ডাবল চিন’ বা গলার মেদ সমস্যার প্রকৃতিক সমাধান

Author Topic: ডাবল চিন’ বা গলার মেদ সমস্যার প্রকৃতিক সমাধান  (Read 1509 times)

Offline taslima

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 515
    • View Profile
‘ডাবল চিন’ বা দ্বৈত চিবুক— সুন্দর চেহারা বারোটা বাজানোর জন্য যথেষ্ট। সাধারণত চিবুকের নিচ থেকে গলা পর্যন্ত মেদ বা চর্বি জমে যাওয়া অথবা চামড়া ঝুলে পড়ার কারণে ‘ডাবল চিন’ সমস্যা হয়। আর এর অন্যতম কারণ মেদ।
চিবুকের নিচের চামড়া ঝুলে পড়ার কারণে ত্বকে ফাটা দাগও দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রাকৃতিক সমাধান বেছে নেওয়া যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ত্বকের নমনীয়তা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি আর্দ্রতার পরিমাণও ঠিক থাকে।
অস্ত্রোপোচারের সাহায্যে বর্তমানে ‘ডাবল চিন’ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া গেলেও তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে সহজেই ‘ডাবল চিন’ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়, আর এতে ত্বকের তেমন ক্ষতিও হয় না।
আসুন ঘরোয়া পদ্ধতিতে ‘ডাবল চিন’ থেকে পরিত্রাণের উপায় জেনে নিই।
তরমুজ
এতে থাকা বিভিন্ন উপাদান ত্বকের রং স্বাভাবিক করতে এবং চামড়া ঝুলে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফলে চোয়ালের নিচে চর্বি জমতে পারে না। ডাবল চিন সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন তরমুজের রস (পানি ছাড়া) আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আপেল
আপেলের রসও (পানি ছাড়া) চিবুকের নিচের অংশে ভালোভাবে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়। যদি সমপরিমাণ তরমুজ ও আপেলের রস একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় তবে আরও ভালো কাজ করে।
ভিটামিন ই
‘ডাবল চিন’ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ভিটামিন ই বেশ কার্যকার। ভিটামিন ই ত্বক টানটান করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।
তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় বেশি পরিমাণে ভিটামিন ই-যুক্ত খাবার রাখতে হবে। সাধারণত সবুজ শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার, লাল চাল, বার্লি, বাদাম, আপেল, সয়াবিন, চীনাবাদাম ইত্যাদি খাবারে ভিটামিন ই আছে।
এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন ই ক্যাপসুলও খাওয়া যেতে পারে।
কোকো বাটার
কোকো বাটার দিয়ে গলা ও চিবুক ঘষলে ‘ডাবল চিন’ সমস্যা দূর হয়। এক্ষেত্রে কোকো বাটারের তেল গরম করে চিবুকের নিচের অংশে লাগাতে হবে। প্রতিরাতে শোয়ার আগে কয়েক মিনিট মালিশ করে ঘুমান। পরদিন গোসল করার আগে একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন, উপকার পাওয়া যাবে। ত্বক নমনীয় রাখতে কোকো বাটার বেশ কার্যকার।
ঘুমানোর জন্য পাতলা বালিশ
উঁচু বালিশে মাথা রেখে ঘুমানো উচিত নয়। এতে করে নাক ডাকা সমস্যা হয়। তাছাড়া উঁচু বালিশে শোবার কারণে ত্বকে টান পড়ে। ফলে ত্বক ঝুলে যায় আর ‘ডাবল চিন’ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই ঘুমানোর জন্য নরম ও পাতলা বালিশ বেছে নিতে হবে।
আর্দ্রতা
গলার ত্বকে নমনীয়তা ধরে রাখতে মুখের পাশাপাশি চিবুকের নিচেও লোশন মাখুন।

দুধ
ত্বক টানটান করতে দুধ বেশ কার্যকর। এক্ষেত্রে দুধ দিয়ে কিছুক্ষণ মালিশ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তাছাড়া দুধ ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করেও ব্যবহার করা যায়। সমপরিমাণ দুধ ও মধু মিশিয়ে মিশ্রণটি চিবুকে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে আসলে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ও গলা ধুয়ে নিতে হবে।
মাস্কটি ত্বক আর্দ্র ও নরম করার পাশাপাশি ‘ডাবল চিন’ কমাতে সাহায্য করে। দ্রুত উপকার পেতে মাস্কটি দিনে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডিম
ত্বক ভালো রাখতে এবং ‘ডাবল চিন’ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ডিমের সাদা অংশ উপকারী। এক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ঘরোয়া মাস্ক তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে।
মাস্কটি তৈরি করতে লাগবে ২টি ডিমের সাদা অংশ, ১ টেবিল-চামচ দুধ, ১ টেবিল-চামচ মধু, অল্প পরিমাণ পেপারমিন্ট অয়েল এবং ১ টেবিল-চামচ লেবুর রস। সবগুলো উপকরণ একটি বাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি চিবুকে, আশপাশের ত্বক ও গলায় লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দিনে একবার মাস্কটি ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
পানি
পানি কম পান করলে মুখের মেদ বাড়ে। সেখান থেকে ‘ডাবল চিন’ হয়। তাই দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
এছাড়া পানি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীর সুস্থ রাখে। পানি পান করার পাশাপাশি তরমুজ, শসা ও লেটুস ইত্যাদি পানি সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
গ্লিসারিন
‘ডাবল চিন’ দূর করতে গ্লিসারিনের তৈরি মাস্ক ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যাবে। মাস্কটি তৈরি করতে ১ টেবিল-চামচ গ্লিসারিনের সঙ্গে আদা চা-চামচ এপসাম সল্ট এবং কয়েক ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে।
মিশ্রণটি তুলায় ভিজিয়ে সরাসরি গলা ও চিবুকে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। উপকার পেতে মিশ্রণটি সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার ব্যবহার করতে হবে।
গ্রিন টি
ডাবল চিন থেকে বাঁচতে গ্রিন টি বেশ কার্যকার। গ্রি টি’তে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন উপাদান যা হজম শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে। তাই ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়র পরিবর্তে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস থাকা ভালো। এক্ষেত্রে দিনের শুরুটা হতে পারে এককাপ গ্রিন টি দিয়ে। সারাদিনে কয়েক কাপ গ্রিন টি পান করা উপাকারী।
চুইংগাম
মুখ ও গলার পেশির ব্যয়ামের জন্য চুইংগাম চিবানো যেতে পারে।
এক্ষেত্রে চিনি ছাড়া গাম চিবানোর অভ্যেস করুন। এতে দাঁতের ক্ষতি হবে না। ‘ডাবল চিন’ কমাতে দিনে অন্তত একঘণ্টা চুইংগাম চিবালে উপকার পাওয়া যাবে।
সূত্র: বিডিনিউজ২৪.কম
Taslima Akter
Sr. Accounts Officer (F&A)
Daffodil International University
Email: taslima_diu@daffodilvarsity.edu.bd