যে খাবারগুলো আপনার দুর্বল স্মৃতিশক্তি ও হৃদরোগ সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত মস্তিস্ক ও হৃৎপিণ্ডে বিভিন্ন ধরনের অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানের যদি অভাব হয় তাহলেই সমস্যা দেখা দেয়। মানুষজন এখন জাঙ্ক ফুড এবং প্রক্রিয়াজাত করা খাবারের দিকে প্রায় নেশাগ্রস্ত যার ফলে হার্টের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব অপ্রাকৃতিক খাবার খেতে খেতে মস্তিস্কের প্রচুর ক্ষতি হয় যার ফলে স্মৃতিশক্তিও দুর্বল হয়ে যায়। জেনে নেই সেই খাবার গুলো সম্পর্কে যা হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিস্ককে নীরোগ রাখতে সাহায্য করে...
ওয়ালনাট বা আখরোট এটি হচ্ছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ একটি উৎস। অনেকে আবার বলে থাকে যে আখরোটের আকৃতি দেখতে অনেকটা মস্তিষ্কের আকৃতির অনুরূপ। এটি ধমনীতে জমে থাকা বিভিন্ন প্লাক দূর করে এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে।
পেস্তা বাদাম পেস্তা বাদাম হচ্ছে ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন সমৃদ্ধ যা হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিস্ককে সুস্থ রাখে। এটি স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ দেবার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পেস্তা বাদাম সাধারণত রক্তনালী সমূহকে নমনীয় করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। কাঠ বাদাম কাঠ বাদামে রয়েছে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি৬, ই এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড।এটি স্মৃতি শক্তি বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাই মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য ও হৃৎপিণ্ডের সমস্যা কমাতে প্রতিদিন একমুঠো করে কাঠবাদাম খেতে পারেন। গমের ভুষিসহ আটা এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই যা হৃৎপিণ্ডের সমস্যা দূর করে এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি প্রতিরোধ করে। এছাড়া এতে থাকে প্রচুর খাদ্যআঁশ যা শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দেয়।এই আটা হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিস্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
অ্যাভোকাডো অ্যাভোকাডোতে থাকা ভালো ফ্যাট মস্তিস্কের ও হৃৎপিণ্ডের জন্য খুব ভালো। এটি অনেক ধরনের হৃদরোগ ভালো করতে সাহায্য করে এবং মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এটি মস্তিস্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করার মাধ্যমে স্মৃতি শক্তিকে তীক্ষ্ণ করে। আমলকী আমলকীতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে থাকে ভিটামিন সি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের নিরাময় প্রক্রিয়াতে সাহায্য করে।আমলকী মস্তিস্কে এবং হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এদেরকে স্থায়ী ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।আমলকীর জুস, কম তেলে আচার, জ্যাম বানিয়ে বা শুধু শুধু খেতে পারেন। পেঁয়াজ পেঁয়াজে রয়েছে quercetin নামক উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটিও মস্তিস্কে এবং হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। যার ফলে পেঁয়াজ দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোতে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সাহায্য করে।তাই আমাদের প্রতিদিনের তরকারী ও সালাদের বেশি করে পেঁয়াজ খাওয়া উচিত। কালোজিরা ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কালোজিরা মস্তিস্ক ও হৃৎপিণ্ডকে রক্ষা করে। এরা স্মৃতি শক্তি ও মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কালোজিরা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কালোজিরা সাধারণত বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে, ভর্তা করে বা গুড়ো করে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
ব্লুবেরি এটিও উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যে হৃৎপিণ্ড ও মস্তিস্ককে নানা ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এটি খাওয়ার ফলে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এটিও হার্টের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। মাছ সামুদ্রিক মাছগুলো ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ।এরা হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং মস্তিস্কের শক্তি বৃদ্ধি করে তাই ওমেগা ৩ দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লাল আপেল লাল আপেলের খোসাতে রয়েছে প্রচুর quercetin নামক উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।এছাড়া এতে রয়েছে anthocyanin যা স্মৃতিশক্তিকে ধারলো ও তীক্ষ্ণ করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। এই কারনে এটি দুর্বল স্মৃতিশক্তি ও হৃৎপিণ্ডের সমস্যার জন্য খুবই ভালো। মিষ্টি কুমড়ার বিচি এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে জিংক ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং মস্তিস্কের ক্ষমতাকে ধারালো করে। কুমড়ার বিচি মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং দুর্বল স্মৃতিশক্তিকে তীক্ষ্ণ করে।
মধু মধুর গুণাগুণের সাথে অন্য কোন খাবারেরই তুলনা চলে না।এর বহু উপকারিতা রয়েছে। এটি প্রায় সব রোগের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা সম্ভব। ঠাণ্ডা কাশি থেকে শুরু করে অনেক ধরনের গুরুতর রোগের ক্ষেত্রেও। মধুতে প্রায় সব ধরনের অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। এতে রয়েছে সবগুলো বি ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। সুতরাং এটি হৃৎপিণ্ড ও মস্তিস্কের জন্যও খুবই উপকারী।মধু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং মধুতে থাকা ফ্রুক্টোজ শর্করা মস্তিস্কে শক্তি সরবরাহ করে। বিট এই সবজিটিও হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিস্কে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে যার ফলে হৃৎপিণ্ডও সুস্থ থাকে স্মৃতিশক্তিও ভালো হয়।এছাড়াও বিট সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো এবং এটি রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও বৃদ্ধি করে। খেজুর খেজুর হচ্ছে ফসফরাস এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি ফল। এটি আমাদের মনোযোগ বাড়াতে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে এবং হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ডুমুর এই ফলটিরও রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুন। ডুমুর স্থায়ী ক্ষতি হওয়া থেকে হৃৎপিণ্ডকে রক্ষা করে সেই সাথে স্মৃতিশক্তিকেও উন্নত করে।
- See more at:
http://amarbangladesh-online.com