যাঁদের সাইনোসাইটিস বা সাইনাসের প্রদাহ আছে, তাঁদের জন্য মৌসুম পরিবর্তনের সময়টা খারাপ। এটা তাঁদের আকস্মিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ার সময়।
আমাদের নাকের পেছনে ও মাথার খুলির ভেতর কিছু ফাঁকা জায়গা আছে যার নাম সাইনাস। সাইনোসাইটিসে এই ফাঁকা জায়গার ভেতর তরল জমে, প্রদাহ হয় ও কখনো সংক্রমণ ঘটে। শীতের শুরুতে ঠান্ডা হাওয়া ও ধুলাবালু নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করে এই প্রদাহের সৃষ্টি করে। এর ফলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হতে থাকে, নাক বন্ধ হয়ে যায়, কখনো সর্দি হয়। নাকের পেছন দিকে তরল গলায় প্রবাহিত হয় ও এর কারণে গলায় খুসখুস কাশি হতে পারে। জীবাণু সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।
সাইনাসের সমস্যা বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে এই সময়টা একটু সাবধানে থাকতে হবে। চট করে যেন ঠান্ডা লেগে না যায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। আর গোসলেও হালকা গরম পানি ব্যবহার করা উচিত। ভোরে বা সন্ধ্যার পর কুয়াশা ও শীতল বাতাসের হাত থেকে বাঁচতে একটু ভারী জামাকাপড় পরুন। ধুলাবালু, কার্পেটের ধুলা, পশুপাখির লোম আপনার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। নাক না ঢেকে ধুলা ঝাড়া ঠিক নয়।
তারপরও সমস্যায় পড়লে দরকার পুরোপুরি বিশ্রাম ও প্রচুর তরল খাবার। গরম স্যুপ, গরম আদা চা বা গ্রিন টি আরাম দেবে। বারবার পানি পান করুন। নয়তো পানিশূন্যতা হতে পারে। প্রচুর ভিটামিন সি আছে এমন খাবার খান। যেমন লেবু, মাল্টা, কমলা, জাম্বুরা ইত্যাদি। নাক বন্ধ হয়ে গেলে অস্বস্তি কমাতে নাকে স্যালাইন বা লবণ পানির ড্রপ ব্যবহার করা যায়। গরম পানির ভাঁপ নিলে বন্ধ নাক খুলে যাবে। রাতে একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করে ঘর গরম করে ঘুমালে অনেকটাই স্বস্তি মিলবে। শিশুদের নাক পরিষ্কার রাখুন, নয়তো শ্বাসকষ্ট হতে পারে। প্রয়োজনে অ্যান্টি-হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দুই বছরের নিচের শিশুদের তা না দেওয়াই ভালো। জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যায়। কয়েক দিনের মধ্যে সেরে না গেলে বা জ্বর তীব্র হলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো