টেসটোসটেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি

Author Topic: টেসটোসটেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি  (Read 1442 times)

Offline sharifmajumdar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 108
  • You have to control your emotion to get success
    • View Profile
অধিকাংশ ক্ষেত্রে একবার কারণ জ‍ানা গেলে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই সুস্থতা পাওয়া যায়। যখন আক্রান্ত পুরুষটির দেহ খুব স্বল্প বা আদৌও টেসটোসটেরন তৈরি করে না, তখন টেসটোসটেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (Testosterone Replacement Therapy- TRT) দেওয়া হয়। যা রক্তে নির্দিষ্ট মাত্রার টেসটোসটেরনের ভারসাম্য বজায় রেখে রোগের লক্ষণ কমায়। ৪০ এর দশকের শেষের দিকে টেসটোসটেরনকে বলা হতো অ্যান্টিএজিং ওয়ান্ডার ড্রাগ।

টেসটোসটেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির ঝুঁকি
•    দীর্ঘদিন টেসটোসটেরন ব্যবহার করলে স্তনের আকার বৃদ্ধি, প্রোস্টেটের আকার বৃদ্ধি, বয়স্কদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
•    দেহে পানি আসে, বিশেষ করে যেসব রোগীদের আগে হার্ট, কিডনি বা লিভারের রোগ আছে তাদের দেহে দ্রুত পানি আসতে পারে।
•    যেসব পুরুষের স্তন ক্যানসার আছে তারা টেসটোসটেরন থেরাপি নেবেন না।
•    যদি আপনার টেসটোসটেরন থেরাপি শুরু করার পর শ্বাসকষ্ট বিশেষ করে ঘুমের সময় হয়, পুরুষাঙ্গের ঘনঘন বা দীর্ঘ সময় উত্থান ঘটে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

সর্তকতা
•    চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আসল কারণ না জেনে টেসটোসটেরন কমে যাওয়ার জন্য ওষ‍ুধ খাওয়া বা হরমোন নেওয়া বিপদজনক।
•    নারী ও শিশুদের থেকে ওষুধ দূরে রাখুন। কারণ এসব তাদের জন্য নিষিদ্ধ।

আশার আলো
যদি টেসটোসটেরন কমে যাওয়ার কারণ চিকিৎসাযোগ্য হয়, যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়, তাহলে ঘুমের সমস্যার সমাধান করলেই যথেষ্ট। টেসটোসটেরন বাড়ানোর জন্য কোনো ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করাই যথেষ্ট। যেমন, স্থুলতা।

ওজন কমে গেলেই স্বাভাবিক যৌন জীবনের পুনঃরুদ্ধার ঘটবে। কিন্তু যদি কোনো কারণ খুঁজে না পাওয়া যায় বা চিকিৎসা ফলপ্রসূ না হয় তখন চিকিৎসক সর্তকতার সঙ্গে বিবেচনা করে হরমোনাল চিকিৎসাও দিতে পারেন।

হরমোনাল থেরাপির পরিবর্তন আসতে কিছুটা সময় লাগে। ২ থেকে ৩ মাস ধৈর্য ধরুন। বারবার রক্ত পরীক্ষা আপনাকে বলে দেবে আশানুরূপ হারে রক্তে টেসটোসটেরনের মাত্রা বাড়ছে কিনা।

টেসটোসটেরন সাপ্লিমেন্টেশন ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
•    একনি, ব্রন, তৈলাক্ত ত্বক।
•    হেমাটোক্রিট বেড়ে যাওয়া। শিরা থেকে রক্ত নেওয়ার সময় দেখা যাবে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গেছে।
•    স্লিপ অ্যাপনিয়া বেড়ে যাওয়া।
•    প্রোস্টেট ক্যানসার রোগীদের রোগের তীব্রতা বাড়তে পারে।
•    চুল পড়ে যাওয়া বা পাতলা হওয়া (টেসটোসটেরন বাড়া বা কমা দুটিই চুলের উপর প্রভাব ফেলে)।
•    শুক্রাণু তৈরি/স্পারম্যাটোজেনেসিস কমিয়ে দিয়ে বন্ধ্যাত্ব করতে পারে।
•    ফ্লুক্সিমেসটেরন ও মিথাইলটেসটোসটেরন হলো টেসটোসটেরনের ওষুধের দুটি কৃত্রিম জাতক। নিরাপদ না হওয়ায় যা আজ চিকিৎসকেরা আর ব্যবহার করেন না।

রক্তে টেসটোসটেরন কম পুরুষের একটি শারীরিক অবস্থা।
চিকিৎসক যখন একজন পুরুষকে জানান, তার মুড অফ, যৌন আগ্রহ হ্রাস, যৌন ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ টেসটোসটেরন কম, তখন পুরুষটি কেমন বোধ করবেন? এ রোগ নির্ণয়ই কিন্তু তাকে নতুন দুশ্চিন্তা বা দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিতে পারে। রোগী ভয় পেতে পারেন যে এটা আক্ষরিক অর্থেই তার পৌরুষের জন্য ক্ষতিকর। আশার কথা হলো, এই রোগ খুব সহজেই ভালো হয়ে যায়, যদি রোগের উৎপত্তির চিকিৎসাযোগ্য আসল কারণটি ঠিকমত খুঁজে বের করা যায়।

টেসটোসটেরন কমে যাওয়ার কারণ
শুক্রাশয়ের নিজস্ব কোনো সমস্যা থেকে টেসটোসটেরন কমে যেতে পারে যা শুক্রাশয়কে প্রভাবিত করে যেমন হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থিজনিত রোগ।

•    জন্মগত কারণ: শুক্রাশয় মাতৃ গর্ভকালীন শিশুদের পেটে থাকে। শিশুর জন্মের কিছু দিন বা জন্মের পরপরই এটা অণ্ডকোষে নেমে আসে। যদি না নামে তবে একে ক্রিপটরকিডিজম বলে। এছাড়া আরও আছে প্রিন্যাটাল ডাইইথাইল স্টিলবেসট্রল সিনড্রম।
•    জেনেটিক কারণ: ক্লিনফেল্টার সিনড্রম, হিমোক্রোমাটোসিস, কালম্যান সিনড্রম, প্র্যাডার উইলি সিনড্রম, মায়োটনিক ডিসট্রফি ইত্যাদি।
•    শৈশবে মাম্পস্ এর সংক্রামণ।
•    কেমোথেরাপি।
•    শুক্রাশয়ে আঘাত/ক্যানসার।
•    কাসট্রেশন (শুক্রাশয় কেটে ফেলে দেওয়া)।
•    গ্রানুলোম্যাটোস রোগ যেমন: টিবি, কুষ্ঠ।
•    ডিডিটি (কীটনাশক দিয়ে সংরক্ষিত শুটকি বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে চাষ করা সবজি এসব খেলে টেসটোসটেরন কমে যায়।
•    ডায়াবেটিস।
•    সিস্টিক ফাইব্রোসিস রোগ।
•    সিকেল সেল অ্যানিমিয়া।
•    লিভার/কিডনি ফেইলিওর।
•    পরিবর্তিত থাইরয়েড ফাংশান।
•    রক্তে উচ্চ মাত্রার প্রলেকটিন লেভেল।
•    পিটুইটারি টিউমার, ইমিউন ও ইনফ্লামেটরি পিটুইটারিজনিত রোগ, যেমন সারকয়ডোসিস, ফাংগাল ইনফেকশন, অটোইমিউন ডিজিজ।
•    অপুষ্টি।
•    অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা।
•    বার্ধক্য।
•    পুরুষের মোনোপোজ বা অ্যান্ড্রোপোস।
•    রেডিয়েশন।
•    ভাইরাল ইনফেকশন, যেমন এইডস।
•    শারীরিক বা মানসিক চাপ/ স্ট্রেস।
•    স্থুলতা।
•    স্লিপ অ্যাপনিয়া/ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা ও শ্বাস আটকে যাওয়া।
•    হরমোনের সমস্যা।
•    উচ্চ কলেস্টরল।
•    কিডনিজনিত সমস্যা।
•    ওষুধ সেবন: করটিকোস্ট্রেরয়েড, মরফিন, প্রেডনিসোন, কিটোকোনাজল (খুশকি নাশক শ্যাম্পু), ইথানল, সিমিটিডিন (এসিডিটির ওষুধ), (SSR-Type) বিষণ্নতার ওষুধ, স্পাইরোনোল্যাকটোন (উচ্চরক্তচাপের ওষুধ) ইত্যাদি।
•    মেটাবলিক সিনড্রম।

source: banglanews24.com
Shariful Islam Majumdar
Lecturer, Department of MCT
Daffodil International University