ঋতু বদল হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গেছে নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। সবচেয়ে বেশি এ সময় ভোগে শিশুরা—গলাব্যথা, জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গে। বেশির ভাগ গলাব্যথাই শ্বাসযন্ত্রের ওপরের অংশে প্রদাহজনিত কারণে হচ্ছে। এর সঙ্গে জ্বর, মাথা ও কানব্যথা হতে পারে, ঢোক গিলতে কষ্ট হয় বা খুক খুক কাশিও হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস, বিশেষ করে রাইনো ভাইরাস এর জন্য দায়ী। কখনো স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করেও গলাব্যথা হয়। এবার জেনে নেয়া যাক- এ থেকে নিরাময় পেতে যা করণীয়-
১. গবেষণায় প্রমাণিত যে কুসুম গরম লবণপানি কেবল জীবাণুকেই ধুয়ে মুছে দেয় না, প্রদাহ ও ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। এক কাপ হালকা গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মেশান, তেতো বা বিস্বাদ লাগলে এতে কয়েক ফোঁটা মধুও মেশাতে পারেন। তারপর দিনে দুই বা তিনবার গার্গল করুন।
২. হাঁচি, কাশি ও গলার ভেতর প্রচুর তরল পদার্থ নিঃসরণের জন্য শরীর খানিকটা পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই প্রচুর পানি ও তরল খান৷ ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন। গলার প্রদাহে চমৎকার কাজ দেয় ধোঁয়া ওঠা গরম স্যুপ।
৩. মেনথল, ইউক্যালিপটাস বা ফেনলসমৃদ্ধ কিছু লজেন্স পাওয়া যায়, যা চুষে খেলে প্রদাহ ও ব্যথা অনেকটাই কমে। এগুলো মূলত ক্লোরোসেপটিক অর্থাৎ গলায় একটা আরামদায়ক অনুভূতি এনে দেয়ার পাশাপাশি জীবাণুনাশেও সাহায্য করে৷
৪. দিনে দুই বা তিনবার গরম চা আপনাকে অনেকটা আরাম দিতে পারে। গ্রিনটি বা অন্য কোনো হারবাল চা আরও ভালো। চাইলে চায়ের মধ্যে লেবুর রস বা লবঙ্গজাতীয় জিনিস যোগ করুন, যা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে৷
৫. যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম আপনাকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে। দরকার হলে কাজ থেকে ছুটি নিন, অবকাশ যাপন করুন। কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হলে কথার বিরতি নিন।
৬. বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বা বেদনানাশক ওষুধই যথেষ্ট। তবে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে গলায় স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ গলাব্যথার উপসর্গ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই তিন দিনের মধ্যে সেরে যায়। ৮৫ শতাংশ সেরে ওঠে সাত দিনের মাথায়।