হৃদ্রোগ এবং যকৃৎ কিংবা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির দুই পায়ে অনেক সময় পানি আসে। পা ফোলে। কিন্তু যদি কারও এক পা হঠাৎ ফুলে যায়, সেটা নিশ্চয়ই চিন্তার বিষয়। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ কোনো সদস্য, রোগাক্রান্ত বা শয্যাশায়ী ব্যক্তি, অথবা কেউ বড় কোনো দুর্ঘটনা বা অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘদিন শুয়ে থাকলে তাঁর পায়ের শিরার মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় রোগটির নাম ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি)। গুরুতর এই সমস্যায় পায়ের শিরায় জমাট বাঁধা রক্ত শরীরের অন্য কোনো বড় রক্তনালিতে আটকে গিয়ে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের রোজকার চলাফেরায় পায়ের মাংসপেশির সংকোচনের ফলে পা থেকে শিরার মাধ্যমে রক্ত হৃৎপিণ্ডের দিকে প্রতিনিয়ত বাহিত হয়। দীর্ঘদিন, এমনকি দীর্ঘ সময় (যেমন একটানা দীর্ঘ বিমানযাত্রা) নড়াচড়া না করার ফলে শিরার মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে এ বিপত্তি ঘটে। তাই বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যায় কয়েকটি বিষয় মনে রাখা অতি জরুরি:
* যাঁরা দীর্ঘদিন শুয়ে আছেন, পক্ষাঘাত বা পা ভাঙা রোগী, তাঁদের প্রতিদিন নিয়ম করে খানিকটা হাঁটাচলা করা উচিত। প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিয়ে যথাসম্ভব উঠে বসা, একটু হাঁটা, বিছানা থেকে নেমে অন্য চেয়ারে বসা, বাথরুম বা খাওয়ার ঘরে অন্তত হেঁটে যাওয়া ইত্যাদি অভ্যাস চালিয়ে যেতে হবে।
* প্লাস্টার থাকা বা অন্য কারণে বিছানা থেকে না নামতে পারলে পায়ের মাংসপেশি ও আঙুল নাড়াচাড়ার ব্যায়াম করতে পারেন। পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিসের রোগীরা নিয়মিত ফিজিওিথেরাপি নেবেন।
* অস্ত্রোপচারের পর এখন দীর্ঘদিন শুয়ে থাকার নিয়ম নেই। চিকিৎসকের পরামর্শে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া উচিত।
* দীর্ঘ যাত্রায়, বিশেষ করে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিমানযাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করুন। মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাহাঁটি করুন, পা নাড়ান, পায়ের ব্যায়াম করুন এবং যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করুন