কৃত্রিম ধমনীও বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা, বাড়বে শরীরের সঙ্গেই!

Author Topic: কৃত্রিম ধমনীও বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা, বাড়বে শরীরের সঙ্গেই!  (Read 1263 times)

Offline smsirajul

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 55
  • Test
    • View Profile
অতটুকু শিশু, তার শরীরে হয়তো আর বার বার ছুরি, কাঁচি চালাতে হবে না! একটা শিশুকে হয়তো আর বিঁধতে হবে না অস্ত্রোপচারের হাজারো ধারালো ‘অস্ত্রে’! ধমনী দিয়ে রক্ত বয়ে যাওয়ার সময় বাধা পাচ্ছে বলে যাঁদের হার্ট অ্যাটাক হয়, তাঁদেরও বোধহয় দুশ্চিন্তার দিন ফুরলো!

আর দু’-তিন বছরের মধ্যেই হয়তো বাজারে আসতে চলেছে কৃত্রিম ধমনী। আমার, আপনার শরীরে যে কৃত্রিম ধমনীর মধ্যে দিয়ে কোনও বাধা, বিপত্তি ছাড়াই তরতরিয়ে বইতে পারবে রক্তস্রোত। আর যেটা আরও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য তা হল, একটা ছোট্ট টিউবের মতো কৃত্রিম ধমনী আমার, আপনার শরীরে বসিয়ে দেওয়া হলে, তা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাড়তে পারবে গায়ে-গতরে। একবারে প্রাকৃতিক নিয়মেই। বাইরে থেকে ‘গায়ের জোর’ খাটাতে হবে না। নিতে হবে না কোনও কৃত্রিম উপায়। যার শরীরে বসানো হল ওই ছোট্ট টিউবের মতো ধমনী, তার শরীরের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোষ, কলাগুলি যখন, যতটা সময়ের সঙ্গে বাড়ে, সেই গতিতেই সেগুলি শরীরের ভেতরে বসানো কৃত্রিম ধমনীকে ঠেলেঠুলে বাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারবে, দিতে পারবে তার পূর্ণাঙ্গ রূপ।
একেবারে হালে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দেওয়া এই আবিষ্কারটি করেছে আমেরিকার মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বায়োমেডিক্যাল ই়ঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট ট্রাঙ্কুইল্লোর নেতৃত্বে একটি গবেষকদল। যে দলে রয়েছেন এক অনাবাসী ভারতীয় বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অনিতা কুলকার্নিও। একেবারে কচি ভেড়ার শরীরে ওই কৃত্রিম ধমনী বসিয়ে দেখা গিয়েছে তা ওই ভেড়ার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরের কোষ, কলাগুলি যেমন একটু একটু করে বেড়েছে, তেমনই তা ভেড়ার শরীরে বসানো কৃত্রিম ধমনীটিকে একটু একটু করে বাড়িয়েছে, আড়ে ও বহরে। শরীরের ভেতরে বসানো কোনও কৃত্রিম অঙ্গের এই ভাবে শরীরেই আপনাআপনি বেড়ে ওঠার ঘটনা রীতিমতো অভিনব। গত সেপ্টেম্বরে গবেষণাপত্রটি ছাপা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার-কমিউনিকেশন্স’-এ। সাড়াজাগানো ওই গবেষণাপত্রটির শিরোনাম- ‘টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং অফ আসেলুলার ভাসকুলার গ্র্যাফ্টস কেপাব্‌ল অফ সোম্যাটিক গ্রোথ ইন ইয়ং ল্যাম্বস’।
আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অনিতা কুলকার্নির কথায়, ‘‘আমরা কচি ভেড়ার গায়ের চামড়ার কোষের সঙ্গে জিল্যাটিনের মতো একটা রাসায়নিক পদার্থ (ফাইব্রিন) মিশিয়ে ওই কৃত্রিম ধমনীর টিউবটাকে বানিয়েছি। তার পর টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে কচি ভেড়ার শরীরের কোষ, কলাগুলিকে একটু একটু করে গায়ে-গতরে বাড়িয়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর পদার্থ (নিউট্রিয়েন্টস) আমরা বায়ো-রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে ওই টিউবে ঢুকিয়েছি। তার পর ওই টিউবটিকে একটি বিশেষ ধরনের ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে তার গায়ে লেগে থাকা ভেড়ার চামড়ার কোষগুলিকে সরিয়ে দিয়েছি। কারণ, ওই কোষগুলির স্বাভাবিক বাড়-বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম ধমনীতে রক্তস্রোত বাধা পেতে পারে। তা আটকে যেতে পারে। বায়ো-রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে আদতে দু’টি কাজ করেছি আমরা। প্রথমত, কোষ, কলাগুলিকে বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর পদার্থ ঢুকিয়েছি। দ্বিতীয়ত, টিউবটাকে শক্তপোক্ত করে তোলার জন্য ওই বায়ো-রিঅ্যাক্টর দিয়ে খানিকটা যেন ‘ব্যায়াম’ করিয়েছি আমরা। যাতে শরীরের মধ্যে রক্তস্রোতের জন্য তা ফেটে না যায়, সে জন্য স্বাভাবিক ধমনীর চেয়ে কৃত্রিম ধমনীকে করা হয়েছে দ্বিগুণ শক্তিশালী। মানুষের শরীরে বসিয়ে তার কার্যকারিতা প্রমাণের পরীক্ষানিরীক্ষাও শুরু হবে খুব শিগগিরই। তবে ভেড়ার ওপর যে পরীক্ষা সফল হয়েছে, মানুষের ক্ষেত্রে তা ব্যর্থ হওয়ার কোনও বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে বলে আমাদের মনে হয় না।’’
মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বায়োমেডিক্যাল ই়ঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মূল গবেষক রবার্ট ট্রাঙ্কুইল্লো ই মেলে আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ভেড়ার শরীরে ওই কৃত্রিম ধমনী বসানোর পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই দেখা গিয়েছে, ওই ভেড়ার শরীরের কোষগুলি নিজেরাই বেড়ে উঠে কৃত্রিম ধমনীটিকে বাঁকিয়ে দিয়েছে, কোনও একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের অভিমুখী করে তোলার জন্য। এও দেখা গিয়েছে, একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত কোষগুলি বেড়ে উঠে ওই কৃত্রিম ধমনীটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে পেরেছে
Md. Sirajul Islam
Assistant Coordination Officer
Department of Business Administration
Daffodil International University
Uttara Campus