« on: February 12, 2016, 09:59:24 AM »
মানবজীবনের সব ক্ষেত্রেই ইসলামের বিধিবিধান রয়েছে। এতে একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক খুঁটিনাটি বিষয়ও বাদ যায়নি। ইসলামের বিধান হলো, ঘরে আসার আগে জানিয়ে আসতে হবে। অন্তত ঘরে প্রবেশের আগে অনুমতি নিতে হবে—যদিও নিজের ঘরে প্রবেশ করা হয়। এটা শালীনতা, সৌজন্য ও ভদ্রতার পরিচায়ক। ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন, ‘যখন কেউ বাড়িতে প্রবেশ করে তখন কাশি দিয়ে বা জুতার মাধ্যমে আওয়াজ করে নিজের আগমনি বার্তা পৌঁছে দেওয়া মুস্তাহাব।
বুখারি ও মুসলিম শরিফে এসেছে : রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ব্যক্তিকে (দূর সফর থেকে) রাতে পরিবারের কাছে আসতে নিষেধ করেছেন। কেননা তারা তার আগমনের ব্যাপারে অন্যমনস্ক থাকে। তাতে মনে হয়, লোকটি তাদের দোষত্রুটি অনুসন্ধান করছে। তাই নিজের ঘরে প্রবেশের আগেও জানানো বা অনুমতি নেওয়া উচিত। এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করে, ‘আমি কি আমার মায়ের কাছে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ লোকটি আবার বলল, ‘আমি তো একই ঘরে তাঁর সঙ্গে থাকি।’ মহানবী (সা.) বললেন, ‘তবুও তাঁর কাছে অনুমতি চেয়ে নেবে।’ লোকটি আবার বলল, ‘আমি তো তাঁর খাদেম।’ মহানবী (সা.) বললেন, ‘তার পরও তুমি অনুমতি নিয়ে সেখানে প্রবেশ করবে। তুমি কি তাঁকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পছন্দ করবে? তাহলে তুমি তোমার মায়ের কাছ থেকেও অনুমতি নাও।’ (মুআত্তা ইমাম মালেক) অনুমতি না নিয়ে কারো বাড়িতে বা কামরায় প্রবেশ করবে না। কোমল ও মধ্যপন্থায় তিনবার ডেকে যদি অনুমতি না পাওয়া যায়, তবে ফিরে আসবে; কিন্তু অসন্তুষ্ট হবে না। কেননা হতে পারে পুরুষ লোক বাড়িতে নেই বা এ সময় গৃহবাসী কোনো কাজে লিপ্ত আছে। অবশ্য কেউ সাধারণ মজলিসে বা খোলা জায়গায় একাকী বসা থাকলে তার কাছে যাওয়ার জন্য অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়ির ভেতর থেকে বা কামরার ভেতর থেকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, তুমি কে? তাহলে নিজের নাম-পরিচয় পরিষ্কার করে বলবে। শুধু ‘আমি’ বলবে না। ঘরে প্রবেশের সময় ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে। ডান পা দেওয়ার পর ‘বিসমিল্লাহ’ পড়বে।
বিসমিল্লাহ বলার পর এই দোয়া পড়ে প্রবেশ করবে—আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাল মাওলাজি ওয়া খাইরাল মাখরাজি বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা।
এরপর ঘরবাসীদের সালাম দেবে। ঘরে কেউ না থাকলেও ফেরেশতাদের নিয়তে সালাম করবে। যতবার ঘরে যাবে ততবার অনুমতি নেবে ও সালাম দেবে, যদিও তা মায়ের ঘর হয়।
কারো ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাওয়ার উপকারিতা অনেক। এর ফলে অন্যের স্বাধীনতায় বিঘ্ন ঘটে না। কারো বিশ্রামে ব্যাঘাত হয় না। ইসলাম কাউকে অহেতুক কষ্ট দেওয়াকে হারাম করেছে। এ ছাড়া অনুমতি নিয়ে কারো সঙ্গে সাক্ষাতের ফলে স্বয়ং সাক্ষাত্প্রার্থীর লাভ হয়। কোনো সাক্ষাত্প্রার্থী যখন অনুমতি নিয়ে ভদ্রোচিতভাবে কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাক্ষাত্দাতাও তার বক্তব্য যত্নসহকারে শুনবে। তার কোনো অভাব থাকলে তা পূরণ করার প্রেরণা তার অন্তরে সৃষ্টি হবে। এর বিপরীতে অভদ্রোচিত পন্থায় কোনো ব্যক্তির ওপর বিনা অনুমতিতে চড়াও হয়ে গেলে সে তাকে অকস্মাৎ বিপদ মনে করে যত শিগগির সম্ভব বিদায় করে দিতে চেষ্টা করবে।
লেখক : ইসলামী গবেষক
Source:
http://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2016/02/12/323871#sthash.RRkHMiXB.dpuf
« Last Edit: February 29, 2016, 12:45:31 PM by rumman »
Logged
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar