৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে গার্মেন্টস মালিক

Author Topic: ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে গার্মেন্টস মালিক  (Read 2755 times)

Offline Karim Sarker(Sohel)

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 521
  • Test
    • View Profile
খেতি তাঁতে মোটা সুতা আর ঝুট কাপড় দিয়ে মাদুর তৈরি করছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার পশ্চিম কাদিরহাটের ফাতেমা বেগম। সংগ্রামী ও আত্মপ্রত্যয়ী এই নারী মাদুর তৈরি করে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন, স্বাবলম্বী করেছেন অন্যদেরও। অতিসাধারণ হয়েও এখন তিনি অসাধারণ। তার হাত ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার দুশ’ পরিবার। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বছরের সেরা ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছেন ফাতেমা বেগম।

পশ্চিম কাদিরহাট গ্রামে কোনো স্কুল ছিল না। কিন্তু ফাতেমার ইচ্ছা ছিল স্কুলে যাবে। কিন্তু স্কুল বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। ওর বন্ধুরা কেউ স্কুলে যেতে চায় না। অভিভাবকরাও একা ফাতেমাকে ওই দূরের স্কুলে পাঠাবেন না। সঙ্গীর অভাবে তার আর স্কুলে যাওয়া হয়নি।

তার জীবনের গল্প গ্রামবাংলার আর পাঁচটি নারীর মতোই। ছোটবেলা থেকেই অভাবের মধ্যে বড় হওয়া। ভাইবোনদের মধ্যে তিনি বড়। স্কুল দূরে হওয়ায় ছোট দুই ভাইয়েরও পড়াশোনা আর হয়ে ওঠেনি। অভাবের সংসার, মাত্র ১৩-১৪ বছর বয়সেই বাবা-মা তার বিয়ে দেন। এক অভাব থেকে আরেক অভাবের সঙ্গী হন তিনি। স্বামীর সংসারেও নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বিয়ের দুই বছরের মাথায় ছেলে সন্তানের মা হন ফাতেমা। এরপর কোলজুড়ে আসে আরেকটি সন্তান। সংসারের সদস্য বেড়েছে কিন্তু রোজগার বাড়েনি। অভাব যেন চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। ঠাকুরগাঁওয়ে কাজ নেই। তার স্বামী বাবুল হক সিদ্ধান্ত নেন কাজের জন্য ভারতে যাবেন। চোরাপথে কাজের সন্ধানে ভারতে যান তার স্বামী। সেই বছরটি ছিল ১৯৯৯। সেখানে পানিপথ ও পাঞ্জাব প্রদেশে গার্মেন্ট শ্রমিকের কাজ নেন বাবুল। আড়াই বছর সেখানে কাজ করে বেতন থেকে জমানো ১৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরেন তার স্বামী। ওই টাকা দিয়ে শুরু করেন মুদির দোকান। মুদি দোকানের আয়ে কিছুদিন ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু বাকি-বকেয়া পড়ায় ধীরে ধীরে পুঁজি হারিয়ে যায়। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি।

স্বামীর এই অবস্থায়ও মনোবল হারান না ফাতেমা। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন। তার এই স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করেন আরডিআরএস-বাংলাদেশ নামে একটি স্থানীয় এনজিও। সামান্য পুঁজি, স্বামীর সঞ্চয়ী অভিজ্ঞতা এবং এনজিও থেকে পাঁচ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু হয় ফাতেমার পথ চলা। চারটি খেতি তাঁত কিনে বাড়িতেই স্থাপন করেন পাপোস তৈরির কারখানা।

দেশের লোকশিল্প যখন লুপ্ত হওয়ার পথে তখন ঠাকুরগাঁয়ের ফাতেমা পাপোস তৈরি করে নিজে স্বাবলম্বী হন, এলাকার মেয়েদেরও রোজগারের পথ খুলে দেন।

২০০৪ সালে শুরু করা ক্ষুদ্র এই শিল্পটি কালের পরিক্রমায় বর্তমানে বৃহৎ আকার ধারণ করেছে। ফাতেমার এখন দুটি কারখানা। ৪টি খেতি তাঁত থেকে ৪৭টি খেতি তাঁত হয়েছে তার। তার উৎপাদিত পাপোসের কদর এখন দেশজুড়ে। দেশের বাইরে বিক্রি হচ্ছে তার বানানো পাপোস। বাহারি নকশা ও টেকসই হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। পুঁজি স্বল্পতার কারণে খেতি তাঁতের সংখ্যা বাড়াতে পারছেন না ফাতেমা।

বছরের সেরা ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ায় কেমন লাগছে- জানতে চাইলে ফাতেমা বেগম বলেন, মাত্র ৫ হাজার টাকা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। এখানে আমি সুতা আর গার্মেন্টসের ঝুট কাপড় দিয়ে মাদুর ও জায়নামাজ তৈরি করি। যা আমার ভাগ্য পরিবর্তন করে। এ পুরস্কার আমাকে আরও আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলেছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মুকেশচন্দ্র বিশ্বাসসহ দেশের গুণীজন আমার কারখানা পরিদর্শন করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এক সময় আমি একাই এই কাজ করতাম। প্রশিক্ষণ দিয়ে অনেক শ্রমিক তৈরি করেছি। এখন শ্রমিক আর কারখানার দেখাশোনা করি। আমার স্বামী পাপোস, মাদুর ও জায়নামাজের কাঁচামাল সংগ্রহ ও বাজারজাতের কাজ করছেন। আমার কারখানায় শ্রমিকের কাজ করছেন এলাকার প্রায় দুইশ’ নারী ও পুরুষ। তাদের মধ্যে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীও রয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিদিন তৈরি হয় কমপক্ষে ৩ হাজার পাপোস। আর এই পাপোস বিক্রির টাকায় চলে ওই সব খেটে খাওয়া শ্রমিকের সংসার। চলে অনেকের পড়াশোনার খরচ। দৈনিক আয় করেন ২ থেকে ৩শ’ টাকা।

বছর তিনেক আগে এক মেয়ে সন্তানের মা হন তিনি। মেয়ের নাম রেখেছেন বুশরা। আরবি ভাষায় অর্থ খুশির সংবাদ। জীবনযুদ্ধ ও দীর্ঘ সংগ্রামের পর ফাতেমার পরিবারে এখন আনন্দ আর আনন্দ। পুরস্কারের ৩ লাখ টাকা দিয়ে ফাতেমা এলাকার আরও নারীকে স্বাবলম্বী করার স্বপ্ন দেখছেন।

Collected

http://doinikbangladesh.com/%E0%A7%AB-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%81%E0%A6%9C%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%97%E0%A6%BE/
Md. Karim Sarker (Sohel)
Administrative Officer
Daffodil International University
Uttara Campus.
Ph-58952710, Ex-201
Mob-01847140030

Offline Karim Sarker(Sohel)

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 521
  • Test
    • View Profile
Md. Karim Sarker (Sohel)
Administrative Officer
Daffodil International University
Uttara Campus.
Ph-58952710, Ex-201
Mob-01847140030

Offline Nujhat Anjum

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 474
  • Test
    • View Profile

Offline Nujhat Anjum

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 474
  • Test
    • View Profile