দেশে কত শিল্প গ্রুপ সরকার জানে না

Author Topic: দেশে কত শিল্প গ্রুপ সরকার জানে না  (Read 1294 times)

Offline mahmudul_ns

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 129
  • Never confuse a single defeat with a final defeat.
    • View Profile
কতটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হলে সাইনবোর্ডে, প্যাডে ও ভিজিটিং কার্ডে গ্রুপ বা গ্রুপ অব কোম্পানিজ ব্যবহার করা যায়—এ বিষয়ে কোনো নিয়ম নেই। কোম্পানি আইনে গ্রুপ বলতে কোনো শব্দও নেই। দেশে কী পরিমাণ ব্যবসা ও শিল্প গ্রুপ বা গ্রুপ অব কোম্পানিজ আছে, এমনকি সেই হিসাবও নেই সরকারের কাছে।
যৌথ মূলধন কোম্পানিজ ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) সূত্রে জানা গেছে, একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েও একশ্রেণির ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিক হিসেবে দাবি করছেন। ব্যাংকঋণ পেতে বা সমাজে প্রভাব খাটানোর প্রবণতা থেকে তাঁরা এ পথ বেছে নিয়েছেন বলে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ও আনোয়ার গ্রুপের পরিচালক হোসাইন খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনও দেখা গেছে, কোম্পানির নিবন্ধন হয়েছে, কার্যক্রম নেই। কিন্তু একশ্রেণির ব্যবসায়ী নিবন্ধন পাওয়া কোম্পানিটিরই মালিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। এটা অনৈতিক।’ আর্থিক খাতের এক সংস্থার তথ্যের সঙ্গে আরেক সংস্থার তথ্যের সংযোগ না থাকার কারণেই এ ধরনের কাজ হতে পারছে বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক চিন্তা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে বছরে চারবার আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর যে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়, একাধিক সভায় বিভিন্ন গ্রুপ এবং গ্রুপ অব কোম্পানিজের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রুপের সব কোম্পানির তথ্য নেওয়া এবং সেই তথ্য ঋণ প্রদানকারী ব্যাংককে দেওয়াসহ কাজটি স্বচ্ছতার সঙ্গে করতে সভাগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক তাগিদ দিয়েছে আরজেএসসিকে।
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পেতে চাইলে কোম্পানিকে তার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের ব্যাংকঋণ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিতে হয়। তথ্য সত্যায়িত হতে হয় আরজেএসসি থেকে। কিন্তু কাজটি যথাযথভাবে হচ্ছে না। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) তথ্যভান্ডার সংশোধনের কাজেও সমস্যা হচ্ছে বলে বৈঠকগুলোতে প্রসঙ্গ তোলে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ঋণ নেওয়ার পর কোম্পানির কোনো পরিচালক পদত্যাগ করতে চাইলে বা শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে এ তথ্য ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে জানানোর নিয়ম রয়েছে। আবার ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক একই তথ্য পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে, যা সংরক্ষিত থাকে সিআইবিতে। ব্যাংকের পর্ষদ অনুমোদন করার পর পদত্যাগ বা শেয়ার বিক্রির তথ্য কোম্পানির পরিচালকদের জমা দিতে হয় আরজেএসসিতে। তবে দুটি বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা যাচ্ছে, আরজেএসসির তথ্য ও ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকের তথ্যের মধ্যে ব্যাপক গরমিল রয়েছে। এতে সিআইবির তথ্যভান্ডার সংশোধনের কাজে সমস্যা হচ্ছে। আরজেএসসির উচিত হবে কেউ জালিয়াতি বা ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করছে কি না, সে ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক থাকা।
সমন্বয় সভার একটি বৈঠকে আরজেএসসির নিবন্ধক বিজন কুমার বৈশ্যর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোনো গ্রুপের শুধু একটি কোম্পানির তথ্যের পরিবর্তে পুরো গ্রুপের তথ্য দেওয়া সম্ভব কি না। জবাবে আরজেএসসির নিবন্ধক বৈঠকে জানান, সফটওয়্যার সমস্যার কারণে তা সম্ভব নয়। তা ছাড়া তাদের জনবলও নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক তখন এ ব্যাপারে আরজেএসসিকে সফটওয়্যার দিয়ে সহযোগিতা করবে বলে অঙ্গীকার করে।
জানতে চাইলে বিজন কুমার বৈশ্য প্রথম আলোকে বলেন, কোম্পানি আইনে গ্রুপ বলতে কিছু নেই। তবে জাল-জালিয়াতি রোধে তাঁরা আগের চেয়ে সতর্ক। আর সফটওয়্যার পাওয়া গেলে দেশের সব শিল্প ও ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি তালিকা করা যাবে।
সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আরজেএসসি সফটওয়্যার চেয়ে এখনো কোনো আবেদন করেনি। আর সমন্বয় সভার আগামী বৈঠকে গ্রুপ বা গ্রুপ অব কোম্পানিজ শব্দগুলোর ব্যবহার ও অপব্যবহার নিয়ে বিশদ আলোচনা হবে এবং একটা সমাধানও বেরিয়ে আসবে।

ফখরুল ইসলাম | অক্টোবর ০৮, ২০১৫ the daily prothom alo
Md. Mahmudul Islam
Lecturer, Dept. Of Natural Sciences
Daffodil International University
mahmudul.ns@diu.edu.bd