আমরা যারা ভোজনরসিক, তাদের অনেকেই খাওয়ার টেবিলে বসে ভাবি, আজ না হয় পাতে একটু লবণ নিয়েই দেখি না, কী আর হবে! পাতে লবণ নেওয়া ঠিক কি না, এটা অনেকেরই ভাবনার বিষয়। আসুন, দেখি পাতে লবণ আসলেই কতটা বিপদের।
১. লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। এতে সোডিয়াম থাকে। যাঁদের রক্তচাপ বেশি, তাঁদের কম সোডিয়াম বা লবণ খেতে বলা হয়। কারণ সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ায়। কিন্তু এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য যে খুব কম লবণ খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় এটা দেখা গেছে।
২. ১ লাখ ৩৩ হাজার ১১৮ ব্যক্তির ওপর চার বছর ধরে পরিচালিত এক পর্যবেক্ষণমূলক জরিপের ফলাফল দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় বেরিয়েছে। পরীক্ষায় নিয়মিত রক্তচাপ ও ইউরিনে লবণের পরিমাণ দেখা হয়। এঁদের মধ্যে ৬৯ হাজার ৫৫৯ জন ছিলেন উচ্চ রক্তচাপমুক্ত। এই গ্রুপের যাঁরা দিনে সাত গ্রামেরও বেশি সোডিয়াম, অর্থাৎ প্রায় তিন চা-চামচের বেশি লবণ খেয়েছেন, তাঁদের অসুখ-বিসুখ বা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়েনি। কিন্তু যাঁরা তিন গ্রামেরও কম সোডিয়াম খেয়েছেন, তাঁদের মৃত্যুঝুঁকি বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২৬ শতাংশ বেড়েছে (যাঁরা দিনে চার-পাঁচ গ্রাম সোডিয়াম খেয়েছেন তাঁদের তুলনায়)।
৩. যাঁদের রক্তচাপ বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রেও হিসাবটা প্রায় একই ধরনের। যাঁরা দিনে সাত গ্রামের বেশি সোডিয়াম খেয়েছেন, তাঁদের ঝুঁকি বেড়েছে ২৩ শতাংশ, কিন্তু যাঁরা খেয়েছেন দিনে তিন গ্রামেরও কম সোডিয়াম, তাঁদের ঝুঁকি বেড়েছে ৩৪ শতাংশ (যাঁরা দিনে চার-পাঁচ গ্রাম সোডিয়াম খেয়েছেন তাঁদের তুলনায়)।
৪. পরীক্ষার ফলাফলে বলা হয়েছে, কম লবণ রক্তচাপ কমায় বটে, কিন্তু খুব কম খেলে আবার ঝুঁকি বাড়ে।
৫. বতর্মান নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, বেশির ভাগ মানুষ দিনে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৩ গ্রাম সোডিয়াম খেতে পারেন; যা এক চা-চামচ লবণে রয়েছে। বয়স বেশি হলে আরেকটু কম লবণ খেতে হবে।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ২৫ মে ২০১৬