The interview published in
The Daily Kaler Kantho on 4th January 2010, of Ayesha Sultana Shampa ( Super Hero Super Heroine-ntv), one of our students of ETE Department where she highlighted Daffodil International University.
ক্যাডেট কলেজের কড়া নিয়ম ভালো লাগত না তাঁর। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবেন। তবে সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে জীবনটাই অনেক বদলে গেছে আয়েশা সুলতানা শম্পার
লেখাপড়ার শুরু কিভাবে?
আমি ছোটবেলা থেকেই দুষ্টু প্রকৃতির। স্কুলে ভর্তি নিয়ে মা-বাবার টেনশনের শেষ ছিল না। উপায়ন্তর না দেখে ভর্তি করানো হলো ময়মনসিংহের সামসাদ হাসনাইন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। স্কুলটি ছিল আম্মুর নামে। তিনি এখানে ক্লাসও নিতেন। পরীক্ষায় ভালো করলেই সবাই বলত, 'মায়ের স্কুল, শম্পা বেশি নম্বর পাবে না তো কে পাবে!' অথচ নিজের মেয়ে বলে আম্মু কখনোই আমাকে এক বিন্দু ছাড় দেননি। প্রাইমারি শেষে ক্লাস সিঙ্ েচলে আসি প্রি-ক্যাডেট হাই স্কুলে।
আপনি তো ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজের ছাত্রী...
ভর্তির জন্য কী যুদ্ধটাই না করতে হয়েছে! ভর্তির পর মানিয়ে নিতে না পেরে খুব কান্নাকাটি করতাম। এত কড়াকড়ি কার ভালো লাগে! লাল ইটের 'শান্তি হাউসে' থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম।
তাহলে তো স্কুললাইফ মোটেও এনজয় করেননি?
মোটেই না! কয়েক মাস যেতেই আমার গোবেচারা ভাবের আড়ালে দুষ্টু চেহারাটা ধরা পড়ল। সবার অঙ্গভঙ্গি নকল করে বন্ধুদের দেখাতাম। একদিন ক্লাস টিচারের কাছে ধরা পড়ে গেলাম।
স্কুলের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন?
ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির অভ্যাস। কলেজের দেয়ালিকায় নিয়মিত লিখতাম। কলেজের সেরা কবির তকমাটাও আমার ভাগ্যেই জুটেছিল। বন্ধুদের সঙ্গে নাচতে নাচতে শিখেছিলাম নাচ। মঞ্চে প্রথম অভিনয় 'নীলদর্পণ' নাটকে। আমি করেছিলাম আবু মোল্লার চরিত্র।
বন্ধুদের সঙ্গে কোনো ট্যুরে গিয়েছিলেন?
এসএসসির পর ট্যুরে গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কঙ্বাজার। সেই ট্যুরে নেভাল একাডেমী ঘুরে এসে নৌবাহিনীতে যোগদানের আশা চিরতরে মিটে গেছে আমাদের।
ক্লাসের কোনো মজার ঘটনা?
রসায়ন ল্যাবে প্রায়ই ভুল করে একটার সঙ্গে আরেকটা রাসায়নিক মিশিয়ে ফেলতাম। ম্যাডামের কী বকাটাই না খেতাম! তবে আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল বড় ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।
ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন কেন?
বুয়েটে চান্স না পেয়ে খুব মন খারাপ ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়নে চান্স পেয়েও পড়িনি। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম বলে কারো কথা না শুনে ২০০৮-এ ডেফোডিলে ইলেকট্রনিঙ্ অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম। এখন পড়ছি নবম সেমিস্টারে।
ক্যাম্পাস লাইফের প্রথম দিনগুলো কেমন ছিল?
প্রথম দিনটি ছিল খুব বিরক্তিকর। পরিচিত কাউকে দেখতে পাইনি, যেচে এসে কেউ কথাও বলেনি। প্রথম কয়েক মাস মেসে ছিলাম। নিজে রান্না করে খেতে হতো। অনেক কষ্টের ছিল দিনগুলো! তবে মজার ব্যাপার হলো এসএসসি, এইচএসসি দুটোতেই গোল্ডেন জিপিএ-৫ থাকায় বিনা বেতনে পড়ছি।
এনটিভির 'সুপার হিরো সুপার হিরোইন'-এ নাম লেখালেন কবে?
থার্ড সেমিস্টারে আম্মু নাম লিখিয়েছিলেন। সাত সকালে উঠেই ক্যাম্পে ছুটতে হতো। সবাই ভাবত, এই সাত সকালে সেজেগুজে মেয়েটা যাচ্ছে কোথায়! অনেক পরে বন্ধুরা ব্যাপারটি জানতে পারে। এ প্রতিযোগিতার কারণে আমাকে একটি সেমিস্টার ড্রপ দিতে হয়েছে। আমি চতুর্থ হয়েছিলাম।
তারকাখ্যাতির কোনো বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন?
সুবিধা না ছাই! পরীক্ষার হলে দেখাদেখি করতে পারি না। বন্ধুদের নিয়ে জমিয়ে আড্ডা দিতে পারি না।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা ভালো লাগে?
'সুপার হিরো সুপার হিরোইন' প্রতিযোগিতার আগে রেজাল্ট অনেক ভালো ছিল। প্রতিযোগিতার পর আমার জীবনটাই পাল্টে গেছে। ব্যস্ততার কারণে ঠিকমতো ক্লাসও করতে পারি না। অনেক দিন পর পর ক্যাম্পাসে গেলে বন্ধুরা বলে, 'কি রে বেড়াতে এসেছিস?' সত্যি কথা বলতে কি, আমার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নটা মারা গেছে।
তাহলে কী পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্ছেন?
পড়াশোনার কোনো বিকল্প আছে? অনার্স শেষ করে মিডিয়া স্টাডিজে পড়াশোনা করব। চলচ্চিত্রে কাজ করতে গেলে পড়াশোনা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার প্রথম ছবি 'মাটির পিঞ্জিরা' দেখার পর বন্ধুদের অনুভূতি কী ছিল?
সবাই-ই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছে। বন্ধুদের অনেকেই আমাকে বাংলা সিনেমার নায়িকা বলে খেপায়।
- সাক্ষাৎকার : অনিরুদ্ধ জয় ছবি : মোহাম্মদ আসাদ
link:
http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Travel&pub_no=390&cat_id=3&menu_id=74&news_type_id=1&index=2&archiev=yes&arch_date=04-01-2011