জাতিসংঘের প্রতিবেদন
জিডিপি বাড়লেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাংলাদেশ অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে যা দেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তুলনায় কৃষিখাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হারও অনেক কম।
৪৯টি স্বল্পোন্নত দেশের ওপর চলতি বছরের প্রতিবেদনে জাতিসংঘের উন্নয়ন ও বাণিজ্য বিষয়ক সংস্থা (ইউএনসিটিএডি) এমন তথ্য দিয়েছে।
বুধবার দুপুরে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্য দেন সিপিডির গবেষণা প্রধান ড. ফাহমিদা হক।
ড. ফাহমিদা বলেন, ‘স্বল্প উন্নত ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেকটা ভালো। তবে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে হারে রয়েছে তার তুলনায় কর্মসংস্থান অনেক কম। বাংলাদেশের বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এ হার টেকসই হবে না।’
গত তিন বছরে বাংলাদেশে জনসংখ্যার কর্মক্ষেত্রের হিসাব অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়নি। বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ লোক কৃষি পেশার সাথে জড়িত হলেও এ খাতে দেশের অর্থনীতির অবদান ২০ শতাংশ। বাকি ৩০ শতাংশ লোকের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব নেই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেবা খাতের অবদান ৫০ শতাংশ হলেও তা আধুনিক মানের নয়।’
আগামী ২০-২৫ বছরের মধ্যে প্রতি ৪ জন মানুষের মধ্যে একজন কর্মক্ষম হয়ে যাবে বলেও প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ বর্ধিত কর্মক্ষম মানুষের জন্য ব্যক্তি খাতে বেশি বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে অর্থনীতি থমকে দাঁড়াবে।
ফাহমিদা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ গ্রামে বাস করে কিন্তু সে তুলনায় গ্রামে কর্মসংস্থান নেই। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে নিয়ে আসতে হলে গ্রামীণ উন্নয়ন ও সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বৈদেশিক রেমিট্যান্স অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ তবে বর্তমানে জনশক্তি রপ্তানি নিন্মমুখী হওয়ার কারণে এটাও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত তিন বছর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে মানুষের কর্মক্ষেত্রের সুযোগের তুলনায় কৃষিক্ষেত্রে অবদান অনেক কমে এসেছে। তবে শিল্প খাতে কিছুটা বেড়েছে। বিগত কয়েক বছর নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও তা শুধু অনানুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে প্রতীয়মান হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- সিপিডির পরিচালক সানজিদা আক্তার, অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ ও ড. মোয়াজ্জেম হোসেন..