স্কুলপড়ুয়া শিশুদের বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা থাকে। এই বয়সে তাদের যে খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে, তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সঠিক পরিমাণে পুষ্টিযুক্ত খাবার না খেলে ভবিষ্যতে উচ্চ কোলেস্টেরল, স্থূলকায় হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
দুই বছর ও এর থেকে বেশি বয়সের স্কুলগামী শিশুদের জন্য ‘ফুড পিরামিড’ ছক আছে। যেখানে শিশুর কায়িক শ্রম, ব্যক্তিত্ব মিলিয়ে তাকে নানা রকমের পুষ্টিকর সুষম খাবারে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে।
‘সারা জীবনের জন্য সুস্থ হার্ট’ নিশ্চিত করতে এ বয়সেই শিশু-কিশোর বয়সের খাদ্যগ্রহণ তালিকাতে কড়া নজরদারি করার প্রয়োজন আছে। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানের শিশু-কিশোর-কিশোরী পুষ্টিহীন সুস্বাদু খাবারে বেশি আগ্রহী। উচ্চ চর্বি ও সুগারযুক্ত খাবারে বেশি আসক্ত।
শিশুদের জন্য যেমন খাবার ভালো
* ফল ও শাকসবজি
* কম পরিমাণে ফলের রস খাওয়া
* ভেজিটেবল অয়েলের ব্যবহার
* মাখন ও অন্যান্য পশুচর্বির বদলে লো স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার
* সম্পূর্ণ দানাদার শস্য গ্রহণ (ব্রেড বা সেরিয়্যালের বদলে)
* লো ফ্যাট মিল্ক
* বেশি মাছ
* কম লবণ
পারিবারিক খাবারের মেন্যুতে এই তালিকা মেনে চলা ভালো।
শিশু খিদে অনুযায়ী তার প্লেটের খাবার খাবে—পুরোটাই তাকে খেতে হবে, এভাবে জোরাজুরি করা যাবে না
যেসব শিশু-কিশোর প্রতিদিন সুষম খাবার গ্রহণ করে, তাদের আলাদা করে ভিটামিন খাওয়ানোর প্রয়োজন পড়ে না। যারা একটু-আধটু খায়, অপুষ্টিতে ভুগছে, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত, ওজনে বাড়ছে না ও সবজি ডায়েটে নির্ভরশীল, তাদের জন্য ‘ভিটামিন-খনিজ’ জোগান দেওয়া উচিত।
শিশু-কিশোর বয়সে অস্থিকাঠামো মজবুত রাখা বেশি জরুরি। এ জন্য শিশুকে যথাযথ পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। বিজ্ঞানীরা এক বছরের বেশি বয়সী শিশুকে দৈনিক ৬০০ ইউনিট ‘ভিটামিন ডি’ এবং ৯-১৮ বছর বয়সীদের জন্য দৈনিক ১৩০০ মিলিগ্রাম করে ক্যালসিয়াম দিতে বলেছেন।
শিশু বেশি চিনিযুক্ত পানীয় ও ফলের রস গ্রহণের ফলে ভরপেট থাকার কারণে ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে পারে না। ফলে তারা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-বঞ্চিত থেকে সুষম দেহকাঠামো পায় না।
শিশুবিষয়ক অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটাও দেখা যায়, যেহেতু বয়ঃসন্ধিকাল জীবনের বেশ সংবেদনশীল সময়। শিশু ভাবাবেগপূর্ণ থাকে। অথচ সে এ বয়সে বেড়ে ওঠে বেশ দ্রুততার সঙ্গে। সঠিকভাবে খাদ্য পুষ্টি গ্রহণ করে না। ফার্স্টফুড, বাইরের খাবার বেশি খায়। এতে শরীর গঠনের বিভিন্ন উপাদান থেকে বঞ্চিত হয়।
এ বয়সে যারা বিভিন্ন খেলায় অংশ নেয়, বিশেষ করে অ্যাথলেটরা। তারাও খাদ্য উপাদানের নানা প্রচারণার ফাঁদে পড়ে। অ্যাথলেটদের জন্য প্রধান পুষ্টি উৎস হলো পানি। প্রতি ১৫ মিনিটের ব্যায়ামের পরে তৃষ্ণা থাকুক বা না-ই থাকুক, তাকে ৪-৮ আউন্স পানি পান করতে হবে।