চট্টগ্রামে বিনোদনের ক্ষেত্রে করপোরেট এবং বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ওয়াটার পার্ক সি-ওয়ার্ল্ড। পাহাড়, লেকঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দুয়ের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ফয়’স লেক কমপ্লেক্স চট্টগ্রামে বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের বড় ও শীর্ষ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সি-ওয়ার্ল্ডের সেবা নিচ্ছে। গার্মেন্ট, ওষুধ, টেলিকম এবং ব্যাংক মিলিয়ে এ রকম প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা শতাধিক। এর বাইরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা রয়েছে তিন শত। ৩৩৬ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা ফয়’স লেক কমপ্লেক্সে চার বছর আগেও এক বছরে দর্শনার্থী প্রবেশ করত তিন লাখের মতো। এখন তা বেড়ে এক বছরে পাঁচ লাখে উন্নীত হয়েছে। এখন চাহিদা এতটাই বেড়েছে, এই বছর তা সাড়ে ছয় লাখে উন্নীত হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে ফয়’স লেক কমপ্লেক্স পরিচালনাকারী কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের ডেপুটি ম্যানেজার বিশ্বজিত ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন চট্টগ্রামের বড় ও সেরা গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ফয়’স লেককে বেছে নিচ্ছে। নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে চুক্তি করছে। এখন পিকনিকের মৌসুম শুরু হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবং রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো থাকলে বছর শেষে দর্শনার্থী প্রবেশ সাড়ে ছয় লাখে পৌঁছবে।’ কনকর্ডের সঙ্গে চুক্তি করা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হচ্ছে শীর্ষ টেলিকম কম্পানি গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেল। সম্প্রতি চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান শ্রীলঙ্কান কম্পানি কেনপার্কের প্রায় ১৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ফয়’স লেকে পিকনিক করার চুক্তি করেছে। এটিকে ইতিবাচক উল্লেখ করে বিশ্বজিত ঘোষ বলেন, ‘গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক বিনোদনের নির্দিষ্ট বাজেট রয়েছে। আর সেদিক মাথায় রেখে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। ফলে তারা আমাদেরই বেছে নিচ্ছে। এই চুক্তির পর ইপিজেডের আরো কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান শ্রীলঙ্কাভিত্তিক রিজেন্সি ও ইন্টিমেট অ্যাপারেলসের কর্মীরাও পিকনিকের জন্য বেছে নিয়েছে ফয়’স লেককে।’ জানা গেছে, প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যেঘেরা ফয়’স লেককে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়ে নতুন রূপ দেয় দেশের শীর্ষস্থানীয় গ্রুপ কনকর্ড। ২০০৫ সাল থেকে তাদের ব্যবস্থাপনায় যাত্রা শুরু হয় এই পার্ক। জনপ্রতি ২৫০ টাকায় (তবে পিকনিক বা করপোরেটদের জন্য ১৮০ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ১৫০ টাকা) ফয়’স লেক কমপ্লেক্সে ঢুকতেই চোখে পড়বে বাচ্চা ও বড়দের জন্য উপযোগী রাইডের সমন্বয়ে গড়া ফয়’স লেক অ্যামেউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড। ১৪টি রাইডসের মধ্যে অন্যতম ফেরিস হুইলে উঠলে এক চক্করে দেখা যাবে পুরো ফয়’স লেক। বাচ্চাদের রাইডসগুলোর মধ্যে অন্যতম বেবি-কেরাওসাল, ট্রেন, হ্যাপি জাম্প, দোলনা ইত্যাদি। ছোট্ট একটি সাঁকো পেরোলেই মিলবে মজার সব খাবারের অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের পাশের লেকেই ফিশিং পয়েন্ট। নানা রকম মাছ খেলা করে এখানে।
Source:
http://www.kalerkantho.com/print-edition/industry-business/2016/01/06/310136#sthash.4rOQIarj.F6KsWEWf.dpuf