What need to do for Job Preparation in Telecommunication sector?

Author Topic: What need to do for Job Preparation in Telecommunication sector?  (Read 1330 times)

Offline najnin

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 134
  • Test
    • View Profile

গত ৯ই জুন ছিল ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিভিন্ন কারণে সেদিন খুব একটা আনন্দ করার সুযোগ ছিল না। যেহেতু বিভাগের শিক্ষকরা-ছাত্ররা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দিন  উপলক্ষ্যে পুরোনো ছাত্র-ছাত্রীদের দাওয়াত দেয়া হবে, সেই সাথে বিভিন্ন টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত কোম্পানীগুলো হিউম্যান রিসোর্স বিভাগ এবং টেকনিক্যাল বিভাগের প্রধানদেরও দাওয়াত দেয়া হবে,  তাদের কাছ থেকে জানতে হবে বর্তমানে টেলিযোগাযোগ খাতে দেশে এবং বিদেশে চাকুরী বা ব্যবসার সুযোগ সুবিধাগুলো কেমন, আর যুগের চাহিদা অনুযায়ী এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে গেলে একজন ছাত্রের কি কি প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। যেই ভাবা সেই কাজ! বিটিআরসির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে টেলিটক, গ্রামীণ ফোন, বাংলালিঙ্কসহ আরো কিছু কোম্পানী এইচ আর প্রধানদের এবং টেকনিক্যাল বিভাগের প্রধানদের দাওয়াত করা হলো। সবার কাছ থেকে সম্ভাব্য সময় চেয়ে নিয়ে দিন ধার্য হলো ২২শে জুন, শনিবার। সারাদিনব্যাপী প্রোগ্রামের আয়োজন করতে শিক্ষক-ছাত্র সবাই মিলে তোড়জোড় শুরু  করলো। অবশেষে আসলো কাংখিত দিন! সকাল ১০টা থেকে শুরু হলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সুনীল কান্তি বোস। আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডঃ লুৎফর রহমান, প্রফেসর এমিরেটাস এম. আমিনুল ইসলাম। ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিযোগাযোগ  ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনেক না জানা কথাই জানা গেল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগটিই টেলিযোগাযোগ বিষয়ে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করে ২০০৩ সালের ৯ই জুন। প্রতিটি শিক্ষাবছরে তিনটি সেমিষ্টার করে চার বছরে মোট ১২টি সেমিষ্টারে ল্যাবরেটরী কোর্সসহ প্রায় ১৫০ ক্রেডিট কোর্স পড়তে হয়।   এরই মাঝে এই বিভাগ থেকে ৫০০ জনের উপরে ছাত্র গ্রাজুয়েট হয়েছে। পাশ করা ছাত্ররা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের বড় বড় কোম্পানীগুলোতে চাকুরী পেয়েছে। বিটিআরসি, টেলিটক, কক্সবাজার সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডস্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারী কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং এয়ারটেল, এডিএন টেলিকম, দৃক আইসিটি, ফ্লোরা লিমিটেডসহ নানা ধরনের প্রাইভেট টেলিকম ও ডাটা নেটওয়ার্ক কোম্পানীগুলোতে এই বিভাগেরর ছাত্ররা সাইট ইঞ্জিনিয়ার, কোর ইঞ্জিনিয়ার, আইপি টেলিফোনী ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছে। বেশ কয়েকটি টিভি ব্রডকাস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেও এখানকার ছাত্ররা কাজ করছে। বিভিন্ন ইন্টারন্যাশানাল গেটওয়ে কোম্পানীগুলোতেও তারা আছে। এই পর্যন্ত পাশ করা কোন ছাত্রই বেকার বসে নেই। বিটিআরসির চেয়ারম্যান স্যার জানালেন আমাদের দেশে টেলিযোগাযোগ খাতে কি কি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেটা তিনি দিয়েছেন তা হলো বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে টেলিযোগাযোগ খাতে এবং এ খাত থেকেই সরকার সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ পাচ্ছে।

সরকারের আইসিটি পরিকল্পনায় বিভিন্ন চাকুরীর সুবিধা তৈরী হলেও তবে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারী চাকুরী করতে নিরুৎসাহিত করলেন, কারণ হিসেবে বললেন বেসরকারী খাতে সারা বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক  বাজারে প্রতিযোগিতা করে নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যেটা সরকারী চাকুরীতে কম। এরপর শুরু হলো টেকনিক্যাল সেশন। উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণ ফোনের এলটিএস ও ব্রডকাস্ট টেকনোলজি বিভাগের সিনিয়র স্পেশালিস্ট মোঃ সাফায়াত উল্যা পাটোয়ারী। তিনি আলোচনা করলেন মেটাডাটা নিয়ে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কি প্রচুর পরিমাণে ডাটা প্রস্তুত হবে এবং কত দক্ষতার সাথে আমরা সেগুলো সংরক্ষণ করতে পারবো, এর জন্যে আমাদের কি পরিমাণ স্টোরেজ ক্ষমতার প্রয়োজন হবে এসব নিয়ে। আরো উপস্থিত ছিলেন টেলিটকের মার্কেটিং এবং সেলস বিভাগের জিএম, মোঃ হাবিবুর রহমান। তিনি তুলে ধরলেন ওয়ারলেস ও মোবাইল কমিউনিকেশান খাতে এই বিভাগের ছাত্রদের চাকুরী পেতে হলে কি কি টেকনিক্যাল বিষয়ে ভাল জ্ঞান থাকতে হয়, যখন তারা ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত থাকেন তখন কি কি ধরণের প্রশ্ন করা হয়  টেলিযোগাযোগ বিষয়ে। বললেন তৃতীয় জেনারেশনের মোবাইল কমিউনিকেশানের বাংলাদেশে শুভযাত্রার কথা, উচ্চমাত্রার ইন্টারনেট স্পিড আমরা পেতে পারি এই প্রযুক্তি দিয়ে, টেলিটক ইতিমধ্যে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকসেবা দিতে শুরু করেছে। আরো কিছু কোম্পানী লাইসেন্স পাবার জন্য অপেক্ষা করছে।

এর পাশাপাশি চললো বিভাগের ছাত্রদের নিজেদের তৈরী করা বিভিন্ন বাস্তবমুখী প্রজেক্ট, এর মাঝে অটোমেটিক স্মার্ট অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম, রিনিউএবল এনার্জির উপর ভিত্তি করে নির্মিত স্মার্ট সিটি অন্যতম।

দুপুরের পর শুরু হলো ক্যারিয়ারের উপর আলোচনা। একটা ইন্টারভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হতে গেলে একজন টেলিকমের ছাত্রের কি কি প্রস্ততি প্রয়োজন। উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণ ফোনের টেকনিক্যাল প্ল্যানিং বিভাগের ডেপুটি জিএম মো। আনোয়ার হোসেন, বাংলালিঙ্কের প্ল্যানিং বিভাগের প্রধান মি. মনজুর আহমেদ চৌধুরী, আরো ছিলেন দৃক আইসিটির  এমডি আলতাফ হোসেন, যিনি আইইইই কমিউনিকেশান সোসাইটি, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। কিছু কথা সবাই-ই বললেন, টেলিযোগাযোগ খাতে নেটওয়ার্কিং দিকেও ক্যারিয়ার গড়া যায়, আবার কোর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেও ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। যারা নেটওয়ার্কিং-এর উপর ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক তাদেরকে সিসকো কোম্পানীর সিসিএনএ (CCNA) প্রফেশনাল কোর্সটি অবশ্যই করা থাকতে হবে। সিসিএনএ-এর পরবর্তী উচ্চ প্রফেশনাল কোর্সগুলো করা থাকলে আরো ভাল। সাবজেক্ট সম্পর্কিত কিছু টেকনিক্যাল টার্ম  অবশ্যই সব ছাত্রের জানা প্রয়োজন। যেমন ভয়েস এবং ডাটা কমিউনিকেশানের জন্য বিভিন্ন ডাটা রেট সার্ভিস,  সাবনেটিং, আরলং, ব্লকিং প্রোবালিটি, ভিওআইপি-র প্রটোকলসমূহ (SIP, H.323, SS7) ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। যারা কোর ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার গড়তে চায় বা সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার বা এডমিনিস্ট্রেশন লেভেলে চাকুরি পেতে চায় তাদের লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম জানা জরুরী। যারা মোবাইল এপ্লিকেশানের উপর চাকুরী ক্রতে চায় তাদের জাভা প্রোগ্রামিং ভাষা জানা জরুরী। এছাড়াও ভিওআইপির সফটওয়্যার টুলস বা ইলেকট্রনিক্স সম্পর্কিত নানাবিধ এপ্লিকেশান টুলস সম্বন্ধে ভাল দক্ষতা থাকা জরুরী। আর এ প্রফেশনাল কোর্সগুলো মূল সিলেবাসের পাশাপাশিই সম্পন্ন করতে হবে। তবে বর্তমানে এন্টারপ্রিনিওরশিপের উপর জোর দেয়া হচ্ছে। একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়তে পারে আইআইজি, আইজিডব্লিউ উপর বা ডাটা সেন্টার গড়ে তুলতে পারে তাহলে সে নিজে আরো কয়েকজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। আরেকটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দিতে যাবে ছাত্ররা সেই কোম্পানীর ওয়েবসাইট ভাল করে ঘেঁটে সংশ্লিষ্ট কোম্পানী সম্বন্ধে ভাল করে জেনে যাওয়া ভাল, এটা ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা থাকে তাদেরকে বেশ আগ্রহী করে তোলে সেই প্রার্থীর প্রতি। প্রতিটি সেশনের পরে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব, ছাত্ররা আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছে। তারপরের পর্বটি ছিল বিভাগের পুরোনো ছাত্রদের নিয়ে। তারা নিজেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় কিভাবে পড়াশোনা করেছে, কিভাবে নিজেদের গড়ে তুলেছে, ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কি কি সমস্যায় পড়েছে, এসব নানান অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে তাদের সতীর্থদের সাথে। তারা জানালো তাদের সাফল্যগাঁথার কথা। বর্তমনা ছাত্রদের সেদিনকার অনুভূতি ছিল খুবই উৎসাহব্যঞ্জক, তাদের চোখে মুখে ফুটে ঊঠেছিল গভীর আত্মপ্রত্যয়, একদিন তারাও পারবে!  সবশেষে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভাগের নতুন-পুরাতন ছাত্ররা, শিক্ষকেরা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা মিলে বেশ আনন্দে, হৈ চৈ করে কাটিয়ে  দিয়েছে সারাদিন।