পরিপাক তন্ত্র
মুখ গহ্বর : মুখের লালা রোগ জীবাণুকে ধুয়ে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই লালাতেও আছে সেই লাইমোজাইম নামের বিশেষ এক ধরনের এনজাইম যা কিনা বহু ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে।
পাকস্থলী : পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত হয় তীব্র হাইড্রোক্লোরিক এসিড যা অনেক ক্ষতিকর জীবাণুকে মেরে ফেলে।
ক্ষুদ্রান্ত : এখানে রয়েছে প্রোটিন ও লাইটিক এনজাইম নামে আমিষ বিশ্লেষক বিশেষ এক ধরনের এনজাইম এবং ম্যাক্রোফেজ নামের বিশেষ খাদক কোষ যারা রোগজীবাণু ধ্বংস করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও পিত্তথলিতে পিত্ত রসের মধ্যে থাকে পিত্ত লবণ বা বাই সল্ট যা কিনা গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। শুধু তাই নয়, ক্ষুদ্রান্তে রয়েছে বেশকিছু ব্যাকটেরিয়া গুচ্ছ বা ব্যাকটেরিয়াল ফ্লোরা, যারা বহিরাগত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার থেকে দেহকে রক্ষা করে।
বৃহদন্ত : বৃহদন্তের মিউকাস জীবাণুগুলোর বিস্তার রোধ করে।
চোখ : চোখের পানি রোগজীবাণু, ধুলো-ময়লা সব ধুয়ে চোখকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। চোখের পানিতেও লাইমোজাইম রয়েছে।
দেহকোষের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা : দেহের প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে ফ্যাগোসাইট বা খাদক কোষ, রক্ত কোষের শ্বেত কণিকা, প্রোটিন, সাইটোকাইন ইত্যাদি দেহের বহিরাগত রোগ জীবাণুর বিস্তারকে বাধা দেয়। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু বিশেষ ধরনের কোষ আছে যারা নিজেরাই ভাইরাস, ক্ষতিকর ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে। এদের বলে নেচারাল কিলার সেল বা এনকে সেল।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যান্য নিয়ামক
বয়স : তিন বছরের কম এবং পঁচাত্তর বছরের বেশি বয়স্ক মানুষের দেহে রোগ বেশি ছড়ায়।
জ্বর : জ্বর মোটেও কোনো রোগ নয়। এটা কেবলই একটা উপসর্গ মাত্র। ইনফেকশন প্রতিরোধে জ্বরেরও কিছু ভূমিকা রয়েছে।
হরমোন : দেহে কর্টিকো স্টেরয়ড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে দেহ ইনফেকশন বা সংক্রামক রোগে দুর্বল হয়ে পড়ে।
খাদ্য ও পুষ্টি : অপর্যাপ্ত পুষ্টি বা ম্যালনিউট্রিশন দেহে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষ গোত্র ও প্রজাতি : যক্ষ্মা বা টিউবারকুলো-সিস হওয়ার ঝুঁকি ইউরোপিয়ানদের চেয়ে আফ্রিকানদের বেশি। ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কালো চামড়াওয়ালাদের চেয়ে সাদা চামড়াওয়ালাদের বেশি ইত্যাদি। যদিও বর্ণ-গোত্রবিশেষে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার তারতম্য নিয়ে কিছুটা বিতর্কও আছে। তারপরও ইমিউনোলজিস্টরা এ বিষয়টিকেও গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।
Source:রোগ শোকের কথা