Birds of Bangladesh

Author Topic: Birds of Bangladesh  (Read 12431 times)

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
Birds of Bangladesh
« on: July 11, 2016, 10:51:39 AM »
We will post here recognized, beautiful & rare birds of Bangladesh.
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
ছোট চিত্রা ইগল
« Reply #1 on: August 10, 2016, 05:12:23 PM »
ডাকাত স্বভাবের পাখি। কাঠবিড়ালির বাসা ছিঁড়ে-খুঁড়ে ছানা বের করে খায়। অন্য শিকারি পাখিদের থোড়াই কেয়ার করে। দুঃসাহসী, তবে বাজ বা দস্যুবাজের মতো এরা জলাভূমিতে তেমন থাকে না, অন্য পাখিদের ধাওয়াও সহজে করে না। এই দুই ভাইয়ের আকার-গড়ন-ধরন-রং ইত্যাদির ভেতর এতটাই মিল যে মনে হয় যমজ ভাই, হাতে ধরেও বোঝা দুঃসাধ্য—এটি কি দারোগাবাজ নাকি তার ছোট ভাই (Indian Spotted Eagle)।
একনজরে কালচে-বাদামি পাখি। ডানার উপরিভাগে কালচে-বাদামি ছোট ছোট ছিট-ছোপ। ঋতুভেদে রং বদলায়। তখন হতে পারে ঘন চকলেট-বাদামি রং। পা হলুদাভ। পায়ের পাতা ঘোলাটে-হলুদ। নখর কালো। লেজের আগা সাদা। ঠোঁট অপেক্ষাকৃত ছোট। আমাদের আবাসিক এই পাখিটির ভেতর কেমন যেন একটা ‘বাউল বাউল’ ভাব আছে, বাউন্ডুলে স্বভাব এদের। শরীরের তলদেশ ও পায়ের পালক ফিকে-বাদামি, চোখ হলুদাভ-বাদামি বা গাঢ়, ঠোঁটের কিনারা হলুদ।
বিপদাপন্ন এই শিকারি পাখিটির চারণক্ষেত্র বন-বাগান-খোলা মাঠ-উঁচু ভূমি। বৈজ্ঞানিক নাম aquila pomarina. দৈর্ঘ্য ৬০-৬৫ সেন্টিমিটার। বাংলা নাম ছোট চিত্রা ইগল বা গুটি ইগল।
মূল খাদ্য এদের ছোট ও মাঝারি পাখি, গেছো ইঁদুর, ধেনো ইঁদুর, বেঁশো ইঁদুর, গিরগিটি, ব্যাঙ-হাঁস-মুরগির ছানা ও নির্বিষ ছোট সাপ, কাঁকড়া ইত্যাদি। পাখি শিকার করে এরা গেরিলা কৌশলে। বেছে নেয় দুর্বল, আহত বা আনাড়ি পাখিদের। কণ্ঠ তীক্ষ্ণ সুরেলা, মনে হয় আশপাশের সবাইকে ধমক দিচ্ছে।
বড় বড় গাছের মগডালে সরু ডালপালা-পাটকাঠি-কঞ্চি-বাঁশের চটা-নারকেলের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে বড়সড় ডালার মতো বাসা বানায়। পুরুষটি উপকরণ আনে, মেয়েটি বাসা বানায় ও মনমতো সাজায়। ডিম পাড়ে ১টি। ক্বচিৎ ২-৩টি। মেয়েটি একাই তা দেয় ডিমে। পুরুষ থাকে পাহারায়। বউকে সে মাঝেমধ্যে পরম সোহাগে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। ডিম ফোটে ৪২-৪৪ দিনে।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
ফটিক সিন্ধু
« Reply #2 on: September 22, 2016, 02:30:02 PM »
এরা এ দেশের দুর্লভ এক সুন্দর প্রজাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ অধ্যাপক ড. বাশার ওদের নাম দিয়েছেন ফটিক সিন্ধু (Common Bluebottle বা Blue Triangle)। পশ্চিমবঙ্গে এটি তুঁতচিল নামে পরিচিত। Papilionidae পরিবারভুক্ত প্রজাপতিটির বৈজ্ঞানিক নাম Graphium sarpendon।
প্রসারিত অবস্থায় ফটিক সিন্ধুর সামনের এক ডানার প্রান্ত থেকে অন্য ডানার প্রান্ত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৮০-৯০ মিলিমিটার। ডানা ও দেহের ওপরটা কালো ও নিচটা বাদামি। সামনের ডানার শীর্ষ থেকে পেছনের ডানার ভেতরের প্রান্ত পর্যন্ত ওপর ও নিচে একটি ফ্যাকাশে সবুজ বা নীলচে-সবুজ থেকে গাঢ় নীল ডোরা চলে গেছে। পেছনের ডানার নিচের কিনারার দিকে এক সারি নীল ফোঁটা, অতিরিক্ত এক সারি লাল ফোঁটা ও ডানার গোড়ায় একটি লাল ফোঁটা রয়েছে। লম্বালম্বি সাদা ডোরাসহ দেহ ধূসর। শুঙ্গ (অ্যান্টেনা) ও চোখ কালো। শুঁড় ও পা ধূসর। পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাপতি দেখতে একই রকম।
ফটিক সিন্ধু সচরাচর কম দেখা যায়। মূলত ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন ও বনের কিনারা, উন্মুক্ত তৃণভূমি, ফুলের বাগানে বিচরণ করে। এরা বেশ চটপটে। দ্রুততার সঙ্গে গাছের ওপরের দিকে ওড়ে। বিভিন্ন ধরনের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ফুলের রস পান করে।
স্ত্রী দেবদারু, কর্পূর, দারুচিনি, অ্যাভোকাডো প্রভৃতি গাছের কচি পাতার ওপর পাতাপ্রতি একটি করে হলদে ও গোলাকার ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে তিন দিনে। শূককীট প্রথম দিকে কালচে বা গাঢ় সবুজ হলেও পরে সবুজাভ হয়। ১২ দিনে পাঁচবার রূপান্তরিত হয়ে শূককীট সবুজ রঙের মূককীটে পরিণত হয়। ১০ দিন পর মূককীটের খোলস কেটে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতি বের হয়ে নীল আকাশে ডানা মেলে।
বাংলাদেশ ছাড়াও পুরো ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও অস্ট্রেলিয়ায় এদের দেখা যায়।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
মটরঘুঘু
« Reply #3 on: October 02, 2016, 01:47:51 PM »
শীত বিকেলে পাতাঝরা মাদারগাছটার সরু ডালপালায় বুক-পেট মিশিয়ে বসে আছে ৯-১০টি পাখি। রোদ পোহাচ্ছে পরম আয়েশে। ওর ভেতরে চারটি আছে সদ্য উড়তে শেখা ছানা।
দুরন্ত তিন বালক গুলতি হাতে এগিয়ে এল গাছটার তলায়, একজন খুব নিরিখ করে ছুড়ল গুলতি—একখানা ডালে গুরোল লেগে শব্দ হতেই ঝট করে উড়াল দিল সব কটি পাখি, একটু দূরে গিয়ে ঝাঁক বেঁধে চলে এল পশ্চিম দিকে।
এই পাখিদের নামও মটরঘুঘু। জাঁতায় যখন দ্রুতবেগে মসুর-মুগ বা মটর ডাল ভাঙা হয়, তখন যে রকম শব্দ হয় ‘মটর মটর’, এদের ডাকের শব্দটাও তেমনি। উঁচু গাছের ডালে বসে প্রজনন মৌসুমে পুরুষটি দ্রুততালে ডাকে, মাথা দোলায় নান্দনিক ভঙ্গিতে, বুক ফুলিয়ে আর ঘাড়-মাথা দুলিয়ে তালে তালে নাচে আর ডাকেও দ্রুততালে। ঠোঁট-পা ঠোকে গাছের ডালে, লম্ফঝম্ফ করে—মনের আনন্দে পতপত ডানায় উড়াল দিয়ে খাড়া উঠে পড়ে শূন্যের দিকে। স্ত্রী-পাখিটি চুপচাপ বসে তা উপভোগ করে।
বাসা করে জিকল, খুদিজাম, লোহাজাম, বাবলা, বরই, কলা, তাল ও খেজুরগাছের ডালে। শুকনো সরু ঘাস-লতা হলো বাসার প্রধান উপকরণ। তবে এদের বাসায় শরতে দুয়েক টুকরো কাশফুল ও গ্রীষ্মে দু-চারটা সাদা ঘাসফুল দেখা যাবেই। এরা সারা বছরই বাসা করে। দুজনে মিলে বাসার জায়গা নির্বাচনে ব্যয় করে দুই থেকে পাঁচ দিন। বাসা বানাতে সময় লাগে তিন থেকে ছয় দিন। তারপর স্ত্রী-পাখি ডিম পাড়ে দুটি, কখনো তিনটি। দুজনেই পালা করে তা দেয় ডিমে। ছানা ফোটে ১০-১৫ দিনে। প্রথম প্রথম ছানাদের কবুতরের দুধ (Pegion Milk) পান করায় এরা।
মটরঘুঘুর প্রধান খাবার নানা রকম শস্যবীজসহ ধান-তিল-কাউন-ডাল-সরষে ও ধুলোমাটি। ধুলোমাটি খায় শরীরের লবণের চাহিদা পূরণের জন্য। মটর ডাল এদের সবচেয়ে প্রিয়। শীতে এরা নাড়া ও ঘাসবনে নেমে ডানা ঝাপটে শিশির পান করে।
এদের ইংরেজি নাম Red Collared Dove। বৈজ্ঞানিক নাম Streptopelia tranquebarica। দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার। ওজন ৯০ থেকে ১১০ গ্রাম। এদের পিঠের রং ইটগুঁড়ো করা সুরকির মতো লাল, তাতে হালকা গোলাপি আভা, ঘাড়-মাথা ঘন ছাই ও ধূসর। ঘাড়ে সাদা টানের ওপরে কালো বন্ধনী। চিবুক ও লেজের তলা সাদাটে। বুক হালকা গোলাপি। কালচে ঠোঁট। গোলাপি পা। মেয়েটি এক নজরে বাদামি রঙের পাখি। এদের দেখা মেলে সারা দেশেই। না দেখেও ডাক শুনে অনায়াসে শনাক্ত করা যায় পাখিটিকে। ঢোল ঘুঘু, ছোট ঘুঘু, পেঁচি ঘুঘু ও জংলাঘুঘু নামেও পরিচিত এরা।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
পুটিয়াল ধনেশ
« Reply #4 on: November 10, 2016, 12:04:33 PM »
ধূসর এই পাখি এ দেশের সাবেক আবাসিক পাখি পুটিয়াল ধনেশ (Common Grey Hornbill or Indian Grey Hornbill)। Bucerotidae গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Ocyceros birostris।
পুটিয়াল ধনেশ লম্বায় প্রায় ৬১ সেন্টিমিটার। পুরুষের ওজন প্রায় ৩৭৫ গ্রাম। একনজরে পুরো দেহ রুপালি-ধূসর। চোখের ওপরের পালক ফ্যাকাশে ও কান-ডাকনি কালচে। পেট হালকা ধূসর। লেজের আগা সাদা এবং তাতে কালো বন্ধনী। চোখের মণি বাদামি-লাল ও চোখের পাতায় লোম থাকে। পায়ের পাতা ও নখ কালো। পুরুষের ওপরের ঠোঁট গাঢ় ও নিচের ঠোঁট হলদে। স্ত্রীর হলুদ ঠোঁটের গোড়া কালো। ওপরের ঠোঁটের বর্ধিত অংশ বা বর্ম কালো, যা অন্যান্য ধনেশ প্রজাতির তুলনায় ছোট ও চোখা। পুরুষের বর্ম স্ত্রীর তুলনায় বড়। বাচ্চাদের বর্ম নেই।
রাজশাহী বিভাগের একসময়ের আবাসিক পাখি পুটিয়াল ধনেশ বর্তমানে এ দেশে আবাসিক না অনিয়মিত, তা জানতে গবেষণার প্রয়োজন। তবে আশার কথা, ওরা হারিয়ে যায়নি এ দেশ থেকে। এরা মূলত ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের আবাসিক পাখি। শুষ্ক বন, ফলের বাগান ও কুঞ্জবনে এরা বাস করে। শহরাঞ্চলের খোঁড়লযুক্ত পুরোনো গাছসমৃদ্ধ রাজপথেও এদের দেখা যায়। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ১ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায়ও থাকতে পারে। এরা মূলত বৃক্ষচারী। পাকা ফল ও বাসার জন্য মাটি সংগ্রহ ছাড়া সহজে মাটিতে নামে না। মূলত ফলখেকো হলেও ফুলের পাপড়ি, কীটপতঙ্গ, গিরগিটি, ইঁদুর ইত্যাদিও খায়। চেঁচামেচি আর মারামারিতে ওস্তাদ।
এপ্রিল-জুন প্রজননকাল। ডিমের রং সাদা ও সংখ্যায় এক থেকে পাঁচটি। জন্মের ১৩ দিন পর বাচ্চারা উড়তে শেখে।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
নলখাগড়ার নাড়ার ওপর চমৎকার ভঙ্গিতে বসে ছিল কালো মাথা ও কমলা বুকের সুদর্শন পাখিটি। রোদের আলোয় ওর কালো মাথাটি চকচক করছিল। পাখিটাকে কিছুটা ছটফটে স্বভাবের মনে হলো। হঠাৎই লাফ দিয়ে চরের বালুমাটিতে নেমে পড়ল। পোকা মুখে ফিরে এল নলখাগড়ার নাড়ার ওপর। আয়েশ করে খেল পোকাটি। কিছুক্ষণ পর আবারও পোকা ধরতে নিচে নামল। ওর ঠিক দু-তিন ফুট পাশেই অন্য একটি নলখাগড়ার নাড়ার ওপর একই ধরনের আরেকটি পাখি এসে বসল। তবে ওর দেহের রং বেশ মলিন, মাথা-বুকে নেই রঙের চাকচিক্য। তবে সে-ও একই কায়দায় পোকা শিকার করে ক্ষুধা মেটাতে লাগল।
এরা হলো বিরল সাদালেজি শিলাফিদ্দা (White-tailed Stonechat or White-tailed Bushchat)। সুদর্শন পাখিটি পুরুষ আর মলিন পাখিটি স্ত্রী। Muscicapidae গোত্রের এই পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Printicola leucura.
সাদালেজি শিলাফিদ্দা দৈর্ঘ্যে মাত্র ১২-১৪ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী-পুরুষের পালকের রঙে ভিন্নতা রয়েছে। পুরুষের মাথা, মুখ ও গলা কালো। পিঠ ও দেহের ওপরটা কালচে-বাদামি। ঘাড়ের সুস্পষ্ট সাদা পট্টি গলার পাশ পর্যন্ত চলে গেছে। বুক গাঢ় কমলা ও পেট ফিকে সাদাটে। ডানার পট্টি, কোমর ও লেজের মাঝের অংশ সাদা। স্ত্রীর মাথা, ঘাড় ও মুখণ্ডল ধূসর-বাদামি। পিঠে ধূসর-বাদামি লম্বা দাগ। গলা সাদা। বুক-পেট-দেহতল ফিকে ও তাতে পীতাভ আভা। ডানার পট্টি সাদা, পালকের ফিকে প্রান্তদেশসহ লেজ ফিকে বাদামি। চোখ, ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা ও নখ কালো। লেজের সাদা অংশ ছাড়া পুরুষটি দেখতে অনেকটা পুরুষ পাতি শিলাফিদ্দার (Common Stonechat) মতো, তবে মাথা ও পিঠ বেশি কালো। অন্যদিকে স্ত্রীটিও অনেকটা স্ত্রী পাতি শিলাফিদ্দার মতো তবে দেহের ওপরটা বেশি ধূসর ও নিচটায় কমলার আভা রয়েছে।
সাদালেজি শিলাফিদ্দা বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, ভারত ও মিয়ানমারে দেখা মেলে। এ দেশে এরা মূলত পদ্মা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বাস করে। চরাঞ্চলের বড় বড় ঘাস, নলখাগড়া ও ঝোপঝাড়ে বসে থাকে। এরা ঘাস বা নলখাগড়ার ওপর থেকে মাটিতে নেমে কীটপতঙ্গ ধরে খায়।
মার্চ থেকে মে প্রজননকাল। পানির ধারে উঁচু ঘাস, নলখাগড়া বা ঝোপঝাড়ে শেওলা, শিকড়, লোম ও পালক দিয়ে বাটির মতো বাসা বানায়। স্ত্রী তাতে তিনটি ধূসরাভ-নীল ডিম পাড়ে। ডিম ফোটা ও প্রজননসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য খুব একটা জানা যায় না।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
হলদেলেজি ফুলঝুরি
« Reply #6 on: December 07, 2016, 11:29:24 AM »
ছোট্ট-সুন্দর পাখিটির নাম হলদেলেজি ফুলঝুরি। পেটের তলা থেকে শুরু করে লেজের তলাটা এদের টকটকে হলুদ। ঋতুভেদে এই হলুদের সঙ্গে হালকা কমলা রঙের আভা দেখা যায়। গলা, বুক ও শরীরের দুপাশজুড়ে লম্বালম্বি রেখা টানা; রং কালচে-বাদামি। মাথা ও পিঠ জলপাই-বাদামি, ডানা ও খাটো লেজের উপরিভাগ কালচে-বাদামি। আগার দিকটা সামান্য বাঁকানো ছোট ঠোঁটটির রং কালচে। পা ও আঙুল কালচে-সবুজ।
এরা মূলত টিলা ও পাহাড়ি বনের পাখি। সমতলের জাতভাইদের (অন্যান্য ফুলঝুরি) মতোই স্বভাব-চরিত্র। খাদ্যসহ বাসার ধরন-গড়ন একই রকম। বসন্ত-বর্ষায় গাছের ডালে থলের মতো বাসা বানায় এরা নরম তন্তুজাতীয় উপকরণ দিয়ে। যেমন মাকড়সার জাল-মস-ঘাস-তুলা ইত্যাদি। ডিম পাড়ে দু-তিনটি।
মূল খাদ্য এদের নানান রকম ফল। পাকা আতা, বিলেতি গাব, সাগরকলা ইত্যাদি বড় ফল খেতে খেতে এরা ভেতরে ঢুকে পড়ে। ঠোকরায়, ফল নড়ে, ব্যাপারটি ভৌতিক বলেই মনে হয় তখন।
উড়লেই ডাকে, বাসা বাঁধার সময়ও ডাকে। কণ্ঠস্বর ধাতব ‘ডিজিপ ডিজিপ’ ধরনের। এরা এবং এদের জাতভাই অন্যান্য ফুলঝুরি হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট পাখি। এদের খাদ্যতালিকায় আরও আছে পোকামাকড়সহ বিভিন্ন ফুলের মধুরেণু। এরা দুলে দুলে ওড়ে।
ইংরেজি নাম Yellow-vented Flowerpecker। বৈজ্ঞানিক নাম Dicaeum chrysorrheum। দৈর্ঘ্য ৯-১০ সেন্টিমিটার।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
মোংলা থেকে যাত্রা করে পশুর নদ পেরিয়ে কুঙ্গা নদী। কুঙ্গা নদী তিনকোনা দ্বীপের কাছে যেখানে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে কোকিলমণির দিকে গেছে, সেই পয়েন্ট দিয়ে কিছুটা ভেতরে ঢুকতেই মরা পশুর নদ, খেজুরবাড়ি খাল, কাগাবগা খাল ও জাফা গাঙের মোহনা। পরপর দুই রাত চমৎকার এই মোহনায় আমাদের লঞ্চ নোঙর করল। এমন সুন্দর জায়গা সুন্দরবন ছাড়া আর কোথাও আছে কি না, জানা নেই। দ্বিতীয় দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মোহনা থেকে বের হয়ে মরা পশুর নদ দিয়ে কিছুক্ষণ এগিয়ে একটি খালের সামনে লঞ্চ নোঙর করল। লঞ্চ থেকে আমরা ছয়জন ডিিঙতে উঠে বাঁ দিকের একটি সরু খালে ঢুকলাম। সুন্দর এই খালের নাম ক্ষেতখেরা।
খালে ঢোকার মুখেই নানা ধরনের মাছরাঙা দেখলাম। এ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম থোরমোচা মাছরাঙার দেখাও মিলল এখানে। এরা ইংরেজিতে Brown-winged Kingfisher নামে পরিচিত। Alcedinidae পরিবারের মাছরাঙাটির বৈজ্ঞানিক নাম pelargopsis amauroptera.
ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে থোরমোচা ৩৬ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৭.৬ সেমি ও ওজন ১৬২ গ্রাম (পুরুষ)। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, ঘাড়, গলা, বুক, পেট ও লেজের তলা কমলা-বাদামি। পিঠ ও কোমর নীল। ডানা ও কাঁধ-ঢাকনি কালচে-বাদামি, তবে ডানার কিনারার পালকগুলো গাঢ় বাদামি। চোখ বাদামি ও চোখের পাতা ইটের মতো লাল। পা ও পায়ের পাতা লাল। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহে কমলার আধিক্য বেশি। ডানার পালক-ঢাকনি ও কাঁধ-ঢাকনির কিনারা ফিকে। দেহতল কালো, ঘাড়ে কালো ডোরা রয়েছে।
থোরমোচা সচরাচর দৃশ্যমান আবাসিক পাখি হলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় লোনাজলের বন ও সুন্দরবন ছাড়া দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। কিন্তু দিনে দিনে সুন্দরবন বিপন্ন হওয়ার কারণে এদের আবাস এলাকা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। আর সে কারণেই সম্প্রতি এদের IUCN বাংলাদেশ সংকটাপন্ন (Vunerable) বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের সুন্দরবন এবং মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত এদের দেখা পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে বিশ্বে এরা প্রায়-বিপদগ্রস্ত (Near Threatened) বলে বিবেচিত।
পানির সামান্য ওপর দিয়ে দ্রুত উড়ে চলে। সচরাচর নদী-খালপাড়ের গাছের নিচু ডালে বসে পানিতে মাছ খোঁজে ও মাছ দেখলে দ্রুত পানিতে ঝাঁপ দিয়ে শিকার করে। মূল খাদ্য ছোট মাছ হলেও কাঁকড়া ও জলজ পোকমাকড় খেতে পারে।
এরা মার্চ-এপ্রিলে প্রজনন করে। এ সময় নদী-খালের খাড়া পাড়ে ৩০-৪০ সেন্টিমিটার লম্বা ও ১০ সেন্টিমিটার চওড়া সুড়ঙ্গ তৈরি করে বাসা বানায় এবং তাতে চারটি গোলাকার সাদা ডিম পাড়ে। এরা ৫-৬ বছর বাঁচে।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
বিরল ধুমকল
« Reply #8 on: March 13, 2017, 09:48:14 AM »
এই বিরল পাখিটি হলো আমাদের আবাসিক বুনো কবুতর ধুমকল। ইংরেজি নাম Green Imperial Pigeon বা Northern Green Imperial Pigeon। Columbidae গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Ducula aenea।

ধুমকল বড় আকারের বুনো কবুতর। ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৪৩-৪৭ সেমি ও ওজন ৫০০ গ্রাম। পিঠ, ডানা ও লেজের উপরিভাগ ধাতব সবুজ। মাথা, ঘাড় ও দেহের নিচটা মেটে-ধূসর। লেজের তলা খয়েরি-লাল। নীলচে ঠোঁট ও গাঢ় লাল চোখ। পা ও পায়ের পাতা গোলাপি লাল থেকে প্রবাল লাল। নখ কালচে-ধূসর। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।

ধুমকল সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়-টিলাময় চিরসবুজ বনের পাখি। সচরাচর একাকী, জোড়ায় বা চার-পাঁচটির ছোট দলে দেখা যায়। তবে অনেক সময় ৫০-৬০টির বড় দলেও বিচরণ করতে পারে। গাছের পাতার ছাউনির নিচে এমনভাবে বসে থাকে, যেন সহজে চোখে পড়ে না। বিভিন্ন ধরনের বট, পাকুড় ও এ-জাতীয় ছোট ছোট পাকা ফল খেতে পছন্দ করে। এরা গাছে গাছেই বিচরণ করে। তবে পানি পান করতে ও লবণযুক্ত মাটি খেতে মাঝেমধ্যে মাটিতে নামে। অত্যন্ত দ্রুত ও সোজাসুজি উড়তে পারে।

মার্চ থেকে জুন প্রজননকাল। স্ত্রী সচরাচর একটি ও ক্বচিৎ দুটি ধবধবে সাদা ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে ১৫-১৯ দিনে। প্রায় ছয়-সাত বছর বাঁচে। দিনে দিনে আবাসস্থল সংকুচিত হওয়ার কারণে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
ভুবন চিল
« Reply #9 on: March 20, 2017, 07:26:36 PM »
গ্রামবাংলার চেয়ে শহরে দেখা যায় বেশি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা শহরে দেখা মেলে হাজারে হাজার। ঊর্ধ্বাকাশে ওদের নানান রকম মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে যেন জঙ্গিবিমানের ডগফাইট। একজন প্রেমিকাকে ঘিরে দুই বা ততোধিক প্রেমিক পুরুষ যখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় মাতে বা ঝাঁক বেঁধে অনেক উঁচুতে উঠে দলবদ্ধভাবে ছন্দময় বৃত্তাকার ঘূর্ণনদৃশ্য দেখলে মুগ্ধ হতে হয়। মূল খাদ্যস্থল এদের ময়লার ভাগাড় ও সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং এলাকা। ঢাকার পূর্বাঞ্চলের কাজলার বিশাল ডাম্পিং এলাকায় কয়েক হাজার পাখি জড়ো হয় রোজ। খাদ্যের তালিকায় আরও আছে মাছ, ব্যাঙ, অঞ্জন, কাঁকড়া, ইঁদুর, তেলাপোকা, ছোট পাখি ইত্যাদি। সুযোগ পেলে হাঁস-মুরগির ছানাও খায়। খাড়া ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে যেমন শূন্য থেকে মাটির দিকে নামতে পারে তিরবেগে, উঠতেও পারে তেমনি। দুর্দান্ত ডাইভার, দক্ষ শিকারি ও প্রখর দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন এসব শিকারি পাখি ঢাকা শহরে রোজই ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায়।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উঁচু উঁচু অনেকগুলো লাইটিং টাওয়ার আছে, ওর ভেতরের যেকোনো দু-তিনটি টাওয়ারের মাথায় প্রতি মৌসুমেই বাসা করে এই পাখিরা। কিন্তু ডিম পেড়ে যেমন স্বস্তি নেই, তেমনি ছানারা বড় না হওয়া পর্যন্ত বাবা ও মা পাখির যেকোনোটিকে কড়া পাহারায় থাকতে হয়। কেননা, পাতিকাকেরা সেই বাসা বাঁধা শুরু করার আগ থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে ঝাঁক বেঁধে পেছনে লাগে এদের। উত্ত্যক্ত করে, বাসার উপকরণ সুযোগ পেলেই ফেলে দেয়। এমনকি ভুবন চিলেরা যাতে বাসা বাঁধতে না পারে, সে জন্য নিজেরাই একটা নকল বাসা বানায়। ডিমে তা দিচ্ছে? ছানা ফুটেছে? পাতিকাকেরা কত রকমভাবে যে জ্বালিয়ে মারে ওদের! ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এই পাখিরা যখন ধাওয়া করে কাকেদের, তখন কাকেরা ছিটকে যায় ভয়ে।

পাখিটির নাম ভুবন চিল। মেঘচিল নামেও পরিচিত। বাসা করে টাওয়ার, উঁচু গাছের মগডালে ও অন্যান্য যুৎসই স্থানে। খোদ মতিঝিলের আকাশে ভুবন চিলদের ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায়—কাঁচা ডালপালা-পাতা ঠোঁটে-পায়ে ধরে উড়ে চলে যখন বাসা বাঁধতে।
ভুবন চিলের ইংরেজি নাম Black Kite। বৈজ্ঞানিক নাম Milvus migrans। দৈর্ঘ্য ৬১ সেন্টিমিটার, ওজন ৬৩০-৯৪০ গ্রাম। একনজরে দেখতে কালচে-বাদামি পাখি, খয়েরির আভা থাকে। চোখে যেন কাজল লেপ্টানো। কালচে ঠোঁট। হলুদ পা। লেজের আকার ইলিশ মাছের লেজের মতো। বাসা করে হেমন্ত থেকে শীতের মধ্যে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ডিম ফুটে ছানা হয় ২৯ থেকে ৩৩ দিনে।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
বাংলাদেশের নাইটিঙ্গেল
« Reply #10 on: July 06, 2017, 11:01:14 AM »
ছবির এই পাখিটির লেজ খোয়া গেছে। এই পাখিরা বন-বাগানের ঝোপঝাড়ে চরে। লাফিয়ে লাফিয়ে এই ঝোপ থেকে সেই ঝোপে যায়, পোকামাকড়, শূককীট ও লার্ভা খায়। হাবাগোবা ও নিরীহ শান্ত স্বভাবের এই পাখিদের গলায় আছে চার রকমের মিষ্টি সুর। মোলায়েম মিষ্টি সুরেলা গলা। খুব ভোরে জেগে পাতাঢাকা কোনো গাছের ডালে বুক-পেট মিশিয়ে বসে একটানা ডাকবে অনেকক্ষণ। গানের ভাষাটা অনেকটাই ‘টিউ টু টু টুউও’ ধরনের। শৈশব-কৈশোরে গ্রামের বাড়িতে এই পাখিদের ডাকে ঘুম ভাঙত। এখনো গ্রামের বাড়িতে গেলে ঘুম ভাঙে এদেরই গানে। এদের বাংলাদেশের নাইটিঙ্গেল বলা যেতে পারে। বাগেরহাটের গহিন ঘন ছায়াময় বাগানে এরা আজও আছে বহাল তবিয়তে। জোড়ায় জোড়ায় চলে। উদাসী বাউল স্বভাব যেন এদের—সতর্কতা কম। আপন জগতেই মগ্ন থাকে। গ্রামবাংলার বসতবাড়ির পর্দা-বেড়ায় ঝোলানো শুকনো সুপারি পাতা, নারকেল-সুপারি-খেজুর ও তালের ঝুলে পড়া জ্যান্ত বা মরা পাতা এদের প্রিয় খাদ্য অন্বেষণের স্থান। অতএব, ঝোপঝাড়ে থাকা সোনাব্যাঙেরা লাফ দিয়ে উঠে মুখে পুরতে পারে, বনবিড়াল-বেজিরা দিতে পারে থাবা, দুষ্টু ছেলেপুলেরা চুপিসারে এগিয়ে গিয়ে ধরতে চাইতে পারে পাখিটিকে। এ রকম কোনো একটি কারণেই হয়তো ছবির পাখিটির লেজ খোয়া গেছে। অবশ্য লেজ আবার গজায়।

নিরীহ-শান্ত ও আনমনা-বোকাসোকা ধরনের পাখিটির নাম ‘ভ্যাদাটুনি’। ‘ভ্যাদা’ অর্থে বৃহত্তর খুলনায় বোঝায় মার খেয়েও যে প্রতিবাদ করতে পারে না বা ভয় পায়। বোধবুদ্ধিও কম। এই পাখিটার অন্য নাম ‘মোটা ঠোঁট ছাতারে’। ইংরেজি নাম Abbott’s Babbler। বৈজ্ঞানিক নাম Malacocincla abbotti। দৈর্ঘ্য ১৭ সেন্টিমিটার, ওজন ৩০ গ্রাম।

এদের মাথার তালু-পিঠ-লেজ ও পাখার উপরিভাগও জলপাই-বাদামি। গলা ধূসর-সাদাটে এবং চোখের ওপর দিয়ে একটি অস্পষ্ট সাদাটে-ধূসর রেখা বয়ে গেছে। বুকের কিছু অংশ ও তলপেট সাদাটে। পা ধূসর-গোলাপি। ঠোঁট ধূসর।

আলসে স্বভাবের ভ্যাদাটুনিরা অনেক সময় আশ্চর্য-অবিশ্বাস্য জায়গায় বোকার মতো বাসা করে। আনারসগাছের মাথায়, ঝুলে পড়া শুকনো সুপারি পাতার ভেতরে, বাঁশের কঞ্চির গোড়াসহ অন্যান্য যুৎসই স্থানে বাসা করে, তাতে ডিম পাড়ে দুই থেকে চারটি। ডিম গোলাপি। ডিম ফুটে ছানা হয় ১৩ থেকে ১৭ দিনে। বহুবার আমি এদের বাসা দেখেছি, প্রতিটি বাসার তলদেশেই দেখেছি তিন-চারটি কালো সরু বুনো লতা। নাম জানতে পারিনি। জানি না, ওই লতায় ডিম-ছানাদের জন্য কোনো প্রতিরোধী দ্রব্যগুণ আছে কি না!

এদের বাসায় কখনো কখনো কোকিলের মতো গোপনে ডিম পেড়ে যায় কোকিলের জাতভাই ‘বেগুনি কোকিল’ (Violet Cuckoo)। আকারে এটি ভ্যাদাটুনিরই সমান। সারা বাংলাদেশেরই বন-বাগান ও ঝোপঝাড় ছায়াছন্ন এলাকায় ভ্যাদাটুনিদের দেখা যায়। বাগেরহাটে এরা সুলভ পাখি। উঠান-বাড়ির কিনারের লাউ-শিমের মাচা বা অন্য গাছেও নির্ভয়ে চরে বেড়ায়।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
পালাসের গাঙচিল
« Reply #11 on: July 06, 2017, 11:23:53 AM »
ইংরেজি নাম Pallas’s Gull বা Greater Black-headed Gull। Laridae গোত্রের এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Larus ichthyaetus।

গাঙচিলদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম পালাসের গাঙচিলের দৈর্ঘ্য ৬০-৭২ সেন্টিমিটার, প্রসারিত ডানা ১৫৫-১৭০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ০.৯- ২.০ কেজি। প্রজননকালীন প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, গলাসহ মুখমণ্ডল ভেলভেট কালো। পিঠের পালক ধূসর ও বুক-পেটের নিচের পালক ধবধবে সাদা। ডানার বাইরের কয়েকটি পালকের আগা কালো, এ ছাড়া বাকি সব পালক সাদা। লম্বা ও সরু ঠোঁটটি কমলা-হলুদ ও আগা গাঢ় রঙের। চোখের ওপরে ও নিচে অর্ধচন্দ্রাকৃতির পট্টি রয়েছে। প্রজননহীন পাখির মুখমণ্ডল সাদা; তবে চোখের চারদিক, কান-ঢাকনি ও মাথার পেছনে বাদামি ছিটেফোঁটা থাকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের ওপরটা গাঢ় বাদামি, নিচটা ফ্যাকাশে ও ঠোঁট ধূসরাভ।

এরা সচরাচর দৃশ্যমান পরিযায়ী পাখি। উপকূলীয় এলাকা, জাহাজ বা লঞ্চঘাট, নদী ও হ্রদে বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুম ছাড়া অন্য সময় সচরাচর একাকী বা দু-তিনটিতে একসঙ্গে থকে। তবে মাছের আধিক্য থাকলে একসঙ্গে বহু পাখি দেখা যায়। মাছ মূল খাদ্য হলেও প্রয়োজনে কাঁকড়া, চিংড়িজাতীয় প্রাণী, কীটপতঙ্গ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ, পাখি, ডিম ইত্যাদিও খেতে পারে। পানির সামান্য ওপরে উড়ে উড়ে খাদ্য সংগ্রহ করে। শীতে সচরাচর নীরব থাকে, কিন্তু মাঝে মাঝে উচ্চকণ্ঠে ‘ক্রি-অ্যাব ক্রি-অ্যাব ক্রি-অ্যাব’ স্বরে ডাকে।

গ্রীষ্মে মধ্য এশিয়া, উত্তর-পশ্চিম মঙ্গোলিয়া, চীনের উত্তরাঞ্চল ও তিব্বতে প্রজনন করে। সচরাচর মাটির ওপর অনেক পাখি একসঙ্গে কলোনি করে থাকে। শুকনো ঘাস-লতা ও দেহের ঝরা পালক দিয়ে মাটিতে বাসা বানায়। স্ত্রী দুই থেকে চারটি ঘিয়ে রঙের ডিম পাড়ে, যার ওপর থাকে কালো, খয়েরি বা ধূসর ছিটছোপ। ডিম ফোটে ২৫ দিনে। সদ্য ফোটা বাচ্চার কোমল পালকের রং ঘিয়ে-হলুদ বা রুপালি-সাদা। বাচ্চারা প্রায় পাঁচ দিনে বাসা ছাড়ে এবং চার-পাঁচ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
রামগাংরা
« Reply #12 on: July 10, 2017, 05:47:53 PM »
রামগাংরা মারকুটে-ঝগড়াটে অতি চঞ্চল ও কোলাহলপ্রিয় পাখি। চালচলনে আছে একটা বেপরোয়াভাব। ডাকাডাকি করে সর্বক্ষণ জানান দেয় নিজের উপস্থিতি। পোকামাকড়ের বা প্রিয় ফলের নাগাল পেতে এরা গাছের সরু ডাল-পাতার শীর্ষে ঝুলে-দুলে প্রায়ই অ্যাক্রোবেটিক শো প্রদর্শনে খুবই পারঙ্গম। সাহসী পাখি বলে নিজের চেয়ে বড় পাখির দিকেও ধেয়ে যায় এরা। এই পাখিটিকে দেখলে হঠাৎ করে পুরুষ

চড়ুই বলেও মনে হতে পারে। তাই বোধ হয় এদের আরেক নাম ‘গাইছা চড়ুই’, তিতপোখ নামেও পরিচিত।

মূল খাদ্য গাছের ডাল-পাতা-বাকলের পোকামাকড়। পলেস্তারা খসা দালানের ইটের ফাঁকফোকরেও তল্লাশি চালায় পোকামাকড়ের খোঁজে। আখখেত, পাটখেত ও বেগুনখেতের পোকামাকড়ও খায়। খায় সফেদা, পেঁপে, আতাসহ আরও কিছু ছোট-বড় ফল।

দলে চলে, জোড়ায় চলে, চলে একাকীও। পাখিটির মাথার তালু ও গলা কুচকুচে কালো, চোখের নিচ থেকে প্রায় গলা পর্যন্ত ধবধবে সাদা। বুকের দুপাশ সাদা, গলার কালোটা একেবারে বুকের মধ্যিখান দিয়ে রেখার মতো বয়ে গিয়ে শেষ হয়েছে তলপেটে। পিঠ ও লেজের আগার উপরিভাগ ঘন-ধূসর, ডানার উপরিভাগে সাদা সাদা সরু রেখা আছে কয়েকটা। ছোট ঠোঁটটির রং কালো। ধূসর-কালচে পা। পুরুষ ও মেয়ে পাখি দেখতে একই রকম।

এরা বাসা করে সুপারিগাছ, খেজুরগাছ, মোটা বাঁশগাছের ছোট মুখওয়ালা কোটর-ফোকরে। দরদালানের দেয়ালের ফোকরেও বাসা করে থাকে। স্টিলের খাম্বার বা পিলারের ফোকর থাকলে সেখানেও বাসা করতে পারে এরা।

বাসা সাজায় শুকনো সুপারির খোসা, আখের ছোবড়া, নারকেলের খোসা, শুকনো ঘাস ইত্যাদি দিয়ে। দুজনে মিলে বাসা সাজায়। খোঁড়লের গভীরতা বেশি হলে ওপরমুখো হয়ে পা আঁকড়ে বেয়ে বেয়ে তলায় নামে, ওঠেও বেয়ে বেয়ে একই কায়দায়। আমি ৫ ফুট থেকে ৯ ফুট গভীরতায় এদের বাসা সাজাতে দেখেছি। ছানাদের খাওয়াতে গিয়ে এরা পেরেশান হয়ে যায়। ডিম পাড়ে ৩ থেকে ৭টি। তা দেয় পালা করে। বউ যখন তায়ে থাকে, তখন পুরুষটি পরম মমতায় খাবার এনে বউটিকে খাওয়ায়।

রামগাংরার ইংরেজি নাম Great Tit। বৈজ্ঞানিক নাম Parus major। দৈর্ঘ্য ও ওজন যথাক্রমে ১৩ সেমি ও ১৩ গ্রাম। এরা আমাদের আবাসিক পাখি। ঢাকা শহরসহ সারা দেশেই দেখা মেলে এদের।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline hussainuzaman

  • Newbie
  • *
  • Posts: 23
  • পরিবর্তন আসবেই!
    • View Profile
    • Website
Re: Birds of Bangladesh
« Reply #13 on: July 11, 2017, 08:41:21 AM »
চমৎকার তথ্যবহুল লেখা (সূত্র: প্রথম আলো)। উইকিপিডিয়াতে এই পাখির উপর অনেক ছবিসহ নিবন্ধ আছে; কিন্তু ইংরেজি, অসমীয়া সহ অনেক ভাষাতে থাকলেও বাংলা ভাষাতে নাই।
Miah M. Hussainuzzaman, Dept. of CE.
ব্লগ: ১। পরিবেশ প্রকৌশলীর প্যাচাল, ২। খিচুড়ী ব্লগ

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
তামাটে মুনিয়া
« Reply #14 on: July 13, 2017, 04:47:49 PM »
এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি তামাটে মুনিয়া। কালোমাথা মুনিয়া নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম Chestnut Munia, Indian Black-headed Munia বা Eastern Black-headed Munia. Estrildae পরিবারের সদস্য তামাটে মুনিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম lonchura atricapilla. আগে এরা Lonchura malacca বা তিনরঙা মুনিয়ার (Tricolored Munia) একটি উপপ্রজাতি হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু ২০০০ সালে এদের তামাটে বা কালোমাথা মুনিয়া ও তিনরঙা বা খয়েরি মুনিয়া নামে দুটি পৃথক প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

তামাটে মুনিয়া ছোট আকারের পাখি। লম্বায় প্রায় ১১ সেন্টিমিটার ও ওজনে মাত্র ৯ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, ঘাড় ও গলা চকচকে কালো। ডানা, পিঠ, বুক, পেট ও লেজ গাঢ় তামাটে। কোনো কোনো বংশধারার (Race) পাখির পেট ও লেজের তলা কালো এবং লেজের পালকে হলদে বা কমলার আভা দেখা যায়। শক্তপোক্ত ত্রিকোণাকার ঠোঁট হালকা নীলচে-ধূসর। পা, আঙুল ও নখ কালো। গাঢ় রঙের চোখ। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের পালক অনুজ্জ্বল দারুচিনি-বাদামি ও দেখতে হুবহু তিলা মুনিয়ার বাচ্চার মতো। মাথা-ঘাড়-গলায় কালো রং নেই। ঠোঁট গাঢ় নীলচে-ধূসর।

তামাটে মুনিয়া দীর্ঘ ঘাসবন, ধান‌খেত, জলাভূমি, আবাদি জমি ও বনের ভেতরের খোলা জায়গায় বা বনের কিনারায় বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় বা ছোট দলে দেখা যায়। তবে তিনরঙা মুনিয়ার সঙ্গে মিশ্র ঝাঁকেও দেখা যেতে পারে। মিশ্র ঝাঁকে থাকলে ঝাঁকের চার-পাঁচ ভাগের এক ভাগ মাত্র হয় তামাটে মুনিয়া। অন্যান্য মুনিয়ার মতো বীজজাতীয় খাদ্য, যেমন ঘাসবিচি ও ধান-কাউন এদের প্রধান খাদ্য। মাটিতে খুঁটে খুঁটে বা ঘাস-ধান-কাউনের ছড়ায় উঠে খাবার খায়। শুধু পুরুষই ডাকে। ‘পি পি’ বা ‘পিট পিট’ শব্দে ডাকতে থাকে।

মে-নভেম্বর প্রজননকাল। মাটি থেকে ১-২ মিটার উচ্চতায় নলখাগড়া, ঝোপ, লম্বা ঘাস বা তাল-খেজুরগাছে শুকনো ঘাস ও চিকন কাঠিকুটি দিয়ে ডিম্বাকার বাসা বানায়। ডিম হয় ৫-৬টি। ডিমের রং সাদা। বাচ্চা ফুটতে ১২-১৫ দিন সময় লাগে। বাচ্চারা উড়তে শেখে প্রায় দুই সপ্তাহে। এরপর আরও ১-৩ সপ্তাহ বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসায় থাকে। দুর্লভ এই মুনিয়াগুলো এ দেশের প্রকৃতিতে অনন্তকাল বেঁচে থাকুক।
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd