প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)

Author Topic: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)  (Read 12448 times)

Offline ashiqbest012

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1186
  • I love my University
    • View Profile
প্রহর শেষের আলোয় রাঙ্গা
সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ

কত সত্যি কথাগুলি, তাই না ? বিশ্বজোড়া পাতা প্রেমের ফাঁদে ধরা পড়েনি এরকম মানুষ বিরল | ঘন্টার পর ঘন্টা কারো সাথে অনর্থক সময় কাটানো, কথা বলা, এমনকি কথা না বলেও ভেসে যাওয়া আবেগের বন্যায় – সেই অস্থিরতা, সেই অন্ধ আবেগ, সেই ঘুম-খিদে নষ্ট করা অনুভূতি – কেন হয় ? কেন সেই প্রিয় মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে নেশার মত লাগে ?

আবার কেনই বা সেই প্রিয় মানুষকেই আর ভালো লাগেনা ? যে মানুষটার সব কিছু ভালো লাগত; কেন তার আচরণ পাল্টে যায় ? তার যে আচরণ আগে হিল্লোল তুলত বুকে; সেটাই কেন পরে বিরক্তির উদ্রেক করে ?



প্রেম কি ?


যারা প্রেমের অনুভূতির সাথে পরিচিত তাদের যদি এক কথায় বলতে বলা হয় যে প্রেম কি, তাহলে তাদের সবাই মনের মধ্যে চলা হাজার অনুভূতির মধ্যে হাতড়ে বেড়াবে সঠিক শব্দগুলির জন্য | সেই অগোছালো মুহুর্তে যদি তাদের সামনে রাখা হয় এই বাক্যাংশটি ” এ এক নেশা ” তবে সাথে সাথে তারা চোখ বন্ধ করে একমত হবে | এবং তারা তাদের বক্তব্যের সমর্থনে পাবে আধুনিক বিজ্ঞানকে | বিজ্ঞান বলে : মদ, হেরোইন, চরস ইত্যাদি ধরনের ড্রাগে আসক্ত মানুষ যে ধরনের রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কবলে পড়ে; প্রেমে পড়া মানুষও সেই একই ধরনের রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে |

বিজ্ঞানের ভাষায়, প্রেম হলো আমাদের মনের একধরনের রাসায়নিক অবস্থা | যার জন্য একাধারে দায়ী আমাদের Gene এবং আমাদের ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া, অর্থাৎ আমরা কিভাবে লালিত পালিত হয়েছি | এবং এই প্রেম অত্যন্ত জরুরি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য |

প্রকৃত প্রেম আমাদের উল্লসিত করে, অনুপ্রানিত করে | প্রেমের কারণে মানুষ এমন অনেক কিছু করে ফেলে বা করতে পারে (অবশ্যই গঠনমূলক কোনো কিছু), যা সাধারনভাবে মানুষ করেনা বা করতে পারেনা | এই বিরল অনুভূতিই মানুষকে আলাদা করেছে সৃষ্টিজগতের অন্যান্য প্রাণী থেকে | তবে আলাদা হোক বা যাই হোক না কেন, শরীর জুড়ে এই যে “রাসায়নিক ঝড়” ( বা মুন্নাভাই M.B.B.S এর ভাষায় “কেমিক্যাল লোচা”) এর আসল উদ্দেশ্য সেই একই – প্রজাতির সৃষ্টি নিশ্চিত করা | প্রেমের ফলে শরীর জুড়ে রাসায়নিকের যে দাপাদাপি চলে তারাই আমাদের অনুপ্রানিত করে পরিবার তৈরী করতে; চাহিদা তৈরী করে বাচ্চা নেবার | এরপর যেই বাচ্চা জন্ম নেয়; এইসব chemical ই তখন আমাদের উদ্বুদ্ধ করে বাচ্চাদের নিয়ে একসাথে থাকার; উদ্দেশ্য সেই একই – প্রজাতির সৃষ্টি যেন চলতে থাকে |

পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক রীতিনীতি আলাদা হবার কারণে প্রেম, ভালবাসার প্রকাশ আলাদা হয় | আলাদা হয় পরিবারের গঠন, বন্ধনের প্রকৃতি | কিন্তু সবার শরীরে এর জোয়ার-ভাঁটার টান অনিবার্য |



প্রেমের factor

আমাদের মনের বেশিরভাগটাই এখনো অজানা | হিমশৈলের মতই এর সামান্য অংশটুকুই আমাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য | আজব ব্যাপার তাইনা ! আমাদেরই জিনিস আর আমরাই বুঝতে পারিনা, জানতেও পারিনা | এইজন্যই বাউলরা মানুষের দেহতত্বের সাধনায় পাগল হয়ে যায় |


বিজ্ঞানীরা বলেন, সব মানুষের মনের কোনো এক গোপন কোনায় – যাকে আমরা বলি subconcious mind – তার আদর্শ মনের মানুষের একটা template বা অবয়ব থাকে | জিনগত প্রভাব, পরিবেশের প্রভাব এইসব অনেক জিনিসের প্রভাবে ধীরে ধীরে মনের ভেতর সেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীর ছাঁচ তৈরী হয় | এই template বা ছাঁচের কারণেই ঘরভর্তি মানুষের ভিড়েও কোনো একজন বিশেষ মানুষের চোখে চোখ আটকে যায় আমাদের | কিভাবে তৈরী হয় এই template?


অনেকরকমের অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে অনেক কৌতুহলুদ্দীপক তথ্য | জানা গেছে, অনেক factor মিলে তৈরী করে ওই মনের মানুষের ছাঁচ | দেখা যাক, কি সেই factor গুলো :


Appearence ( এপিয়ারেন্স )



অনেক বিজ্ঞানীর গবেষণালব্ধ অনুমান – আমরা বিপরীত লিঙ্গের সেইসব মানুষের দিকেই আকৃষ্ট হই, যারা কোথাও না কোথাও মনে পড়ায় আমাদের বাবা – মা কে | আবার গবেষণায় এরকমও পাওয়া গেছে যে, আমরা তাদের দিকেই আকর্ষিত হই, যারা আমাদের নিজেদেরই মনে পড়ায় !! অর্থাৎ, ভালবাসার মানুষটির সাথে আমাদের নিজেদেরই কোথাও মূলগত সাদৃশ্য আছে | অবাক হওয়ার মতই ব্যাপার হলেও, রীতিমত পরীক্ষা চালানো হয়েছে এই তথ্যের জন্য |
Scotland এর Saint Andrews বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী David Perret একটি গবেষণা চালান | পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মানুষদের ফটো নিয়ে morphing করে তাদের বিপরীত লিঙ্গের ফটো তৈরী করা হয় | ধরা যাক, আপনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একজন মেয়ে | আপনি ছেলে হলে কেমন হত দেখতে আপনার চেহারা, সেটাই বের করা হয় আপনার ফটো নিয়ে কম্পিউটারে ফেলে morphing করে | এটা করা হয় অংশগ্রহনকারীর সম্পূর্ণ অজান্তে | এবার প্রত্যেককে বিপরীত লিঙ্গের অনেক মানুষের ফটো দেয়া হয়, যার সাথে মেশানো থাকে অংশগ্রহনকারীর নিজেরই সেই morphed ফটো | এবার তাদের বলা হয়, সেসব ছবির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় মানুষটিকে বাছাই করতে | আশ্চর্যরকমভাবে সিংহভাগ মানুষই বাছাই করে নিজের চেহারারই morphed version টা |



Personality ( পার্সোনালিটি )



Appearence এর মতই এক্ষেত্রেও মানুষ পছন্দ করে সেইসব মানুষদের যাদের Personality মনে পড়ায় বাবা – মা অথবা নিজেকে |উল্লেখ্য যে, কথা বলার কায়দা, অন্যের প্রতি আচরণ, জিনিসপত্র পছন্দ – অপছন্দের ধরন, রসিকতা এরকম অনেক জিনিস হলো Personality Factor | এসব আমরা নিজেরাও বুঝতে পারি | ভালবাসার মেয়েটিকে অনেকসময় মায়ের মত লাগে, ভালবাসার ছেলেটির আলিঙ্গনে মেয়েটির মনে হয় যেন ছোটবেলায় বাবার কোলে আছে | আবার কখনো অনুভব করি যেধরনের রসিকতা আমার ভালো লাগে, আমার মনের মানুষটিও সেরকমভাবেই সাড়া দেয় সেইসব রসিকতাতে | অবশ্য ভালবাসার মানুষের সাথে সবসময়ই খালি মিলই থাকবে এরকম নয় |

Pheromones ( ফেরোমেন )


pheromon শব্দটির উদ্ভব হয়েছে গ্রিক pherein আর hormone শব্দদুটি থেকে | একসাথে এদের মানে হলো উদ্দীপনা সংবাহক বা excitement carrier |
ফেরোমেন হলো প্রানীদের ঘাম বা মুত্রের সাথে নির্গত একধরনের গন্ধহীন রাসায়নিক পদার্থ | আশ্চর্যজনকভাবে, এটি গন্ধহীন হলেও ‘ঘ্রানযোগ্য’ | শুনতে পরস্পরবিরোধী লাগছে, তাই তো? আরেকটু খোলসা করা যাক | প্রাণীরা গন্ধ নেয় নাকের সাহায্যে | গন্ধ নেয়ার কাজে সাহায্য করে নাকের ভেতরের Olfactory System | ফেরোমেন হয়ত এই অলফ্যাক্টরি সিস্টেমে ধরা পরেনা ঠিকই, কিন্তু একে ধরে নাকের ভেতরেরই আরেকটি প্রত্যঙ্গ; যার নাম Vomeronasal Organ ( VNO ) | নাকের ভেতরেই ধরা পড়ে বলে একে ‘ঘ্রানযোগ্য’ বলা যায়

গন্ধহীন এই রাসায়নিকের কাজ হলো প্রত্যেকটি প্রানীকে স্বকীয়তা দেয়া | অর্থাৎ, পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণীর ফেরমেনের ‘গন্ধ’ আলাদা এবং স্বতন্ত্র ( unique ) | বন্য প্রানীদের এই VNO ভীষণরকম সক্রিয় | অন্য প্রজাতির প্রানীদের তো বটেই, নিজের প্রজাতির প্রত্যেককেও তারা আলাদা করে চিনতে পারে এই ফেরোমেনের সাহায্যে | এই ফেরোমেনের সাহায্যেই বাড়ির পোষা কুকুর বুঝতে পারে চেনা বা অচেনা মানুষের উপস্থিতি | আমরা দেখি রাস্তার কুকুরকে মুত্রত্যাগ করতে ল্যাম্পপোস্টে | এর কারণ শুধুই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়া নয় | মুত্রের সাথে নির্গত ফেরোমেনের সাহায্যে ওই কুকুর তার এলাকা ঠিক করে দেয় | অন্য কুকুর যাতে তার ফেরোমেনের গন্ধ শুঁকে বুঝতে পারে আর তার এলাকাতে অনধিকার প্রবেশ না করে | ঠিক একই পদ্ধতিতে জঙ্গলে বাঘ, সিংহ, ভালুক তাদের সাম্রাজ্য নির্ধারণ করে গাছের গায়ে মূত্রত্যাগ করে |

মানুষের শরীরে ফেরোমেনের অস্তিত্ব আবিস্কৃত হয় ১৯৮৬ সালের দিকে | philadelphia র chemical senses center এর বিজ্ঞানীরা মানুষের ঘর্মগ্রন্থিতে এই বিশেষ রাসায়নিকের অস্তিত্ব খুঁজে পান | আর ফেরোমেন এর ‘গন্ধ’ ধরার জন্য VNO এর খোঁজও তারা পান মানুষের নাকে | পরীক্ষায় পাওয়া গেছে যে সব মানুষের নাকে অবশ্য এই VNO থাকেনা | আবার যাদের থাকে তাদের সবার এই প্রত্যঙ্গ যে সক্রিয়, তেমনও নয় | তবে VNO থাক বা না থাক, ফেরোমেনের যে বিশাল একটা প্রভাব আছে আমাদের নাক তথা মস্তিস্কের ওপর সেটা প্রমানিত |সুগন্ধি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো প্রচুর গবেষণা করে এই ফেরোমেন নিয়ে এবং ফেরোমেনের ব্যবহারও করে সুগন্ধি-দ্রব্য বানাতে |

ফেরোমেন নিয়ে এত আলোচনার কারণ একটাই – বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রেম ভালবাসার লীলাখেলায় এই ফেরোমেনের অসীম প্রভাব আছে | এবার জানা যাক এই ধারণা প্রমানের জন্য একটা আকর্ষনীয় পরীক্ষার কথা |
এই পরীক্ষার জন্য একদল ছেলে আর মেয়ে নেয়া হয় | ছেলেদের করানো হয় কিছু শারীরিক পরিশ্রমের কাজ যাতে তাদের শরীর থেকে ভালো পরিমান ঘাম বের হয় | এবার ছেলেদের ঘাম মাখা tee-shirt গুলো সংগ্রহ করে সেগুলো আ-ধোয়া অবস্থাতে শুঁকতে দেয়া হয় মেয়েদের | এরপর মেয়েদের বলা হয় ওই গন্ধ গুলোর মধ্যে কোনটা তাদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছে | পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে গবেষনার পর দেখা যায়, কোনো একটি মেয়ে এমন একটা ছেলের গন্ধ পছন্দ করেছে, যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ immune system এর গঠন তার নিজের গঠনের থেকে সবচেয়ে বেশি আলাদারকমের | এর মানে খুবই পরিস্কার – ওই ছেলেটার আর মেয়েটার বাচ্চা হলে তার immune system হবে তার বাবা মায়ের থেকে আরো উন্নত, যা নিশ্চিত করবে মনুষ্য প্রজাতির অস্তিত্ব |
ঠিক একইভাবে বন্য প্রাণীরাও তাদের সঙ্গী নির্বাচন করে; যে কাজে তাদের সাহায্য করে সেই জাদু-রাসায়নিক ফেরোমেন |


Afrodisiac ( এফ্রডিসিয়াক )



আমরা দেখলাম, প্রেম-ভালবাসায় অনেকরকমের নির্ণায়ক জিনিস আছে – আচার আচরণ, গায়ের গন্ধ ইত্যাদি | তাহলে খাবারের কোনো প্রভাব থাকতে পারেনা কি প্রেমের খেলায় ? দেখা যা তাহলে বিজ্ঞানীরা কি বলেন |
সাড়া পৃথিবী জুড়েই লোকের ধারণা কিছু বিশেষ ধরনের খাবার, গাছ-গাছড়া, গুল্ম ইত্যাদি যৌন ক্ষমতা তথা প্রেম ভালবাসা বৃদ্ধি করে | এই ধরনের ভোজ্য জিনিসকে বলা হয় afrodisiac | আমেরিকার Food and drug administration এর মতে এইসব afrodisiac এর ক্ষমতা মানুষের অমূলক ধারণা | প্রকৃতপক্ষে এসবের কোনো প্রভাব নেই মানুষের যৌন ক্ষমতা বা প্রেম ভালবাসার ক্ষেত্রে | জনপ্রিয় যেসব afrodisiac প্রচলিত আছে সেগুলো হলো :

Asparagus - বলা হয় এই সবজির মধ্যেকার ভিটামিন E নাকি sex hormone কে উদ্দীপ্ত করে |

Chili peppers - যাকে আমরা বলি মরিচ | মরিচের ঝাল আমাদের শরীরে Endorphin হরমোন নিঃসরণ করে; যা কিনা আমাদের মনের "কেমন কেমন লাগছে" ভাবটাকে বাড়িয়ে তোলে
|

Chocolate - ভালবাসার মানুষটিকে খুশি করতে কিংবা ভ্যালেনটাইন ডের উপহার হিসাবে এর বিকল্প তো ভাবাই যায়না, তাই না ? খেতে ভীষণ ভালো এই বস্তুটির মধ্যে থাকে phenylethylamine (ফিনাইল-ইথাইল-এমিন) | মানুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন শরীর আপনাআপনি এই phenylethylamine তৈরী করে | তার মানে, চকলেট খেলে প্রেমের সময়ের মত উড়ু উড়ু ভাব আসবে ? হয়তবা |


Oysters - অর্থাৎ ঝিনুক |এর মধ্যে প্রচুর পরিমানে zinc থাকে | zinc এর প্রভাবে শরীরে testosterone ( টেসটোস্টেরণ ) এর পরিমান বাড়ে | testosterone যৌনকামনা বৃদ্ধি করে |


এইসব afrodisiac এর প্রভাব যদি সত্যিও হয়ে থাকে, তবু একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে এরা কোনটাই সঙ্গীকে আকর্ষণ করতে সাহায্য করেনা; এরা মূলত যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে | এটাও উপেক্ষা করার মত নয় কিন্তু | কারণ যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে, মানুষ তার তাড়নায় সঙ্গী খুঁজবে বেশি | ফলে কারো সাথে প্রেম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে | আর afrodisiac এর প্রভাব সংক্রান্ত তত্ত্ব যদি মিথ্যাও হয় তবুও কেউ এই তত্ত্বের ওপর শুধু বিশ্বাস করলেও অনেক কাজ হবে বলে মনে করেন অনেকে |

এখানে একটা কথা না বললেই নয় : প্রেম ও যৌনতা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত | কিভাবে ? সেটাও আমরা জানব ধীরে ধীরে |
প্রেমের পর্যায় / প্রকারভেদ

এবার আসি প্রেমের বিভিন্ন পর্যায়ের কথায় | খুব নিবিড় কোনো প্রেমের সম্পর্ক প্রধানত ৩ টি ধাপ বা পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায় :

1. Lust , or erotic passion
2. Atraction , or romantic passion
3. Attachment , or commitment



কোনো একটা নির্দিষ্ট সম্পর্ক যদি এই সবকটা পর্যায় পার করে তাহলে সেই বন্ধন খুব শক্ত হয় | আবার, অনেক সময় এমন হয় যে একজন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন মানুষের প্রতি আলাদা আলাদা ভাবে উপরোক্ত অনুভূতিগুলো টের পায় | উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কোনো ছেলে কোনো মেয়ের প্রতি erotic passion অনুভব করছে কিন্তু তার প্রতি romantic passion ততটা অনুভব করছেনা | হয়ত সেই সম্পর্কে যুক্ত থাকা অবস্থায় বা পরে সেই ছেলেই অন্য কোনো মেয়ের প্রতি romantic passion অনুভব করছে | এরকম হতেই পারে এবং হয়ও | তখন উপরোক্ত ধাপগুলোকে আর প্রেমের পর্যায় না বলে প্রেমের প্রকারভেদ বলা হবে |crying 5 প্রেম ভালবাসার রসায়ন |

আমরা নিজেরাও বাস্তবে হয়ত খেয়াল করে থাকব যে যার সাথে সম্পর্কে জুড়ে আছি তার প্রতি ততটা শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করছিনা যতটা করছি অন্য কারো প্রতি | আবার এমনও হয় যে, কারো প্রতি শুধু শারীরিক আকর্ষনই টের পাচ্ছি; তার ভাবনা যখনই আসে মনে তখনই ” অন্যরকমের ” ভাবনা আসে | আবার এটাও হয় যে, শুধু একটি মানুষের প্রতিই সব রকমের আকর্ষণ কাজ করছে |

অর্থাৎ, ‘প্রেমের পর্যায়’ এবং ‘প্রেমের প্রকারভেদ’ কথাদুটো interchangable | এবার দেখা যাক প্রেমের বিভিন্ন পর্যায়ে শরীর-মনে কোন কোন রসের কেমন কেমন খেলা দেখা যায় |



Lust

বাংলা অভিধানে এর মানে পাওয়া যায়: যৌন-কামনা, লালসা, লিপ্সা | আমাদের উপমহাদেশীয় সামাজিক গঠনে এই প্রচন্ড শক্তিশালী এবং অনিবার্য অনুভূতিটাকে সবসময়ই একটু খারাপ চোখে দেখা হয় এবং চেপেচুপে রেখে ঢেকে রাখা হয় | এটা ভালো না খারাপ সেই তর্ক এড়িয়ে আমরা দেখি এর পেছনে কি বিজ্ঞান কাজ করে|



বয়ঃসন্ধির সময়ই মানুষের শরীরে অনেকরকমের পরিবর্তন ঘটতে থাকে | সমস্ত পরিবর্তনগুলি মানুষকে তৈরী করে তোলে যৌবনের জন্য; সোজা কথায় বংশবৃদ্ধি করে প্রজাতি রক্ষা করার জন্য | এসময়ই মানুষের শরীরে testosterone আর estrogen নামের sex hormone দুটো জেগে ওঠে প্রথমবারের জন্য এবং জাগিয়ে তোলে মানব শরীরের ‘ভালবাসা’ পাওয়ার আকাঙ্খাকে | বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে ‘পাওয়ার’ আকাঙ্খা জাগে | শুধু বয়ঃসন্ধি নয়, এমনকি সারাজীবন ধরেই এই কামনা বা lust তাড়িয়ে বেড়ায় মানুষকে এবং আমাদের জীবন পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে |
লেখিকা Lisa Diamond তার “Love and Sexual Desire” শীর্ষক বইতে বলেছেন, lust এবং romantic love দুটো আলাদা অনুভূতি, দুটো আলাদা জিনিস | মানবশরীরে চুপি চুপি ঘটতে থাকা সম্পূর্ণ আলাদা দুটো রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফল এরা | Lust এর বিকাশ হয় যৌনকামনার তাড়না থেকে | কিন্তু Romantic love এর বিকাশ হয় শিশুর সাথে বন্ধন তৈরী করে প্রজাতির অস্স্তিত্ব নিশ্চিত কর&#
Name: Ashiq Hossain
ID: 121-14-696 & 083-11-558
Faculty of Business & Economics
Daffodil International University
Cell:01674-566806

Offline ashiqbest012

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1186
  • I love my University
    • View Profile
Re: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)
« Reply #1 on: February 13, 2011, 06:37:17 PM »
Atraction


হয়ত lust এর তাড়নায় মানুষ খুঁজে বেড়ায় তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে; কিন্তু শুরুটা যেভাবেই হোকনা কেন যতক্ষণ কোনো সম্পর্কের মাঝে romantic love আসছে ততক্ষণ সেই সম্পর্ক প্রেমের পরের ধাপে গড়ায়না |

যখন কোনো প্রেম এর মধ্যে atraction বা romantic passion চলে আসে তখনই শুরু হয় অদ্ভূত সব ঘটনা | মানুষ তখন ভালোলাগার ব্যক্তিটির সম্পর্কে যুক্তিহীন হয়ে পরে | তার সম্পর্কে কোনো কিছুই বিচারবুদ্ধি দিয়ে আর যাচাই করেনা | “ভালবাসা অন্ধ” এই বহুলচর্চিত প্রবাদটি অক্ষরে অক্ষরে ফলতে শুরু করে তখন | যদিও পার্টনারের কোনো খুঁত বা দোষ-ত্রুটি থাকে, সেটা আমরা আর দেখেও দেখিনা | আমরা তখন সবদিক থেকেই আদর্শ বলে মানতে শুরু করি | সে কোনো কিছু বললে বা করলে মনে হয়, এই তো ঠিক, এভাবেই করা উচিত | এই যে সর্বগ্রাসী চিন্তাব্যাকুলতা এবং সর্বক্ষণই ‘তার’ ভাবনার তাড়না, এসবই আমাদের শরীরে ঘটে চলা রসায়নের খেলা | প্রেমের এই পর্যায়ে দুটো মানুষ পরস্পরকে সমস্তরকমভাবে জানার কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে | সবদিক থেকে জুড়ে যেতে চায় এবং শুরু করে |
যদি এই আকর্ষনটা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় এবং দুজনেই দুজনের প্রতি এই টানটা অনুভব করতে থাকে এই দীর্ঘসময় ধরে, তাহলে প্রেম প্রবেশ করে পরের পর্যায়ে : যাকে বলে Attachment |


Attachment


এই Attachment বা commitment পর্যায়টা হলো প্রেমের চূড়ান্ত পরীক্ষার ধাপ | কুসুম কুসুম, উড়ু উড়ু ভালবাসার ধাপ পেরিয়ে প্রেম এবার আসে সত্যিকারের প্রেমের পর্যায়ে | যেখানে দায়িত্ব, নির্ভরতা, সহনশীলতা, আপোস এইসব বিশেষনগুলো পরীক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় | প্রেমে পড়া মানুষ দুটো এবার পরস্পরকে দেখতে শুরু করে rational এবং logical ভাবে | স্বভাবতই, এর ফলে তৈরী হয় অনেকরকমের সামাজিক, পারস্পরিক সমস্যা | এই ধাপেই সিদ্ধান্ত হয় যে প্রেমটা শেষ পর্যন্ত টিঁকবে কি না | University of Minnesota র গবেষকরা দেখিয়েছেন, আমরা আমাদের ভালবাসার মানুষকে যত বেশি আদর্শ হিসাবে নিতে পারি বা ভাবতে পারি, এই পর্যায়ে প্রেম তত বেশি পোক্ত হয় |

University of Texas র গবেষকরাও এই বিষয়ে একমত | তাদের বক্তব্য, ভালবাসার মানুষকে idealize করার মানসিকতা, অর্থাৎ, সেই আমার জন্য ঠিক, তার সব কিছুই আমার ভালো লাগে, সে সব দিক থেকে আমার জন্য উপযুক্ত, এইধরনের ‘আদর্শায়িত’ করার প্রবণতা সেই মানুষ দুটোকে একসাথে জুড়ে রাখার জন্য মোক্ষম |
তারা আরো বলেছেন, যে সম্পর্কে মানুষদুটো ভাবতে শুরু করে যে তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী তার থেকেও বেশি সহযোগিতাপূর্ণ, বেশি ইতিবাচক মনোভাবের; সেই সম্পর্ক তত বেশি শক্ত | এই ভাবনাটা আসবে আপনাআপনি; শুধু ভাবার জন্য ভাবা নয় |


রাসায়নিক কারণ


ভালবাসার প্রাথমিক পর্যায়ে হোক কিংবা সেটা যখন দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনের দিকে গড়ায়ে; যেকোনো ক্ষেত্রেই মানুষের শরীর – মন জুড়ে নানারকমের রস বা রাসায়নিকের খেলা চলতে থাকে | বিজ্ঞানীরা আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে দিনে দিনে আরো নতুন নতুন তথ্য, রহস্যময় কার্যকলাপের আরো নতুন নতুন দিক উন্মোচন করছেন |
তবে নিঃসন্দেহে estrogen আর testosterone শুরুর দিকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় | মানুষের আগ্রাসী কাম-তাড়নার উদ্রেক করে এই রাসায়নিক দুটো হয়ত শুধুই বিপরীত লিঙ্গের মানুষের দিকে আকর্ষণ বৃদ্ধি করে কিন্তু এটাও ঠিক তার ফলেই মানুষ একটা দীর্ঘস্থায়ী, সত্যিকারের সম্পর্কের দিকে সূচিত হয় |

প্রেমের প্রথমদিকে যে মাথা ঝিম ঝিম ভাব, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, গাল – কান লাল হয়ে যাওয়া, হাতের তালু ঘেমে যাওয়ার উপসর্গ গুলো দেখা যায়; বিজ্ঞানীদের মতে সেসবের পেছনে দায়ী হলো Dopamine( ডোপামিন ), Norepinephrine( নরেপিনেফ্রিন ) আর Phenylethylamine( ফিনাইল-ইথাইল-এমিন ) |

এদের মধ্যে Dopamine কে বলা হয় সুখের অনুভূতি জাগানোর রাসায়নিক বা “সুখ-রস” | যখন আমাদের সাথে কোনধরনের সুখময় বা আনন্দের ঘটনা ঘটে তখন এই Dopamine ই মস্তিস্কে ক্রিয়াশীল হয় ফলে আমরা সুখের অনুভূতি পাই | প্রসঙ্গক্রমে বলি, কোনো কৃত্রিম উপায়ে যদি এমন করা যায় যে কোনো খারাপ ঘটনা ঘটলেও আমাদের Dopamine নির্গত হবে; তাহলে দেখা যাবে আমরা দুঃখেও হাসছি বা খুশি হচ্ছি | সবই রসের খেলা !






মানুষ যখন কোনকারনে উত্তেজিত হয়, যেমন, খেলার সময়, ভয় পেলে, দুর্ঘটনা ঘটলে, এসব সময়ে মানুষের শরীরে Adrenaline( এডরেনালীন ) কাজ করতে শুরু করে | এর প্রভাবে মানুষের হৃত্স্পন্দন বেড়ে যায় অস্বাভাবিকরকম, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে যায় এবং আরো নানা শারীরবৃত্ত্বিয় পরিবর্তন ঘটে যাতে মানুষ চরম পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারে | প্রেমের প্রাথমিক পর্যায়ে নির্গত Norepinephrine এই ধরনের কাজই করে | Rutgers University র বিখ্যাত নৃতত্ববিদ Helen Fisher এর মতে, এইসব রাসায়নিকের মিলিত প্রভাবেই প্রেমের প্রাথমিক লক্ষনগুলো – ঘুম না হওয়া, মনের মানুষের জন্য কোনো কাজে অদম্য উত্সাহ আর শক্তি, নিদ্রাহীনতা, ‘তাকে’ পাওয়ার মরণপণ ইচ্ছা, শুধু ‘তার’ই ভাবনা – এসব দেখা যায় |

মনের মানুষটাই ধ্যান-জ্ঞান, সেই সবকিছু, তার থেকে ভালো আর কেউ নেই, তার সবই ঠিক – এই যে আপাত খাপছাড়া আচরণগুলো, এর পেছনেও ব্যাখা বের করেছেন University College London এর গবেষকরা




তারা দেখেছেন, প্রেমে পড়া মানুষদের শরীরে Serotonin থাকে খুব কম মাত্রায় | এটা কম থাকলে সমস্যা কি ? সমস্যা হলো, কম মাত্রার Serotonin থাকে সেইসব লোকেদের যারা obsessive-compulsive disorder নামের মানসিক রোগের শিকার | এই রোগাক্রান্ত মানুষদের মনের ভেতর নিজের অজান্তেই অনেক আজগুবি, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ভাবনা ঢুকে পড়ে | পারিপার্শ্বিক ঘটনা, মানুষ, বস্তু সম্পর্কে তারা মনের মধ্যে একধরনের পূর্বনির্ধারিত ধারণা পোষণ করতে শুরু করে | ফলে তাদের আচার আচরণ অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে | কোনো কারণ ছাড়াই বার বার হাত ধোওয়া, ঘর থেকে বের হওয়া বা ঢোকার সময় বার বার দরজা খোলা-বন্ধ করা এইসব হচ্ছে ওই রোগের লক্ষণ | এই রোগের মানুষরা নিজেদের ধারণার বশবর্তী হয়ে পড়ে | বের হতে পারেনা নিজেরদের ভাবনার ঘের থেকে | এরকম কারণেই প্রেমে পড়া মানুষরাও নিজেদের সঙ্গী বা সঙ্গিনী সম্পর্কে obsessed হয়ে পড়ে | তাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেনা |

গবেষকরা দেখিয়েছেন আরো একটা কারণে এই obsession এর জন্ম হয় |

আমাদের মস্তিস্কের এক একটা অংশ আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালন করে | মস্তিস্কের একটা অংশ থাকে যেটা আমাদের পারিপার্শ্বিক মানুষদের আচার-ব্যবহার বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে | প্রেমে পড়া মানুষদের মস্তিস্কের সেই অংশটা অনেকটাই নিস্ক্রিয় থাকে | ফল আমাদের চোখের সামনেই !



University of California র গবেষকদের মতে, Oxytocin হরমোনের কারণে মানুষ সক্ষম হয় অন্য মানুষদের সাথে সুস্থ্য সামাজিক সম্পর্ক তৈরী করতে, সুস্থ্য মানসিক সম্পর্কের বাতাবরণ তৈরী করতে | মা যখন সন্তানের জন্ম দেয় বা শিশুকে বুকের দুধ পান করায় তখন মায়ের শরীরে এই হরমোন নির্গত হতে থাকে , ফলে মায়ের সাথে শিশুর বন্ধন আরো মজবুত হতে থাকে |
এছাড়াও, যখন নারী-পুরুষ যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয় তখন সেই সময় তাদের শরীরে Oxytocin বের হতে থাকে বহুল পরিমানে | স্পষ্টই এবার বোঝা যাচ্ছে যে, প্রেমে পড়া দুটো মানুষ শারীরিক মিলন করলে তাদের মধ্যেকার মানসিক বন্ধন আরো শক্ত হতে থাকবে এই হরমোনের প্রভাবে | মিলন যত বেশি হবে, বন্ধনও তত বাড়বে |

একজন মাত্র সঙ্গীর সাথেই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরিতে প্রভাব ফেলে Vesopressin আর Endorphin নামের আরো দুটি হরমোন | Endorphin ও নির্গত হয় যৌন মিলনের সময় | Endorphin হলো শরীরের নিজস্ব ব্যথা-নিবারক | শরীরের কোনো স্থানে আঘাত লাগলে এই Endorphin বের হয় আর ব্যথা উপশমে সাহায্য করে | শুধু যৌন মিলন নয়, এমনকি ভালো লাগার মানুষের সান্নিধ্যে থাকলেও Endorphin বের হয় | এছাড়াও খেলাধুলা বা ব্যায়ামের সময়ও এই হরমোন বের হয়ে শরীরে একটা তরতাজা, সুস্থ্য অনুভূতি তৈরী করে |



শেষ পর্যন্ত টিঁকে যাওয়া


সবশেষে আসে প্রেমের প্রতিষ্ঠার পর্যায় | যাকে বিবাহ বা live – together বা একসাথে থাকা যাই বলা হোকনা কেন, আদতে সেটা হচ্ছে প্রেমের একটা স্থায়ী পরিনতি | এই পর্যায়ে এসে প্রধানত যেটা হয়, প্রেমের প্রাথমিক পর্যায়ের উচ্ছাস হারিয়ে যেতে থাকে | সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রেমের প্রথম দিকের আবেগ, উদ্দামতা ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যায় ২-৩ বছরের মধ্যেই | কেন? আচমকাই মনের মানুষের খুঁত চোখে পড়তে শুরু করে | আপনি ভাবতে শুরু করেন, আমার মনের মানুষের এরকম পরিবর্তন হয়ে গেল কেন ?



সিনেমা, নাটকে এমনকি নিজের জীবনেও এরকম উক্তির সাথে আমরা পরিচিত : “তুমি আর আমাকে আগের মত ভালবাসনা”, “আমি আর আগের মত তোমার চোখে সুন্দর নেই”, “আগে আমরা কত সুখে ছিলাম” |

আসলে তখন যা হয় সেটা হলো, প্রেমের আবেগ সৃষ্টিকারী রাসায়নিকগুলোর প্রভাব সয়ে যেতে শুরু করে | অনেকটা মাদক-দ্রব্যের প্রভাবের মতই | মাদকাসক্ত লোকের যেমন দিন দিন মাদকের পরিমান না বাড়ালে আর ভালো লাগেনা, তেমনি এখানেও “প্রেম-প্রেম ভাব” তৈরী করা রাসায়নিকগুলোর শরীরের ওপর প্রভাব প্রশমিত হয়ে আসতে থাকে | তখন মনের মানুষকে আর অন্ধভাবে না দেখে rationally দেখতে শুরু করে মানুষ | তাই তখন মনে হয় “সে” আর আগের মত নেই; আদতে “সে” কিন্তু তেমনি আছে যেমন সে ছিল প্রথম থেকেই | পাল্টে গেছে শুধু দেখার ধরন |

এই পর্যায়ে এসে হয় প্রেম টিঁকে গিয়ে শাশ্বত হয়ে যায় অথবা সম্পর্ক ভেঙ্গে গিয়ে জন্ম দেয় “লাইলী-মজনু” সম্প্রদায়ের নতুন সদস্য বা সদস্যা |

আর এই চরম পর্যায়ে প্রেম টিঁকে থাকার ভিত কিন্তু তৈরী হয়ে যায় সেই প্রাথমিক পর্যায়েই | গবেষকরা বলেন, প্রেমের প্রথম পর্যায় যত বেশিদিন ধরে চলে সেইসব সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত টিঁকে থাকার সম্ভাবনা বেশি | প্রাথমিক পর্যায়ে যত বেশি এই ভাবনা প্রবল থাকবে – “একে ছাড়া আমার চলবেনা”, “এইই আমার সবচেয়ে প্রয়োজন”, “এই আমার আদর্শ মানুষ” – তত বেশি সম্ভাবনা সেই সম্পর্ক টিঁকে যাবার |

আর সব বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে যদি প্রেম টিঁকে যায়, তাহলে এরপর অন্যান্য আরো রাসায়নিক উপস্থিত হয় নতুন নতুন অনুভূতির জন্ম দিয়ে সম্পর্ককে চালিয়ে নিয়ে যাবার জন্য | Endorphin এর প্রভাব তখনও থেকে যায়; যা কিনা ভালো থাকার অনুভতির যোগান দিয়ে যায় | শারীরিক মিলনের সময় তখনও Oxytocin বের হয় satisfaction আর attachment এর অনুভূতিকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য |

(উপসংহারে, লেখক নয় একজন প্রেমিক হিসাবে বলতে চাই : বিজ্ঞানের নিয়মে যদি প্রেম চলত, তাহলে তাকে আর প্রেম বলতামনা; তাকে বলতাম “থিওরি অফ প্রেমেটিভিটি” |

বিজ্ঞান আমাদের শরীর থেকে সব হরমোন নিংড়ে বের করে নিলেও ; আমরা ঠিক পৌছে দেব আমাদের মনের মানুষের কাছে রক্তগোলাপ)


লেখক: অনুপ
Name: Ashiq Hossain
ID: 121-14-696 & 083-11-558
Faculty of Business & Economics
Daffodil International University
Cell:01674-566806

Offline Rony_TE

  • Newbie
  • *
  • Posts: 48
    • View Profile
AWESOME AWESOME..........

REALLY IN FORUM THERE R MANY THINGS TO KNOW......[/b][/color]

Offline ashiqbest012

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1186
  • I love my University
    • View Profile
Thank you Rony_Te, you are well said.. You can know from here a different types of subject.
Name: Ashiq Hossain
ID: 121-14-696 & 083-11-558
Faculty of Business & Economics
Daffodil International University
Cell:01674-566806

Offline Arif

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 203
    • View Profile
Re: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)
« Reply #4 on: October 31, 2011, 06:09:57 PM »
thanks for the valuable information about love......
Muhammad Arifur Rahman
Assistant professor and Head
Department of Pharmacy

Offline A.S. Rafi

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 672
    • View Profile
Re: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)
« Reply #5 on: January 07, 2014, 01:00:47 AM »
really interesting article, but I don't think everything needs to be dissected like the frogs in laboratory   :D
Abu Saleh Md. Rafi
Senior Lecturer,
Department of English.
Faculty of Humanities and Social Sciences
Daffodil International University.

Offline R B Habib

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 666
  • Test
    • View Profile
Re: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)
« Reply #6 on: January 08, 2014, 03:43:42 PM »
ভালবাসার মানুষটির সাথে আমাদের নিজেদেরই কোথাও মূলগত সাদৃশ্য আছে | True. I have found many pairs resembling each other. we resemble too as said by many friends and people from our families.



Rabeya Binte Habib
Senior Lecturer,
Department of English
Faculty of Humanities and Social Sciences
Daffodil Int. University

Offline moonmoon

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 206
  • Test
    • View Profile
Re: প্রেম ভালবাসার রসায়ন (Valentine day)
« Reply #7 on: February 17, 2014, 11:42:50 AM »
This Article is very much Scientific, Informative & Interesting!

Moonmoon Huq
Lecturer
Department of Nutrition and Food Engineering
Faculty of Allied Health Science
DIU















 

Offline roman

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 678
    • View Profile
অসংখ্য ধন্যবাদ এইরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য । খুবই ভালো লাগলো পড়ে । আসলে ভালোবাসা হচ্ছে একটি স্বর্গিয় জিনিস যা কিনা অনুভব করার বিষয় ।
Md. Rokanuzzaman Roman
Assistant Registrar &
SA to Honorable Chairman, BoT
Daffodil International University
Cell-01713493087
Ext-133
E-mail-ps.chairman@daffodilvarsity.edu.bd

Offline abdussatter

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 373
  • Test
    • View Profile
 :) :)
(Md. Dara Abdus Satter)
Assistant Professor, EEE
Mobile: 01716795779,
Phone: 02-9138234 (EXT-285)
Room # 610