ভাষার মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ এর এক ছাত্রীর লেখা চোখে পড়ল । পাঁচ বছরের অধিক সময় ওই ক্যম্পাসটাতে কাটিয়ে এসেছি (ছোট্ট একটা সেশন জট ছিল কেননা ১ম বা ২য় বর্ষে একটা অটো-এরশাদ ভেকেসন ছিল!)। নাদিয়া রাহমানের লেখাটিতে তাই সহমর্মিতা বোধটা অনুভব করছি...
"শহীদ মিনারের ঠিক উল্টো পাশে আইন বিভাগের ক্যম্পাস। আর সেই জন্যই এই জায়গায় গত চার বছরের অনেকটা সময় কেটেছে। সারা বছর শহীদ মিনারের দুর্দশার সাথে একুশে ফেব্রুয়ারীর দিনটি মেলানো বেশ কঠিন। সারা বছর নোংরা হয়ে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকা, রাতের আলো-আঁধারিতে নেশাখোরদের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠা, হকার-পাগল-আবাসহীন মানুষের ভীড়ে শহীদদের স্মৃতি হারিয়ে যাওয়া এই মিনার হঠাৎই হয়ে ওঠে রাষ্ট্রের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে পুলিশ আর র্যাইবের ক্যাম্প বসে, ওয়াচ টাওয়ার আর ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। রোড ব্যরিকেড আর নিরাপত্তা দানকারী যানবাহনের ভীড়ে সাধারণের টেকা দায় হয়ে পড়ে। রাস্তা-ফুটপাত-মিনারের বেদী সেজে ওঠে নতুন রঙে। সাদা-কালোয় সজ্জিত তরুণ-তরুণীর সমাবেশ ঘটে। ফাল্গুনের মতো এই দিনটাও সেজেগুজে উৎসব আমেজে পালন করে তারা। আসেন সন্তান সহ সেই বাবা-মা, যারা হয়তো ঐ সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতেই বেশি ইচ্ছুক। আজকালকার শিশুরা বাংলার চেয়ে হিন্দী আর ইংরেজীটাই বোধহয় ভালো শেখে। আর তাদের ও দোষ দেয়া যায়না। সংস্কৃতির হাওয়া আর চাহিদা যেদিকে বয় মানুষ তো সেদিকে ঝুঁকবেই। এই সবকিছুর মধ্যে মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দেয়া মানুষগুলোর আত্মার আর্তনাদ কোথায় যেন হারিয়ে যায়। তাদের স্বপ্নগুলো ঘোলাটে হতে হতে মিলিয়ে যেতে থাকে।"[/size]