Bombacoideae Adansonia (বাওবাব)

Author Topic: Bombacoideae Adansonia (বাওবাব)  (Read 1180 times)

Offline Asif.Hossain

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 233
    • View Profile
Bombacoideae Adansonia (বাওবাব)
« on: October 20, 2013, 12:51:10 PM »
বাওবাব

Kingdom: Plantae
Order: Malvales
Family: Malvaceae
Subfamily: Bombacoideae
Genus: Adansonia

স্থানীয় ভাষায় এই গাছের অন্যান্য অর্থবোধক নাম - বাওব, বোওবোয়া, বোতল বৃক্ষ, উল্টা বৃক্ষ এবং মাঙ্কি ব্রেড বৃক্ষ।
ইংরেজি : baobab।
Malvaceae গোত্রের এই বৃক্ষের আদি নিবাস আফ্রিকা। ফরাসি প্রকৃতিবিদ ও পর্যটক মাইকেল এডানসন-এর সম্মানে এই গাছটির গণের নাম রাখা হয়েছে Adansonia । তিনিই  Adansonia digitata প্রজাতিটিকে প্রথম যথার্থ বর্ণনা করেছিলেন।

এর অধিকাংশ প্রজাতি পাওয়া যায় আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। এই প্রজাতিগুলো হলো :  Adansonia grandidieri Baill, Adansonia madagascariensis Baill, Adansonia perrieri Capuron, Adansonia rubrostipa Jum. & H.Perrier (syn. A. fony), Adansonia suarezensis H.Perrier, Adansonia za Bail। মাদাগাস্কারের বাইরে আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডে পাওয়া যায় (পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব, কেন্দ্র ও দক্ষিণ অংশে) Adansonia digitata L.  প্রজাতি পাওয়া যায়। এই প্রজাতিটি এশিয়ার ওমান, ইয়েমান অঞ্চলেও জন্মে। অস্ট্রেলিয়ায় বায়োবাবের যে প্রজাতিটি পাওয়া যায়, বৈজ্ঞানিক নাম Adansonia gregorii F.Muell. (syn. A. gibbosa) ।

Adansonia grandidieri Baill

এডানসোনিয়া গণের এই গাছগুলো ৫ থেকে ৩০ মিটার লম্বা হয় এবং এদের কাণ্ড ৭ থেকে ১১ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পোপো প্রদেশের সানল্যান্ড নামক একটি খামারে অবস্থিত বাওবাব গাছের পরিধি প্রায় ৪৭ মিটার এবং উচ্চতা ২২ মিটার  রেকর্ড করা হয়েছে । কথিত আছে কিছু বাওবাব গাছের বয়স কয়েক হাজার বছর। যেহেতু গাছগুলোর কাণ্ডে কোনও বর্ধন-বলয় থাকে না, তাই গাছগুলোর বয়স যাচাই করা কঠিন। অবশ্য যদিও কার্বন-১২ পরীক্ষণ পদ্ধতিতে এর গাছগুলোর বয়স নির্ণয় করা সম্ভব। রেডিওকার্বন-এর বয়স নির্ণয় পদ্ধতি ব্যবহার করে, সব থেকে পুরানো গাছটির বয়স প্রায় ৬০০০ বছর অনুমান করা হয়েছে। এই বিচারে এই গাছটি পিরামিড থেকেও পুরানো এবং যিশু খ্রিষ্টের জন্মের কয়েক হাজার বছর আগে এই গাছটি জন্মেছিল। খামারের মালিক এই গাছটির ভিতরের ফাঁপা অংশে একটি পাব বানিয়েছে।

মূলত শুষ্ক অঞ্চল বা কম অথবা সামান্য বৃষ্টিপাত হয়, সেখানে এই গাছ বেঁচে থাকতে পারে। জলাবদ্ধ জায়গায় এই গাছ জন্মে না। বন্যা, খরা, বজ্রপাত-প্রধান এলাকায় এই গাছ বেশিদিন বাঁচে না। প্রাণীকূলের ভিতরে হাতি এই গাছের ক্ষতি করে। এছাড়া এক ধরনের কালো ফাঙ্গাস এই গাছের মৃত্যু ঘটায়। এই সকল প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রম করে একটি গাছ যদি প্রায় ৮০০ বৎসর টিকে থাকতে পারে, তাহলে এই গাছের প্রকৃত রূপ দেখতে পাওয়া যায়। অন্যান্য গাছের মতো এই গাছের সবগুলোর গড়ন একই রকম হয় না। প্রজাতিভেদে এবং আঞ্চলিক পরিবেশের এই গাছ অদ্ভুদ সব আকার পায়।

দক্ষিণ-পশ্চিম মাদাগাস্কারের ইফাটি অঞ্চলের গাছগুলো দেখতে অনেকটা বোতলের মতো হয়। এই অঞ্চলের লোকগাঁথায় বলা হয়ে থাকে, ঈশ্বর আদিতে এই বৃক্ষ সৃষ্টি করে ভূমিতে রোপণ করেছিলেন। এরপর ঈশ্বর তাল গাছ তৈরি করলে, বাওবাব ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করলো যে, কেন তাকে তাল গাছের মতো লম্বা করা হলো না। ঈশ্বর এ বিষয়ে কিছু বললেন না। কিছুদিন পর বাওবাব কিছু চমৎকার লালফুল যুক্ত গাছ দেখে, ঈর্ষান্বিত হয়ে ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ পেশ করলো যে, তাকেও কেন এরকম ফুল দেওয়া হলো না। ঈশ্বর এবারও কিছু বললেন না। এর কিছুদিন পর এই গাছ কিছু ডুমুর জাতীয় গাছ দেখে ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করে বললো, তাকে কেন ডুমুর গাছগুলোর মতো ফল দেওয়া হলো না। এরপর ঈশ্বর ক্রুদ্ধ হয়ে, এই গাছটিকে উৎপাটন করে, ডাল-পালা অংশ মাটিতে পুঁতে দিলেন। এই কারণে এই গাছ দেখে মনে হয়, এর শিকড়-বাকড় গাছের কাণ্ড হিসাবে শোভা পাচ্ছে। অন্য মতে, দেবতারা গাছগুলোকে তৈরি করার পর আকাশ থেকে মাটির দিকে নিক্ষেপ করেছিল। নিক্ষেপিত সকল গাছের শিকড় মাটির দিকে থাকলেও এই গাছ ঘুরে গিয়ে ডালাপালসহ মাটির ভিতর পুঁতে গিয়েছিল।

Adansonia madagascariensis Baill

এই গাছগুলোর কাণ্ড প্রকাণ্ড মোটা এবং ফাঁপা হয়। এই গাছের অভ্যন্তরে পানি ধরের রাখার ক্ষমতা অনেক বেশি। কোনো কোনো গাছ তার কাণ্ডের ভিতর ১২০,০০০ লিটার পানি ধরে রাখতে পারে।

এই গাছের ফল প্রায় ১৮ সেমি লম্বা হয় এবং কমলার থেকে বেশী পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। শুকনো ফলের পাল্প, বীচি থেকে আলাদা করে দুধের সাথে মিশিয়ে অথবা সরাসরি খাওয়া হয়। মালাউইতে এই ফলের পাল্প থেকে জুস বানানো হয়। স্যুপ ঘন করার জন্য এই ফলের বীজ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া ভাজা বীজ সরাসরি খাওয়া যায়। এর বীজ থেকে তেল উৎপন্ন হয়। তন্তুর উৎস, রং তৈরীতে বা জ্বালানি হিসেবেও এই গাছের ব্যবহার হয়। তাঞ্জানিয়ায় এই গাছের পাল্প আখ থেকে বিয়ার তৈরীতে চোলাইকরণের জন্য ব্যবহার হয়।

মালাউই, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, সাহেল-সহ আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে এই গাছের পাতা সব্জি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাতা টাটকা ও শুকনো গুড়ো দুই ভাবেই খাওয়া যায়ে। উত্তর নাইজেরিয়ায় এই পাতা স্থানীয়ভাবে কুকা নামে পরিচিত এবং কুকা স্যুপ তৈরীতে ব্যবহার করা হয়।
 

জাপানের পেপসি কোম্পানি বাওবাব ব্যবহার করে 'বাওবাব-পেপসি' নামে সীমিত-সংস্করণে টক স্বাদযুক্ত কার্বনেটেড পেপসি উৎপাদন করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ছাড়পত্র না পাওয়ায় সেখানে গোটা ফল পাওয়া যায় না। কিন্তু শুকনো ফলের পাল্প সীমিত আকারে স্মুদি ও সেরিয়াল-এর খাদ্যোপাদান হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দিয়েছে। আফ্রিকার বাইরে এই ফলের ব্যাপক ব্যবহার হয় না।

 

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সাভানুর-এ ৩টি এই গাছ আছে। এদের বয়স আনুমানিক ৫০০০ বছর এবং পরিধি ১৪-১৮মিটার।
১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে van Heerdens একটি গাছের মাঝখানের ফাঁকা অংশ পরিষ্কার করেন। তখন তিনি অনুমান করেছিলেন একসময় ভারতীয় বুশম্যানরা হয়তো এখানে বাস করতো।


গ্রন্থনা : প্রণব বণিক।

তথ্য সূত্রঃ
 http://www.baobabshop.com/baobab-information/baobab-interesting-facts
http://www.bigbaobab.co.za/baobab.html
http://en.wikipedia.org/wiki/Adansonia
http://www.baobabppc.org.za/home/item/1-myths-legends
« Last Edit: October 23, 2013, 03:06:17 PM by Asif.Hossain »
Muhammad Asif Hossain
Assistant Registrar
Office of the Registrar
Daffodil International University