তথাকথিত স্বাধীনতায়ও বাংলার মানুষ আনন্দে-উদ্বেলিত, আবেগ-আপ্লুত দিন কাঁটাল গত 26শে মার্চ 2015-তে। স্বাধীনতার ইতিহাস অধ্যায়নে দেখা যায়, পশ্চিমাদের অত্যাচার, নীপিড়ন ও শোষনের যাতাকলে পৃষ্ঠ হয়ে শেষ পযর্ন্ত সশস্র বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধ করে বাংলার মানুষ বিজয় ছিনিয়ে আনে-স্বাধীনভাবে বাচাঁর অভিপ্রায়ে। কিন্তু আজ অব্দি স্বাধীনতার ফসল পরাধীনতার ধূসের ঢাকা পড়তে বসেছে।
অধিকারের দুলাচলে দিশেহারা বাংলার মানুষ আজ দিগন্তের লীলিমায় দুদোল্যমান। জীবনের সমস্ত রক্ত ঢেলে দিয়ে যারা স্বাধীনতা এনেছিল, তাদের স্বপ্ন আজ কল্পনার রাজ্যে পাতালপরীর স্বপ্নে বিভাবোরী। স্বাধীনতার স্বপ্ন পুরুষদের- স্ত্রী, পুত্র বাবা-মা কারও আজ নির্ঘুম রাত কাটে-না হিংস্র জানুয়ারের থাবার ভয়ে। পথ-পথিকের জীবন বঞ্চনার ধারাপাতের শেষ সম্বলটুকুও আজ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার থাবায় শূন্যে বিলিন হতে চলেছে।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ছায়ায় বাজীকরদের দৈরাত্বে সর্বশান্ত হচ্ছে আমার দেশের সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ। মানুষের ব্যক্তি-স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা আজ ক্ষমতাসীনদের পদতলে লুন্ঠিত ও পদপৃষ্ঠ- রক্তাক্ত। উন্নয়নের সুর তুলে রাষ্ট্র নিজেই নিজের বড়শক্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কতিপয় স্বার্থবাদী পরিবার/গোষ্ঠি/শ্রেনী ক্রমাগত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে-ই চলেছে। শিক্ষিত কর্মহীন ছেলেরা জেনে শুনে নেশার পাত্র হাতে তুলে নিচ্ছে হাসি মুখে। প্রতিরোধ-প্রতিবাদের রাজনীতি আজ দেনা-পাওয়ানার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে চামচামুর রসিকতায়। জীবন জীবনের কাছে ক্রমাগতই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে।
এ-কথা বলতে আজ বাধা নেই যে, বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে আজ দুরাচা, দুনীর্তি ও সন্ত্রসীদের জয় ধ্বনি চলছে। অসহায় দরিদ্র কৃষকের একমাত্র শিক্ষিত সন্তান ক্ষুধার যন্ত্রনায় নেশার সাগরে হাতরিয়ে বেড়াচ্ছে। সন্ত্রাসী লুটেরা অ-শিক্ষিত বর্বরা আজ রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রকর্তা। সরকার তাদের জয় ধ্বনিতে কুম্ভকর্ণের ন্যায় ঘুমে ঘুমেই উন্নয়নের সূরে অস্থির হয়ে উঠেছে। বুদ্ধিজীবিরা রাষ্ট্রীয় খাচাঁয় বন্দি থেকে পতি পনার বক্তব্য রাখছে—‘আর কতটা দিন সবুর কর রসূন বুনেছি’।
দেশের দালাল/মধ্যসত্ত্বভূগীরা জনসাধারনের মুখের গ্রাস কেড়ে রাতা-রাতি বৃত্ত-ভৈরবের মালিক বনে যাচ্ছে। আপামর জনতা সরকারের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিয়ে বারনের চিতায় জ্বলছে। অসহায় বিধবার একমাত্র সন্তান ন্যায় কথা বলায় গুম হয়ে যাচ্ছে। এ-ই কি? আমাদের স্বাধীনতার প্রাপ্তি । স্বাধীনতার পয়ঁতাল্লিশ বছরেও আমরা কেন পরাধীনতার ধূসরতায় ঢাকা পড়ে আছি। রাষ্ট্রতন্ত্রের কাছে এর জবাব চাই?
আমরা স্বাধীনতা চাই? বেচেঁ থাকার স্বাধীনতা, দুমুঠো অন্নের স্বাধীনতা। মুক্ত ভাবে কথা বলার স্বাধীনতা। ‘হে রাষ্ট্র, আমাকে বাচাঁর অধিকার দিন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিন, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দিন।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম