তনুজা রহমানঃ ২০ হাজার পুঁজি থেকে কোটিপতি

Author Topic: তনুজা রহমানঃ ২০ হাজার পুঁজি থেকে কোটিপতি  (Read 3352 times)

Offline Md. Nurul Islam

  • Newbie
  • *
  • Posts: 35
  • Test
    • View Profile
শখের বসে ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন গৃহবধূ তনুজা রহমান মায়া। নিরলস প্রচেষ্টা আর অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি এখন দেশের একজন শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা। ৩ হাজারের অধিক নারী-পুরুষকে হস্তশিল্প পণ্য তৈরি করে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা কাপড়ে সুই-সুতা দিয়ে নকশি কাঁথা, নকশি চাদর, হাতের কাজের শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টুপিসহ ৪০ ধরনের পণ্য তৈরি করছে। প্রতি মাসে এসব শ্রমিকের বেতন দেয়া হয় ১২ লাখ টাকার ওপর। তনুজার হ্যান্ডিক্র্যাফট ব্যবসায় এখন বিনিয়োগ তিন কোটি টাকা।

কথা হয় সফল এ নারী উদ্যোক্তা যশোরের তনুজার সঙ্গে। তিনি তুলে ধরেন তার সাফল্যের ইতিবৃত্ত। তনুজার শুরুটা ছিল শখের। পরবর্তীতে প্রয়োজনের তাগিদে নিজের পায়ে দাঁড়ানোরও একটা প্রচেষ্টা ছিল। পুরনো দিনের স্মৃতি তুলে ধরে তনুজা বলেন, ‘একদিন আমার স্বামীকে কিছু টাকা ধার দিই। পরে স্বামীর কাছে ধারের টাকা চাইলে আর ফেরত দেয় না। স্বামী বলে তোমার কিসের টাকা? তুমি কি ইনকাম কর? তখন থেকে মনে জেদ আসে। সেই জেদ থেকেই ১৯৯৬ সালে হ্যান্ডিক্র্যাফটের ব্যবসা শুরু।’

উচ্চমাধ্যমিক পাস তনুজার বিয়ে হয় কিশোরী বয়সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায়। ১৯৯৮ সালে তার স্বামী মারা যান। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী তনুজা। বড় ছেলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি করছে। মেয়ে ক্যান্টনমেন্ট কলেজে বিবিএ পড়ছে। উদ্যোক্তা হিসেবে তনুজার যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। তখন ঘরে বসেই সেলাইয়ের কাজ করতেন। তারপর গড়ে তোলেন রঙ হ্যান্ডিক্র্যাফট নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
১০ থেকে ১২ জন কর্মী নিয়ে লড়াইটা শুরু হয়। চার বছর পর্যন্ত কঠোর সংগ্রাম করতে হয়েছে তনুজাকে। এরই মধ্যে যশোর শহরে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে, চাহিদা বাড়তে থাকে তার তৈরি পণ্যের। চার বছর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।

মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা তনুজার হ্যান্ডিক্র্যাফট ব্যবসায় এখন বিনিয়োগ তিন কোটি টাকা। এর মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের লোন নেয়া আছে ৭৫ লাখ টাকা। আর ব্যাংক থেকে তিনি দেড় কোটি টাকা সিসি লোন নিয়েছেন। যশোরের রেলগেটসংলগ্ন মুজিব সড়কে প্রথমে ছোট একটা শোরুম চালু করেন, সঙ্গেই ফ্যাক্টরি। যেসব পণ্য তৈরি হতো তার বাজার যশোর শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। গুণগত ও মানসম্মত হওয়ায় তার পণ্য অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সফল হওয়ার পেছনে গোপন রহস্য কী জানতে চাইলে তনুজা বলেন, আমি মানের সঙ্গে কখনোই আপস করিনি, করবও না। এ কারণে টিকে আছি। তিনি বলেন, সামাজিক, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা প্রথমে কাজ করতে গিয়ে অনুভব করেছি। তারপরও প্রাচীন বাংলার নকশাকে তুলে ধরার মাধ্যমে আমার পণ্যে দেশি কাঁচামাল ব্যবহার করছি, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিষ্ঠান বড় হয়েছে। বহু মানুষ কাজ করছে। দরকার ছিল ব্যাংক ঋণের। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে এসএমই ফাউন্ডেশন। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে তারা জাতীয় এসএমই নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমাকে ঋণ দেয়। ফলে এখন আমাকে আর অর্থ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার তৈরি পণ্য ব্র্যান্ড হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাই। পাশাপাশি কর্মসংস্থান ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজারে উন্নীত করব, এটা আমার স্বপ্ন। তিনি বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর যখন দেখি গ্রামে মেয়েদের আয়-রোজগার দরকার, তখন আর বসে থাকতে পারলাম না। আমার এখানে কাজ করার পর অনেক মেয়ের ভাগ্য বদলে গেছে। এটা দেখে বুকটা ভরে যায়।

তনুজা বলেন, ব্যবসা করতে গিয়ে ট্যাঙ্ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এ বিড়ম্বনার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ট্যাঙ্ দিতে আগ্রহ দেখান না। অনেকে বাধ্য হয়ে ট্যাঙ্ দেন। বিশেষ করে যারা ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা করছেন তারা ভোগান্তি স্বীকার করে ট্যাঙ্ দিচ্ছেন। তনুজা মনে করেন, ট্যাঙ্ প্রক্রিয়া সহজ এবং পরিমাণটা কম হওয়া উচিত। তাহলে সব ব্যবসায়ী ট্যাঙ্ দিতে উৎসাহী হবে। তিনি বলেন, এক সময় যে তরুণরা আড্ডা আর ক্যারাম খেলে সময় পার করত তাদের কারচুপির কাজ শিখিয়েছি। কারচুপির কাজ করে একটা ছেলে এখন সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করছে। এ টাকার ৭০ শতাংশ তাদের দেয়া হয়। বাকি ৩০ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ড হিসেবে রেখে দেয়া হয়। প্রভিডেন্টের এ টাকা তাদের প্রতি বছরের রমজান মাসে দিয়ে দেয়া হয়। যাতে তারা ঈদ ভালোভাবে করতে পারে।

তনুজার ফ্যাক্টরিতে কথা হয় জনি ও আসাদুল নামের দুই কর্মচারীর সঙ্গে। এ দুইজন মাসে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন। দুইজনকে ভারতের মুম্বাই থেকে প্রশিক্ষণ করিয়ে এনেছেন তনুজা। তনুজার কারখানার শ্রমিক জনি বলেন, একটি পাঞ্জাবির ডিজাইন করতে অনেক সময় লেগে যায়। দিনে মাত্র দুই থেকে তিনটি পাঞ্জাবির কাজ করা যায়। তনুজা জানান, বাংলাদেশে হস্তশিল্পের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, প্রয়োজন সহযোগিতা ও অনুকূল পরিবেশ। নারীদের জন্য ব্যাংক ঋণ পাওয়াটা খুবই কঠিন বলে জানান তিনি।তার মতে, সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ পাওয়া গেলে এ দেশে অসংখ্য নারী আছে, যারা বড় উদ্যোক্তা হতে পারেন। প্রথমদিকে তিনি নিজেও এ সমস্যা মোকাবিলা করেছেন। তবে এমএমই ফাউন্ডেশন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক তাকে সহযোগিতা করায় ব্যবসাটা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

ব্যবসা করে শুধু অর্থ উপার্জনই করেননি, পেয়েছেন কাজের স্বীকৃতিও। দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থানে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে তিনি পেয়েছেন জাতীয় এসএমই নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার। ২০১৩ সালে পেয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের কোয়ালিটি অ্যাঙ্গেলিন্ট অ্যাওয়ার্ড।

Offline ABM Nazmul Islam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 386
  • Test
    • View Profile
ABM Nazmul Islam

Lecturer
Dept. of Natural Science
Daffodil Int. University, Dhaka, Bangladesh

Offline sheikhabujar

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 273
  • Life is Coding !
    • View Profile
    • Sheikh Abujar Personal Profile
Sheikh Abujar
Lecturer, Department of CSE
Daffodil International University
Cell: +8801673566566
Email: sheikh.cse@diu.edu.bd
Site: http://www.sheikhabujar.ml

Offline Raisa

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 908
  • Sky is the limit
    • View Profile
:)

Offline 710001983

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 255
  • Let's be an example, than advising others.
    • View Profile
Md. Imdadul Haque
Senior Lecturer
Department of Public Health
Daffodil International University
Dhaka-1207