা স্বভাব ধর্মের নিদর্শন। আপনি এবং আপনার উম্মত এই স্বভাবধর্ম ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবেন।

বায়তুল মামুরে হজরত জিবরাইল (আ.)-কে রেখে তিনি ‘'রফরফ’' নামক আরেকটি ঐশী বাহনে চড়ে বিশ¡ স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার দরবারে হাজির হন। কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, মেরাজ রজনীতে হজরত রাসূলুল্লাহ (স.) আল্লাহতায়ালার এতটা কাছাকাছি গিয়েছিলেন যে দু’জনের মধ্যখানে মাত্র এক ধনুক পরিমাণ ব্যবধান ছিল। এখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতের ওপর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হলো। পরবর্তী সময়ে পুনঃ পুনঃ আবেদনের প্রেেিত আল্লাহপাক দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উম্মতে মুহাম্মদির ওপর ফরজ করেন, যা ইসলামের পাঁচটি রুকনের অন্যতম রুকন বা ভিত্তি। আর এই নামাজই মানুষকে যাবতীয় পাপাচার ও অনাচার থেকে রা করে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করে।

হজরত রাসূলুল্লাহ (স.)-এর মেরাজ গমনের বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়া মুফাসসীররাও এ সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য-প্রমাণাদি পেশ করেছেন। যদিও মেরাজের ঘটনা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয়-সন্দেহ নেই। আমাদের সমাজের অনেকেই মেরাজের ঘটনার েেত্র কোরআন-হাদিসের রেওয়ায়েতের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে মেরাজের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিশেল্গষণ। এটা এক ধরনের হীনম্মন্যতা। কারণ মেরাজ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের প্রচুর বর্ণনা এসেছে; এটাকে পাশ কাটিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে মেতে থাকা ঠিক না। তবে হ্যাঁ, বৈজ্ঞানিক বিশেল্গষণ হতে পারে কোরআন হাদিসের সহায়ক।

কারণ কোরআন ও সহীহ হাদিসের অকাট্য তথ্য একজন মুসলমান মানতে বাধ্য। একজন খাঁটি মুসলমানের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে মেরাজের সত্যতা প্রমাণের অপো না করে এ বিষয়ে মনেপ্রাণে বিশ¡াস স্থাপন করার নামই ইমান। তাই হজরত রাসূলুল্লাহ (স.)-এর মেরাজ গমনের কথা একজন অবিশ¡াসীর মুখে শুনে হজরত আবু বকর (রা.) তৎণাৎ বিশ¡াস করেছিলেন বলেই হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে (সিদ্দিক)' উপাধি দিয়েছিলেন। মেরাজের মাধ্যমে মহানবী (সা.)কে আধ্যাÍিক অভিজ্ঞতা দান করা হয়, যেন মানুষ আল্লাহর নিদর্শন উপলব্ধি করতে পারে এবং স্বচ্ছ ধারণা অর্জন করতে পারে।

মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে ’'মেরাজ’' এমন সময় সংঘটিত হয়েছিল যে সময়টি ছিল তার জীবনের সবচেয়ে দুর্যোগময় মুহূর্ত। কুরাইশদের দ্বারা মহানবী (সা.) এবং তার অনুসারীদের সামাজিকভাবে বয়কট, প্রিয় স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.) ও একমাত্র অভিভাবক চাচা আবু তালিবের ইন্তেকাল, তায়েফবাসীর লাঞ্ছনা মহানবীকে মানসিকভাবে মর্মাহত করে। আর এমনই সময়ে মহান আল্লাহর কাছ থেকে আমন্ত্রণ এলো মেরাজের। মেরাজের রাতে মহান আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় বন্ধুকে একান্ত সান্নিধ্যে নিয়ে আসেন। আল্লাহ রাসূল (সা.)কে ইসলামের বাস্তবায়ন রূপরেখা, ভবিষ্যতের কর্মপন্থা এবং মুমিনদের জন্য সর্বোত্তম ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ামতস্বরূপ দান করেন। সে জন্য বলা হয়েছে, ‘'আস্সালাতু মিরাজুল মুমিনিন’' নামাজ মুমিনদের জন্য মিরাজস্বরূপ। ইসলামের প্রত্যেকটি ইবাদতের বিধান আল্লাহতায়ালা হজরত জিবরাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে মহানবী (স.)-এর কাছে প্রেরণ করেন। কিন্তু নামাজই একমাত্র ইবাদত যা কোনো মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহতায়ালা সরাসরি মহানবী (স.)-এর ওপর ফরজ করেছেন। সুতরাং আমাদের উচিত হলো সমাজে নামাজ কায়েম করতে সচেষ্ট হওয়া। আর এটাই হোক এবারের শবেমেরাজের অঙ্গীকার।

Offline russellmitu

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1576
  • Test
    • View Profile
SOBHAN ALLAH
KH Zaman
Lecturer, Pharmacy

Offline A.S. Rafi

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 672
    • View Profile
Thank you so much sir for your insightful post.
Abu Saleh Md. Rafi
Senior Lecturer,
Department of English.
Faculty of Humanities and Social Sciences
Daffodil International University.

Offline russellmitu

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1576
  • Test
    • View Profile
SOBHAN ALLAH
KH Zaman
Lecturer, Pharmacy