‘টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক’

Author Topic: ‘টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক’  (Read 609 times)

Offline habib

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 112
  • Test
    • View Profile
এশিয়া কাপ মাতিয়েছেন সাব্বির রহমান, এখানে প্রথম দুই ম্যাচেই দারুণ দুটি ইনিংস খেলেছেন তিনি নিজে (তামিম ইকবাল) । তার পরও কাল ধর্মশালায় উৎপল শুভ্রকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবাল দাবি করলেন, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের সেরা ব্যাটসম্যান তাঁরা কেউই নন!

২২ গজে তামিম যখন ছন্দে l

*ব্যাটসম্যানদের কখনো কখনো এমন একটা সময় আসে, যখন ব্যাটিং করাটা খুব সহজ মনে হয়। আপনার কি এখন সেই সময় চলছে?
তামিম ইকবাল: সেই সময় বা সেরা সময়, যা-ই বলুন আমি ঠিক জানি না। তবে এটা জানি, ভালো ব্যাটিং করছি। মূল কথা প্ল্যান, প্ল্যানটা ভালো থাকলেই ব্যাটিংও ভালো হয়। মাঠে প্ল্যানটা ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারাটাই আসল।

* সাম্প্রতিক সময়ের কথা যদি বলি, সেই প্ল্যানটা কী? এটা নিশ্চয়ই প্রতিপক্ষ, ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলে যায়...
তামিম: তা তো যায়ই, তবে এখন আমি যতটা সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করি। হঠাৎ করে তাড়াহুড়ো করতে গেলে শট যা পারি তা না মেরে ওই শট মারতে হবে, জোরে মারতে হবে এসব মাথায় চলে আসে। রান করার অনেক সুযোগ উল্টো হাতছাড়া হয়ে যায়। তা ছাড়া টি-টোয়েন্টি এমন দ্রুতলয়ের খেলা যে, মাথা খুব ঠান্ডা রাখতে হয়।
 
* এটা তো সবাই জানে, কিন্তু জানা আর করা ভিন্ন ব্যাপার। তা করতে ভিন্ন কিছু কি করছেন, মেডিটেশন-জাতীয় কিছু?
তামিম: আমি নিজের সঙ্গে কথা বলি। নিজেই নিজেকে বলি—শান্ত থাকো, শান্ত থাকো। দলের অনেক সিনিয়র আমাকে মেডিটেশন করতে বলেছে। বিশ্বের সব বড় অ্যাথলেটই এটি করে। আমিও হয়তো করব, তবে আপাতত এমন কিছু করছি না।

* টি-টোয়েন্টিতে আপনার রেকর্ড খুব ভালো ছিল না। ইদানীং যে ভালো খেলছেন, সেই রহস্যটা কী?
তামিম: টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার খুব হতাশা ছিল। আসলেই ভালো করছিলাম না। কোচের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। উনি আমাকে ভালো কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। গত বিপিএলে কঠিন উইকেটে খেলাটাও খুব কাজে এসেছে। কঠিন উইকেটে আপনি যা খুশি তা করতে পারবেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, আমি এখন টি-টোয়েন্টিটা উপভোগ করতে শুরু করেছি। কোনো কিছু উপভোগ না করলে ভালো করা যায় না।

* আমরা তো আমাদের মতো বুঝি। আপনার চোখে টেস্ট-ওয়ানডের তুলনায় টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংয়ে মূল পার্থক্যটা কী?
তামিম: কয়েক দিন আগে বিরাট কোহলির একটা ইন্টারভিউ দেখছিলাম। ও বলছিল, আমি বিগ হিটার না। গায়ে এমন শক্তিও নেই যে, গেইলের মতো প্রথম বলেই ছক্কা মেরে দেব। আমি তাই প্রপার ক্রিকেট শটই খেলি। টেস্টে যেমন খেলি, তেমনই খেলি। কোহলির ওই কথাটা থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। টি-টোয়েন্টিতে ওর গড় ৫০, এটা কিন্তু বিরাট ব্যাপার।
টেস্ট ম্যাচ আলাদা। ওটার সঙ্গে আমি তুলনাই করব না। ওখানে সময় পাওয়া যায়, সময় নিতে হয়। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি আমি একইভাবে দেখি। প্রথম বল ভালো হলে ঠেকাব, মারার হলে মারব। তবে টি-টোয়েন্টিতে একটু বাড়তি ঝুঁকি নিতে হয়। প্রথম ৬ ওভার পাওয়ার প্লেটা কাজে লাগাতে হয়।

* এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা তো আপনার দারুণ শুরু হলো। পরপর দুটি ভালো ইনিংস খেললেন...
তামিম: দেখেন, একটা টুর্নামেন্টে সবাই ভালো খেলে না। ২০১৫ বিশ্বকাপে যেমন রিয়াদ ভাই আর মুশফিক ভালো খেলেছে। সবাই সব সময় রান করবে না, এটাই নিয়ম। যারা করবে, তারা যদি প্রতি দ্বিতীয় ইনিংসে রান করে, তাহলে দলের কাজটা সহজ হয়।

* বিশ্বকাপ হলো সুপার স্টার হওয়ার সুযোগ। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি যেমন অমর হয়ে গেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বলে কি ভালো করার তাড়নাটা একটু বেশি?
তামিম: তা তো অবশ্যই। টিমের প্রত্যেকের মধ্যেই এটি আছে। পুরো বিশ্ব দেখছে, ইডেন গার্ডেনের মতো বিখ্যাত সব স্টেডিয়ামে খেলা হবে। এখানে ভালো খেললে আনন্দটা অনেক বেশি হবে। আমি হয়তো আমার ক্যারিয়ারে ১০০টা ছয় মেরেছি, মানুষ কিন্তু এখনো একটা ছয় নিয়েই কথা বলে। জহির খানকে ত্রিনিদাদে মারা ওই ছয়টা। কারণ ওটা ছিল বিশ্বকাপ। আমি হয়তো ১০-১২টা সেঞ্চুরি করেছি। কিন্তু রিয়াদ ভাইয়ের দুটি সেঞ্চুরি আলাদা। কারণ তা ছিল বিশ্বকাপে। এখানে ভালো করলে সবাই তা মনে রাখে।

* আপনার আর সৌম্যর ভালো একটা শুরুর ওপর দলের আশা-নিরাশা দোলে। সৌম্য যে বড় রান পাচ্ছেন না, এটা নিয়ে সিনিয়র পার্টনার হিসেবে ওর সঙ্গে কোনো কথা বলেছেন?
তামিম: আমি আবারও বলি, সৌম্য হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। মনে হয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর সংবাদ সম্মেলনে সৌম্যকে নিয়ে প্রশ্ন করায় আমি এই কথাটা বলেছিলাম। পরের ম্যাচেই ও সেঞ্চুরি করেছিল। এখনো আমি একই কথা বলব। এটা এমন একটা ফরম্যাট, যাতে একটা-দুটি ম্যাচে খারাপ করলেই প্রশ্ন তোলা উচিত নয়। ওর যে ক্ষমতা, বড় রান পাওয়াটা শুধু সময়ের ব্যাপার। মুশফিককে নিয়েও একই কথা বলব। ওরা ফর্মে ফিরলে আমাদের দলের অবস্থা কী হবে ভাবেন।

* মুশফিকের প্রসঙ্গটা আমিই তুলতাম। সম্প্রতি তিনি যে রান পাচ্ছেন না, আপনার ব্যাখ্যাটা কী?
তামিম: আমি জানতাম, হি ওয়াজ ডিউ টু ফেইল। গত ২-৩ বছরে সব ফরম্যাটে ও ছিল বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। এমন একটা সময় তো আসতে বাধ্য। তবে আমি এখনো মনে করি, ও বাংলাদেশের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান। পিএসএলে ওকে যখন বসিয়ে রেখেছিল, কোচ মুশতাক আহমেদকেও এ কথাই বলেছি। ওর হাতে যে শট আছে, ওর যে ক্ষমতা, আমার কোনো সন্দেহই নেই, মুশফিকই টি-টোয়েন্টিতে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান।
 
* বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যে মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্বের বড় ভূমিকা দেখেন সবাই। অধিনায়ক মাশরাফি সম্পর্কে আপনার কী মূল্যায়ন?
তামিম: এভাবে বলি, আমি যদি দল থেকে বাদ পড়ে যাই, কেউ না কেউ আমার জায়গা পূরণ করে ফেলবে। কিন্তু মাশরাফি ভাইয়ের জায়গা কখনো পূরণ করা যাবে না। উনি যখন অবসর নেবেন, বিরাট একটা শূন্যতা তৈরি হবে। উনি হয়তো নিয়মিত ৫ উইকেট নেন না বা ফিফটি করেন না, কিন্তু যেভাবে তরুণ খেলোয়াড়দের আগলে রাখেন, ভালো খেলি-খারাপ খেলি যেভাবে আমাদের উৎসাহ দেন, এটা স্পেশাল কোয়ালিটি। এটা সবার মধ্যে থাকে না। আমরা খুব লাকি যে, ওনার মতো একজনকে পেয়েছি।
 
* আপনি যত অধিনায়কের অধীনে খেলেছেন, মাশরাফিই কি সেরা?
তামিম: আমি ৬-৭ জন অধিনায়কের আন্ডারে খেলেছি। তুলনা করতে বললে শুধু মাহেলা জয়াবর্ধনের কথাই বলব। তবে জয়াবর্ধনের সঙ্গে যেহেতু আমি সবকিছু শেয়ার করতে পারি না, মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে পারি, তাই ওনাকেই এগিয়ে রাখব। বিশ্বকাপে আমার কেমন অবস্থা হয়েছিল, আপনি তো জানেন। উনি তখন যা করেছেন, তা স্পেশাল।

* আপনার চোখে বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান কে?
তামিম: বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্স।

* দুজন তো দুই রকম। কোহলির দর্শনটা তো আপনিই বললেন। ও প্রথাগত, আর এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং সব ব্যাকরণ ভেঙেচুরে দেয়...
তামিম: আসলেই তাই। তবে দুজনের মধ্যে যদি একজনকে আমার দলে নিতে হয়, আমি কোহলিকেই নেব।
« Last Edit: March 13, 2016, 09:44:13 AM by habib »
Md. Habibur Rahman
Officer, Finance & Accounts
Daffodil International University (DIU)
Corporate Office, Daffodil Family
Phone: +88 02 9138234-5 (Ext: 140)
Cell: 01847-140060, 01812-588460