চট্টগ্রাম আবাহনীই চ্যাম্পিয়ন

Author Topic: চট্টগ্রাম আবাহনীই চ্যাম্পিয়ন  (Read 921 times)

Offline Anuz

  • Faculty
  • Hero Member
  • *
  • Posts: 1988
  • জীবনে আনন্দের সময় বড় কম, তাই সুযোগ পেলেই আনন্দ কর
    • View Profile
রাতটা এর চেয়ে আর বর্ণিল হতে পারত না! আয়োজকেরা যা চেয়েছেন তা-ই হলো। ভরপুর গ্যালারির আশাও পূর্ণ। চট্টগ্রাম আবাহনী চ্যাম্পিয়ন!
গ্যালারির হাজারো মুঠোফোনের আলোয় উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর লাগছিল গোটা স্টেডিয়ামটা। চট্টগ্রামের ফুটবলে এমন রাত আগে কখনো আসেনি। পিছিয়ে পড়েও ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারানোর মধ্যে যে বীরত্ব দেখিয়েছে স্বাগতিক দল, সেটিই আসলে কৃতিত্বটাকে বড় করে তুলছে আরও।
১১ দিনের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের সফল সমাপ্তিই টানল চট্টগ্রাম আবাহনী। শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা থেকে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য শুনে উজ্জীবিত হলো সবাই।
হঠাৎই কাল সকাল থেকে বৃষ্টি। মাঠকর্মীরা মাঠ থেকে পানি সরালেন। তবে মাঠ ভারী ও পিচ্ছিল হয়ে উঠেছিল স্বাভাবিকভাবেই। সেই মাঠে হলো আসলে এলিটা কিংসলে ‘শো’। ম্যাচসেরার পুরস্কার তাঁরই হাতে। টুর্নামেন্ট সেরা, সর্বোচ্চ গোলের (পাঁচ গোল) পুরস্কারের মালিকও এই নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার।
চট্টগ্রাম আবাহনীর তিন গোলের দুটিই কিংসলের। করিয়েছেন অন্য গোলটিও। এমন সময়ই কিংসলে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন, যখন গোলের জন্য ঘরের দল খেলছে মরিয়া হয়ে। জাহিদ তাঁর মতো করে খেলতে পারছিলেন না হালকা চোটের কারণে। দায়িত্বটা যেন কাঁধে তুলে নিলেন কিংসলে।
শুরু থেকেই স্নায়ুচাপে ভুগছিল স্বাগতিকেরা। কিছুই ঠিক হচ্ছিল না। ১১ মিনিটে প্রতিপক্ষকে গোলও উপহার দিল। চট্টগ্রাম আবাহনীর রক্ষণের ভুলে বলটা পেয়ে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডার অভিনব বাগ যে শটটা নিয়েছিলেন, সেটি গোলে না-ও যেতে পারত। কিন্তু ডিফেন্ডার রেজাউলের মাথায় লেগেই দিক বদলে গেল জালে! গোলরক্ষক লিটনের আসলে করার কিছুই ছিল না।
এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর ফাইনালে বাজে গোল খাওয়ার যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পেতে মরিয়া হয়েই খেলছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু প্রথম ত্রিশ মিনিট খেলাটা ধরতেই পারেননি জাহিদ-এমিলিরা। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বিরতির ঠিক আগে গোলটা শোধ করতে পারা।
জাহিদ-মিঠুন-কিংসলের দুর্দান্ত সমন্বয়ে এল গোল। দ্রুত পাল্টা আক্রমণ থেকে কিংসলেকে দিয়ে যেভাবে গোল করালেন মিঠুন চৌধুরী, সম্ভবত তাঁর ফুটবল জীবনে অন্যতম সেরা মুহূর্ত ওটা। শুরুতে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করার প্রায়শ্চিত্ত করতেই যেন জ্বলে উঠলেন। বাঁ প্রান্তের কর্নার পতাকার কাছ থেকে আলতো করে বুটের টোকায় বলটা তুলে দিলেন বক্সে, কিংসলেও ছিলেন জায়গামতো। আলতো হেডে বল জালে জড়িয়ে দিতেই দর্শকে ঠাসা এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আনন্দ ঢেউ বইল।
বিরতির পরপরই ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল সব। ইস্টবেঙ্গল হঠাৎই এমন খেই হারাল যে এই প্রথম টুর্নামেন্টে দলটাকে লাগল অসহায়। ৫৩ মিনিটে জাহিদের ফ্রি-কিকে মিঠুনের পা ছোঁয়াতে না পারাটা সুফলই বয়ে আনল। বলটা ফাঁকা জালে ঠেলেন কিংসলে। চার মিনিট পরই কলকাতার চ্যাম্পিয়নরা রীতিমতো ছত্রখান। বাঁ দিক থেকে অনেকটা উঁচু করে বক্সে বল ফেলেন কিংসলে, হেমন্ত শরীরের দোলায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে সেটি ঠেলে দেন জালে।
৩-১ স্কোরলাইন মানে কার্যত ম্যাচটা চট্টগ্রাম আবাহনীর হাতের মুঠোয়। তবে মরণ কামড় দিতে চেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে রক্ষণ কাজটা করে গেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। দর্শকদের আনন্দে ভাসাতে উজাড় করে দিয়েছে নিজেদের।
Anuz Kumar Chakrabarty
Assistant Professor
Department of General Educational Development
Faculty of Science and Information Technology
Daffodil International University