শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ৫টি খনিজ- উৎস, কাজ ও প্রভাব -
দেহকে সুস্থ রাখার জন্য কত কিছুই না করে থাকি আমরা। সঠিক নিয়মে খাওয়া দাওয়া, ঘুম, পরিশ্রম থেকে শুরু করে সব কিছুই করে থাকি। কারণ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। একজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষ যা করতে পারেন তা একজন অসুস্থ মানুষের দ্বারা করা একেবারেই সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি দেহের সুস্থতার সাথে মানসিক শান্তিরও সংযোগ রয়েছে।
কিন্তু দেহের সুস্থতার কারণে যা যা করছেন তা কি আসলেই সঠিক উপায়ে করছেন? দেহের সুস্থতার জন্য আমাদের সুষম খাদ্যের প্রয়োজন সব চাইতে বেশি। সকল পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন এবং খনিজের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেহের জন্য সকল খনিজের পরিমাণ মতো গুরুত্বও অনেক বেশি। আজ চলুন দেখে নেয়া যাক পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দেহের সুস্থতায় যে ৫ টি খনিজের গুরুত্ব, পরিমাণ ও উৎস সম্পর্কে। ক্যালসিয়াম প্রতিদিনের চাহিদাঃ ১০০০ মিলিগ্রাম মহিলাদের জন্য এবং ১২০০ মিলিগ্রাম পুরুষদের জন্য। কাজঃ হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা করে, মাংশপেশির কর্মক্ষমতা বাড়ায়, কোষের কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রন করে। প্রভাবঃ ক্যালসিয়ামের অভাবে বাতের ব্যথা, হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। এবং বেশি মাত্রায় গ্রহনে উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি বা গলব্লাডারে পাথর হয়।
উৎসঃ কাঠবাদাম, গাজর, কিশমিশ, বাদামী চাল, রসুন, খেজুর, তিল, স্পিনাচ, কাজুবাদাম, পেঁপে ইত্যাদি। পটাশিয়াম প্রতিদিনের চাহিদাঃ ২০০০ মিলিগ্রাম নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য।
কাজঃ রক্তে ও কোষে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, নার্ভ সিস্টেম উন্নত করে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। প্রভাবঃ পটাশিয়ামের অভাবে উত্তেজনা, দুর্বলতা এবং হার্ট বিট কমে আসার মতো সমস্যা হয়। বেশি গ্রহনের ফলে হাইপারটেনশনের সমস্যা দেখা যায়। উৎসঃ কমলা লেবু, কলা, চীনা বাদাম, ডাবের পানি, স্পিনাচ।
সেলেনিয়াম প্রতিদিনের চাহিদাঃ
মহিলাদের জন্য ৫৫ মাইক্রোগ্রাম এবং পুরুষের জন্য ৭০ মাইক্রোগ্রাম। কাজঃ কোষ ক্ষয় নিয়ন্ত্রণে রাখে, থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রস্টেট, ফুসফুসের ও কলোরেক্টাল ক্যান্সার রোধে সহায়তা করে। প্রভাবঃ অভাবে মাংসপেশি দুর্বল হয়, কার্ডিওমায়োপ্যাথি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। উৎসঃ অন্ত্রের মাংস, টুনা মাছ, কাঁকড়া, মশলা।
সোডিয়াম প্রতিদিনের চাহিদাঃ
১৩০০ মিলিগ্রাম মহিলাদের জন্য এবং ১৫০০ মিলিগ্রাম পুরুষের জন্য। কাজঃ রক্তে ও কোষে পানির মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে প্রভাবঃ অভাবে দুর্বলতা, চিন্তা করার ক্ষমতা লোপ এবং মাংসপেশি সংকোচনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। উৎসঃ লেবুর পানি ও সকল দুগ্ধজাত খাবার। জিংক প্রতিদিনের চাহিদাঃ ১২ মিলিগ্রাম মহিলাদের জন্য এবং ১৫ মিলিগ্রাম পুরুষের জন্য। কাজঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রভাবঃ অভাবের কারণে আবনরমাল গর্ভধারণ, দৃষ্টি শক্তি লোপ, স্বাদ ও গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। উৎসঃ লাল মাংস, কাঠবাদাম, চীনাবাদাম, চানা, সয়া, দুগ্ধজাত খাবার, মাশরুম, কলিজা এবং সূর্যমুখীর বীজ।
- See more at:
http://www.deshebideshe.com/news/details/38253#sthash.lalrB7bi.dpuf