এবারের ঢাকা লিগে নিয়মিত পারফরমারদের একজন তিনি। কালও শেখ জামালকে সুপার লিগে তোলা জয়ে তাঁর অবদান ৪৯ বলে অপরাজিত ৫০। জাতীয় দলের হয়ে আর বিপিএল খেলতে এসেছেন আগে, এবার ঢাকা লিগ খেলতে এসে থাকছেন অনেক দিন। জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার এলটন চিগুম্বুরা জানাচ্ছেন তাঁর এবারের বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা
আপনারা বাদই পড়ে গিয়েছিলেন। হুট করেই আরেকটা সুযোগ পেয়ে সুপার সিক্সে উঠে গেলেন...!
এলটন চিগুম্বরা: অপ্রত্যাশিতভাবেই সুযোগটা পেয়ে গেছি। এই সুযোগ পেয়ে ম্যাচ জেতাটা আমাদের জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কাজে লাগাতে পেরে ভালো লাগছে। ছেলেরা দারুণ খেলেছে, ব্যাটিং-বোলিং আজ একসঙ্গে জ্বলে উঠেছে।
আপনিও তো জ্বলে উঠছেন নিয়মিতই। বাংলাদেশের উইকেটে ভালো ব্যাটিংয়ের মন্ত্রটা তাহলে জেনে গেছেন?
চিগুম্বুরা: দলে অবদান রাখতে পারছি বলে ভালো লাগছে। ব্যাটিংয়ে নেমে যতটা পারা যায় চেষ্টা করছি সোজা ব্যাটে খেলতে। এখানে সফল হওয়ার বড় কারণ এটিই। উড়িয়ে মারলেও চেষ্টা করি সোজা খেলতে। আর জায়গামতো বল পেলে আমার প্রিয় শট স্লগ সুইপ ও পুল তো খেলাই যায়। দলে আমার ভূমিকা অনেকটা ফিনিশারের। আগে ব্যাট করলে চাই দলকে যতটা সম্ভব ভালো রান এনে দিতে, পরে ব্যাট করলে চেষ্টা করি জেতাতে।
স্পিন খেলায়ও তো অনেক উন্নতি করেছেন, বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিন...
চিগুম্বুরা: বাংলাদেশে হাজারো বাঁহাতি স্পিনার, প্রতিটি দলেই আছে কয়েকজন। এখানে টানা খেললে তাই বাঁহাতি স্পিন খেলায় উন্নতি হবেই। স্পিন খেলায়ও আমার মূল লক্ষ্য থাকে ওটাই, সোজা ব্যাটে খেলা। বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেক ম্যাচেই আমি আড়াআড়ি শট খেলতে গিয়ে বাঁহাতি স্পিনে আউট হয়েছি। এখানে খেলে অন্তত এটা বুঝেছি, সোজা ব্যাটে খেললে আউট হওয়ার আশঙ্কা কম।
স্পিনে নিশ্চয়ই এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী আপনি?
চিগুম্বুরা: স্পিন খেলাটাই এমন, যত বেশি খেলবেন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর যেহেতু আমি মোটামুটি রানও পেয়েছি, আত্মবিশ্বাস তো থাকবেই।
আপনার জিম্বাবুয়ে সতীর্থ মাসাকাদজা, টেলররাও খেলেছেন এবারের ঢাকা লিগে, রানও পেয়েছেন। এরপর তো এখানেও জিম্বাবুয়েকে হারানো কঠিন হবে বাংলাদেশের জন্য?
চিগুম্বুরা: হা হা হা...আসলে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ। দেশে এখন আমাদের খেলা নেই, বেকার বসে থাকত হতো। অভিজ্ঞতাটা অমূল্য বলার অপেক্ষা রাখে না। এখানে ভালো খেলার কিছু উপায় অন্তত ধরতে তো পেরেছি, বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিন সামলানো। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেললে তো কাজে লাগবেই। তা ছাড়া আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য এটা আমাদের দারুণ কাজে লাগবে।
টেস্ট খেলুড়ে দেশ হওয়ার পরও ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে প্রাথমিক পর্ব খেলতে হবে। মেনে নেওয়া কতটা কঠিন?
চিগুম্বুরা: কঠিন তো বটেই, বড় একটা চ্যালেঞ্জও। বিশেষ করে এই কন্ডিশনে আফগানিস্তান হবে বড় একটা হুমকি। তবে নিয়ম নিয়মই, মানতেই হবে। ওদের হারিয়েই প্রমাণ করতে হবে আমরা সত্যিই মূল পর্বে খেলার যোগ্য।
অধিনায়ক মুশফিককে কেমন দেখছেন?
চিগুম্বুরা: এর আগেও মুশির নেতৃত্বে খেলেছি সিলেট রয়্যালসে। শুধু একসঙ্গে খেলার সময়ই নয়, আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হিসেবেও ও আমার শ্রদ্ধাভাজন। খেলাটায় মুশির সত্যিকার আবেগ আছে। ও দারুণ পেশাদারও। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়, সবার শ্রদ্ধা আদায় করে নেয়। মাঠের বাইরেও দারুণ মানুষ। আমার সঙ্গে তো অনেক মজা করে।
এবার তো দীর্ঘদিন হলো বাংলাদেশে থাকছেন। মাঠের বাইরে সময় কেমন কাটছে?
চিগুম্বুরা: সেই সেপ্টেম্বরে এসেছিলাম। মাঝে দেশে গিয়ে আবার এসেছি। নিজেকে তো এখন বাংলাদেশেরই একজন মনে হয়! ঢাকা শহরটাও এখন বেশ ভালো চিনি, অন্তত হোটেলে ফেরার রাস্তা ভুলে যাই না। আমার হোটেলেই থাকছে হ্যামিল্টন (মাসাকাদজা), ওর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। সেদিন রিভারক্রুজে গেলাম, সব মিলিয়ে ভালোই কাটছে সময়।