ইচ্ছা হয় প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করি। কিন্তু ইচ্ছাটা পূরণ করতে গেলেই আসে নানা রকমের বাধা। শরীরচর্চা হয়ে পড়ে অনিয়মিত। আর তাতে লক্ষ্য থাকে অপূর্ণ। ব্যায়াম করার ইচ্ছা ঠিকঠাক পূরণ হয় মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের। অন্যরা অনেক অজুহাত দেখান, যেগুলো শুনতে কিছুটা যৌক্তিকই মনে হয়। এ রকম ১০টি কারণ এবং নেপথ্যের বাস্তবতা তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা:
১
সময় নেই
প্রত্যেকেই দিনে ২৪ ঘণ্টা সময় পায়। এটা গুরুত্ব দেওয়ার প্রশ্ন। ব্যায়াম করার সময় না থাকলে হাসপাতালে যাওয়ার সময় বের করে নিতে হবে। পছন্দটা আপনার। বই পড়া, মুভি দেখা বা আড্ডা দেওয়ার সময় তো ঠিকই পাওয়া যায়। কাজেই দিনে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করার সময় বের করা অসম্ভব নয়।
২
চাকরি করব, নাকি ব্যায়াম করেই সময় কাটাব?
এটা দুর্বল অজুহাত। খুব বেশি কাজের তাড়া বা সময়ের অভাবের কারণে যেমন কেউ কখনো বিনা কাপড়ে অফিসে যায় না, তেমনি শরীরচর্চা ছাড়া অন্যান্য কাজ করাটাও অযৌক্তিক।
৩
স্কুল-কলেজে থাকতে পাগলের মতো ব্যায়াম করেছি
অতীতে গোসল করা, দাড়ি কামানো, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি কাজও আপনি প্রচুর করেছেন। তাই বলে সেগুলো কি এখন বাদ দিতে পারবেন? ব্যায়ামটাও সে রকম। আগে যেমন করেছেন, এখনো করতে হবে।
৪
সপ্তাহে দু-এক দিন ব্যায়াম করলেই তো হয়
এটা হয় না। আপনি ব্যায়াম বাদ দিতে পারবেন সেই দিনটিতে, যেদিন আপনি কিছুই খাবেন না। প্রতিদিন খাওয়া-দাওয়া করলে পরিশ্রমও করতে হবে। ঠিক আছে, সপ্তাহে একটা দিন বিরতি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর বেশি নয়।
৫
ঘরের কাজ এত বেশি! সব শেষ করে আর ব্যায়াম করার শক্তি পাই না
যত গড়িমসি করবেন, তত ক্ষতির শিকার হবেন। ছোটখাটো বা হালকা ব্যায়াম দিয়েই শুরু করুন। ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। শিশুরা যেমন দোলনা থেকে শুরু করে একসময় ধাপে ধাপে সবকিছুই শিখে নেয়, সে রকম।
৬
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনেক কাজ থাকলেও আমি দীর্ঘক্ষণ ব্যায়াম করি
এমন করলে আপনার উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে। চার-পাঁচ দিন নিষ্ক্রিয় থাকার ফলে শরীরটা অনমনীয় হয়ে পড়ে। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রচুর পরিশ্রম করলে পেশিতে টান লাগতে পারে।
৭
শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমার নানা রকমের ব্যথা তো কমেনি, বরং বেড়েছে
বছরের পর বছর আপনি শরীরচর্চা করেননি, যা আপনার সারা জীবনই করে যাওয়া উচিত। যখনই শুরু করতে যাবেন, কিছুটা কষ্ট হবে। নিজের ইচ্ছায় তৈরি ব্যথাগুলো কয়েক দিনের মধ্যেই দূর হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন শরীর আলস্যে থাকার কারণেই এসব রোগ তৈরি হয়।
৮
অনেক তো বয়স হয়ে গেছে, এখন আর শুরু করে কী হবে?
আপনি এমন বুড়ো হয়ে যাননি যে আর শুরু করতে পারবেনই না। নিশ্চয় অন্য অনেক কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারছেন। কাজেই ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম থেকে পালানোর চেষ্টা না করাই ভালো।
৯
যখনই সময় পাই, হাঁটি অথবা সাঁতার কাটতে যাই
মনে করুন, আপনি একজন ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগ দেবেন। তিনি মেধাবী। কিন্তু যদি তিনি বলেন: ‘যখন সময় পাই কাজ করতে আসব।’—তাকে কি আপনি চাকরি দেবেন?
১০
আগামীকাল থেকে শুরু করব
অবশ্যই আপনি সেটা করতে পারেন। কিন্তু সেই আগামীকাল তো কখনোই আসবে না।
সূত্র: আইএএনএস।