আজকাল অপেক্ষাকৃত কম বয়সেই অনেকের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। এদের অনেকেই পুরোপুরি কর্মক্ষম ব্যক্তি। হৃদ্যন্ত্রের এই গুরুতর অসুখ মানে মধ্যবয়সেই ছন্দপতন। তাই হার্ট অ্যাটাকের পর কর্মজীবনে ও সংসারজীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। হৃদ্রোগকে আর আপনার ওপর শাসন করতে দেওয়া যাবে না, বরং আপনিই শাসন করবেন আপনার রোগকে। এ বিষয়ে কয়েকটি পরামর্শ:
* ধূমপানকে চিরতরে বিদায় দিতে হবে। পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার ১০ বছরের মাথায় ধূমপানের যাবতীয় প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারবেন।
* চর্বিযুক্ত খাবারও একেবারে বাদ দিন। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করুন পর্যাপ্ত শাকসবজি, ফলমূল। অফিসের ক্যানটিন বা অফিসের পাশের রেস্তোরাঁকে বিদায় জানানোর সময় এখন। বাড়ি থেকে নিন স্বাস্থ্যকর দুপুরের খাবার। মাঝে খিদে পেলে ফলমূল বা বাদামজাতীয় হালকা কিছু খান।
* আগে কী ছিল না ভেবে এবার পরখ করে দেখুন আপনার ওজন, রক্তের শর্করা ও রক্তচাপ আদৌ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। রক্তে চর্বির পরিমাণ যাচাই করুন। সঠিক ওজনে ফিরে আসতে সচেষ্ট হন।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে চর্বি ও শর্করার পরিমাণও নির্ধারিত মাত্রার নিচে থাকবে। বছরে অন্তত দুবার রক্তে চর্বি ও শর্করার গড় এইচবিএওয়ানসি পরীক্ষা করতে হবে। ওষুধপত্রের কোনো পরিবর্তন দরকার কি না, চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।
* সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের এক থেকে দেড় মাস পর থেকেই নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটা শুরু করা যায়। প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করুন।
* হার্ট অ্যাটাকের পর অনেকেই বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন। কাজের চাপ ও মানসিক চাপ কমিয়ে আনুন। পরিবার, স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আরও বেশি করে সময় কাটান।
হার্ট অ্যাটাক মানেই এমন নয় যে আপনি হেরে গেলেন। হার্ট অ্যাটাকের পরও সুশৃঙ্খল সুন্দর জীবনযাপন আপনাকে আরও অনেক দিন সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল