দাদ ফাঙ্গাসজনিত একটি খুবই সংক্রামণপ্রবণ রোগ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এর প্রাদুর্ভাব থাকলেও আমাদের দেশের মতো গরম ও ঘর্মপ্রবণ দেশে বেশি দেখা দেয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সীই এতে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরের সব স্থানে দেখা দিলেও হাত, পা, বগল, কুঁচকি এবং কোমর আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। মাথা এবং কুঁচকিতে প্রায় একই ধরনের ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে রোগটি দেখতে এবং নামে ভিন্ন। ডারমাটোফাইট গোত্রের ফাঙ্গাস এসব রোগের জন্য দায়ী।
কেন হয় : ডারমাটোফাইট গোত্রের ফাঙ্গাস এ সব রোগের জন্য দায়ী। এরা ত্বকের উপরে বাস করে এবং পরিস্থিতি অনুকূল হলে রোগের সৃষ্টি করে থাকে। যারা বেশি ঘামেন এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। ঘাম এই রোগের জন্য দায়ী ফাঙ্গাসকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কিভাবে ছড়ায় : আক্রান্তদের সরাসরি সংস্পর্শ এবং ব্যবহার করা পোশাক বা সামগ্রীর দ্বারা ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গৃৃহপালিত পশুদের মাধ্যমেও এ সংক্রামণ হতে পারে।
চিকিৎসা : রোগ নির্মূল এবং পুনঃসংক্রামণের সম্ভাবনা দূর করার লক্ষ্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কম স্থান আক্রান্ত হলে লাগানোর জন্য ক্রিম দেওয়া হয়ে থাকে। তবে বেশি জায়গা আক্রান্ত হলে এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের মুখে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়।
প্রতিরোধ : অন্যের ব্যবহার করা সামগ্রী এড়িয়ে চলুন; খোলামেলা, পরিষ্কার এবং তুলনামূলক ঠাণ্ডা স্থানে বসবাস করুন; ঘাম তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে ফেলুন; টাইট ফিটিং পোশাক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন; পোষ্য-প্রাণী সংস্পর্শে আসার পর হাত ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন এ রোগের চিকিৎসা খুবই সহজ এবং দ্রুত আরোগ্য সম্ভব, তবে দেরি করলে অনেক সময় জটিলতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। কাজেই যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসা নিন। নিজে ভালো থাকুন এবং পরিবারের সদস্যদেরও ভালো থাকতে সাহায্য করুন।
By:ডা. এম আর করিম রেজা, সিনিয়র কনসালটেন্ট,
চর্ম, অ্যালার্জি ও কসমেটিকজনিত রোগ, এশিয়ান জেনারেল হসপিটাল ঢাকা