মেজাজ খিটখিটে, মন খারাপ ভাব, বিরক্তি। হঠাৎ খিদে পাওয়া, ক্লান্তি, মাথা ব্যথা। পেটে অস্বস্তি। ডায়ারিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। কখনো স্তনে সামান্য ব্যথা। মাসে বিশেষ কয়েকটি দিন কোনো কোনো নারীর এ রকম খারাপ যায়। আবার কয়েক দিন পরই ঠিকঠাক। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর আরেক নাম প্রি মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম বা মাসিক পূর্ববর্তী উপসর্গসমূহ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়স্ক ৮৫ শতাংশ নারীই এই সমস্যায় ভোগেন। অথচ প্রায়ই বিষয়টা তাঁরা খেয়াল করেন না।
মাসিক শুরু হওয়ার দিনটির ৫ থেকে ১০ দিন আগে থেকে শুরু হতে পারে এসব উপসর্গ। এর জন্য দায়ী করা হয় মাসিকের আগে-পরে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের ওঠানামা আর সেরোটোনিন নামের রাসায়নিকের নিঃসরণকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই হরমোনের ওঠানামা সাধারণ কিছু উপসর্গ তৈরি করা এবং কয়েকটা দিনকে অসহ্য মনে হওয়া ছাড়া তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না শরীর ও মনে। কিন্তু ২০ থেকে ৩২ শতাংশ নারীর উপসর্গের মাত্রা এত বেশি হতে পারে, যা তাঁকে শারীরিক-মানসিকভাবে পর্যুদস্ত করে ফেলে। ৩ থেকে ৮ শতাংশ নারীর হতে পারে প্রি মেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার, যাতে তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হতে পারেন।
প্রি মেনস্ট্রুয়াল উপসর্গগুলোকে পুরোপুরি বিদায় করা যায় না। তবে চাইলে এবং সচেতন থাকলে অনেকখানি কমানো যায়। সে জন্য কয়েকটি পরামর্শ:
* এ সময় প্রচুর পানি পান করতে হবে। খেতে হবে অনেক ফলমূল। যথেষ্ট অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে তাজা ফলে, যা উপসর্গ কমায়। চা, কফি, অতিরিক্ত লবণ সমস্যা বাড়াবে, কেননা এগুলো সেরোটোনিন জাতীয় রাসায়নিকের নিঃসরণ আরও বাড়ায়।
* এ সময় ক্লান্তি বা অবসাদ ঠেকানোর জন্য দুধ ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে বেশি। ফলিক অ্যাসিড, বি ৬, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম খেতে বলা হয়। কয়েক দিনের জন্য ফলিক অ্যাসিড বড়িও খাওয়া যেতে পারে।
* স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা কমাতে হবে। রাতে ভালো করে ঘুমাতে হবে। রাত জাগলে উপসর্গ বাড়ে। বই পড়া বা গান শোনার মতো কাজ মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে। অন্তত ৩০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম বা ইয়োগা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করবে। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যয়ামও করা যায়।