মানবজীবনে সফলতার জন্য হতাশামুক্ত থাকতে হবেইসলামী জীবন ব্যবস্থা একটি সাময়িক ব্যবস্থা নয় বা কোনো পরিবেশের কোনো জনগোষ্ঠীর জন্য আসেনি, এসেছে বিশ্বমানবতার জন্য আর ইসলাম সব সময়ই এ মানবগোষ্ঠীকে হতাশমুক্ত রাখতে চেয়েছে। কোরআন বলছে নামাজ সমাপ্ত হলেই জীবিকা অন্বেষণের জন্য ছড়িয়ে পড়। আর মানুষ সবসময় র্কমব্যস্ত থাকলে হতশাগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ থাকে না। বিশেষ করে আমাদের দেশের যুবক ও তরুণ সমাজকে বলব যে আমাদের আজ হতাশাগ্রস্ত হলে চলবে না। প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহকে প্রভু, রসুলকে (সা.) অনুসরণীয় অনুকরণীয় নেতা ও ইসলামকে দ্বীন বা জীবনব্যবস্থ হিসেবে গ্রহণ করেছে তার কি কোনো হতাশা থাকতে পারে? না আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। মূলত হতাশা ও নিরাশা হলো শয়তানের বৈশিষ্ট্য। শয়তানের এক নাম, ইবলিশ, যার অর্থ হলো 'নিরাশ' বা 'হতাশ'। সুতরাং 'হতাশা বা নিরাশা' শয়তানের বৈশিষ্ট্য। আর 'আশা' হলো নবী-রসুল ও আল্লাহর নেয়ামতপ্রাপ্তদের বৈশিষ্ট্য। দুনিয়ায় যত আম্বিয়ায়ে-কেরাম এসেছেন তাদের প্রত্যেকেই দুনিয়াজোড়া বিপদকে মাথায় নিয়েও তাদের পথে অটল রয়েছেন। হতাশা কখনো তাদের পথরোধ করে দাঁড়াতে পারেনি। কারণ তারা জানতেন, আল্লাহর মহানত্বের সামনে এ ধরনের আপদ-মুসিবত একেবারেই তুচ্ছ। আশার মধ্যেই মানুষ বেঁচে থাকে। আশার কারণে মানুষ কাজ করে, কথা বলে, পথ চলে। আশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির চাকাকে সচল রাখে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক পেশাগত জীবনে আশা না থাকলে মানুষ অসামাজিক এক আজব জীবে পরিণত হয়। আশা সফলতার মূল চাবিকাঠি। মনে রাখা প্রয়োজন, আশা ইমানের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট। তাওয়াক্কুলের প্রবল বিশ্বাস ছাড়া মানুষ আশা করতে পারে না। অর্থাৎ আশা তাওয়াক্কুল থেকে আর তাওয়াক্কুল মজবুত ইমান থেকে জাগে। হতাশাগ্রস্ত এ ব্যক্তিটি পরিবারের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে যেমন বিনষ্ট করে, তেমনি সমাজ ও পেশাগত জীবনে একজন অযোগ্য, অকর্মন্য দায় হিসেবে চিহ্নিত হয়। হতাশা এমনভাবে ঘিরে ধরে যে ঢিলেমি তাকে সামনে চলার সব পথকে রুদ্ধ করে দেয়।
(পূর্ব বাসাবোর উম্মাহ্ ক্যাডেট মাদ্রাসার বার্ষিক তাফসিরুল কোরআন ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির দেওয়া বক্ত্যবের অংশবিশেষ।)
- See more at:
http://www.bd-pratidin.com/islam/2014/11/27/46095#sthash.YunxIzpy.dpuf