বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনস্যুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনস্যুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে ডায়াবেটিস হয়। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়।
অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন ইনস্যুলিন, যার সহায়তায় দেহের কোষগুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজকে নিতে সমর্থ হয় এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে। ইনস্যুলিন উৎপাদন বা ইনস্যুলিনের কাজ করার ক্ষমতার যেকোনো একটি বা দুটোই যদি না হয়, তাহলে রক্তে বাড়তে থাকে গ্লুকোজ। আর একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঘটে নানা রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে থাকে।
বিশ্বে এ রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বাংলাদেশেও এর প্রাদুর্ভাব কম নয়। প্রতিবছর হাজারো মানুষ মারা যান এ রোগে আক্রান্ত হয়ে।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বে ৩৮০ মিলিয়ন লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ জনে ২৫ জন এ রোগে ভুগছেন।
সংস্থাটির মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। স্তন ক্যানসার ও এইচআইভিএইচ মিলে বিশ্বে যত মানুষ মারা যায়, তার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ডায়াবেটিসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ব্যর্থতা, অন্ধত্ব, ও অঙ্গচ্ছেদের মতো রোগের দিকে ধাবিত করে ডায়াবেটিস।
এ রোগ প্রতিরোধের জন্য বেশ কিছু প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু এটা সব সময় কার্যকরী নাও হতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ রোগ প্রতিরোধের জন্য একটি পদ্ধতির কথা বলেছেন, যেটা আপনি বাড়িতেই বসে প্রয়োগ করতে পারবেন।
এটাতে যে উপাদানসমূহ লাগবে :
এ পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য আপনাকে আহামরি কিছু করতে হবে না। দামী কোনো উপাদান বা উপকরণও লাগবে না। এজন্য আপনাকে ছয়টি লেবু ও ৩০০ গ্রাম সেলারির মূল (শালগম জাতীয় সবজি) লাগবে।
প্রস্তুতি: সেলারির মূল কুঁচি কুঁচি করে কাটুন। ছয়টি লেবুর রস ও সেলারির কুঁচিগুলো বাটিতে রাখুন। এরপর পানিভর্তি একটি পাত্রে ঢালুন সেগুলো। এরপর জ্বালাতে থাকুন। সেলারিগুলো সিদ্ধ হয়ে তরল না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। যখন পানি ফুটতে শুরু করবে তখন আগুনের তাপ একটু কমিয়ে দেন। অল্প আঁচে ২ ঘণ্টার মতো জ্বাল দিন। এরপর চুলা বন্ধ করে সেটি ঠাণ্ডা করতে রুমে নিয়ে যান। জ্বালানোর পর সেগুলো জুসের মতো হয়ে যাবে। এটা এক গ্লাস করে পান করুন। খাওয়ার সময় এক পাত্র থেকে আরেক পাত্রে নিয়ে মিশিয়ে নিন। অবশ্যই পরে এটা ফ্রিজে রাখবেন।
সকালের নাস্তা কিংবা খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে প্রতিদিন পান করুন। এই জুস দুই ঘণ্টার মধ্যে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সাহায্য করবে। তথ্যসূত্র : হেলথ অ্যান্ড হেলথি লিভিনিং।