আঙুর রাখুন শিশুর নাগালের বাইরে

Author Topic: আঙুর রাখুন শিশুর নাগালের বাইরে  (Read 1321 times)

Offline taslima

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 515
    • View Profile
অক্ষত আঙুর শ্বাসরোধ করে শিশুর মৃত্যু ঘটায়। চিকিৎসকেরা এ ব্যাপারে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মা–বাবা ও অভিভাবকদের সতর্ক ও সচেতন হতে বলেছেন। এ নিয়ে প্রভাবশালী চিকিৎসা সাময়িকী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজি) ২০ ডিসেম্বর একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী অনেক শিশুর শ্বাসনালিতে খাবার বা ছোট বস্তু ঢুকে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়। ১৯৯৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ১০৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। এদের অধিকাংশের বয়স ছিল তিন বছরের নিচে। গলায় খাবার বা অন্য কিছু আটকে মৃত্যুঝুঁকি এদের বেশি।
‘দ্য চোকিং হ্যাজার্ড অব গ্রেপস: এ প্লিয়া ফর অ্যাওয়ারনেস’ শিরোনামের প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এই বয়সের শিশুদের দাঁত অপুষ্ট থাকে, দাঁতে শক্তি কম থাকে। তারা খাদ্য ভালো চিবাতে পারে না। এদের খাবার গ্রহণ ও শ্বাস নেওয়াতে সঠিক সমন্বয় হয় না। এরা অনেক ক্ষেত্রে পুরো ঢোঁক গিলতে পারে না। খাওয়ার সময় এরা অমনোযোগী থাকে। ফলে খাবার শ্বাসনালিতে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, নিবন্ধটি সচেতনতা বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বাদাম, জাম, পপকর্ন, কলমের মাথা, কাঁঠালের বিচি, বরই, বরইয়ের আঁটি, পেরেক, পয়সা—এসব শিশুদের শ্বাসনালিতে আটকে যায়। ইউরোপ-আমেরিকায় আঙুর বেশি খাওয়া হয় বলে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে আঙুরের বিষয় সামনে আনা হয়েছে।’
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের নিবন্ধে ঘটনার শিকার তিনটি শিশুর কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। শিশু তিনটিকে রয়্যাল এবারডিন চিলড্রেনস হাসপাতালের শিশু জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছিল। এদের দুজন মারা যায়। প্রথম শিশুটির বয়স ছিল পাঁচ বছর। স্কুল শেষে আস্ত আঙুর খাওয়ার সময় তার শ্বাসনালিতে তা আটকে গিয়েছিল। আঙুর সরিয়ে ফেলার জন্য দ্রুত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আঙুর সরানো যায়নি। এরই মধ্যে শিশুটির হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে প্যারামেডিক আঙুরটি বের করেন। তবে শিশুটি মারা যায়।
দ্বিতীয় শিশুটির বয়স ছিল ১৭ মাস। সে বাড়িতে স্যান্ডউইচের সঙ্গে ফল খেতে খেতে একটি আঙুর মুখে দেয়। আঙুরটি তার শ্বাসনালিতে আটকে যায়। আঙুরটি বের করার চেষ্টা হয়। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা সফল হননি। জরুরি সেবার জন্য হাসপাতালে ফোন করা হয়। প্যারামেডিকের দ্বারা একসময় আঙুরটি বের করা সম্ভব হয়। কিন্তু ততক্ষণে শিশুটি মারা যায়।
তৃতীয় শিশুটির বয়স ছিল দুই বছর। সে পার্কে বসে আঙুর খাচ্ছিল। তার শ্বাসনালিতে আঙুর আটকে যায়। তখন অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। প্যারামেডিক সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারেন কী করতে হবে এবং সফলভাবে শ্বাসনালি পরিষ্কার করে ফেলেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই শিশুটিকে দুটো অস্ত্রোপচার করা হয়। এবং হাসপাতালে তার মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হয়। পুরোপুরি সুস্থ করতে তাকে পাঁচ দিন নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে রাখা হয়।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, আঙুর শিশুর শ্বাসনালির চেয়ে বড়। আঙুর বাদাম বা অন্য শক্ত বস্তুর মতো না। আঙুর শ্বাসনালিতে ঢুকে শুধু যে শ্বাসনালি একেবারে বন্ধ করে তা না, একে বের করা খুব কঠিন। বিশেষ যন্ত্র ছাড়া বের করা যায় না।
তাতে আরও বলা হয়েছে, শিশুদের খাওয়ার সময় নজর রাখার ব্যাপারে সাধারণ সচেতনতা আছে। ছোট শক্ত বস্তু এবং কিছু খাবার—যেমন বাদাম—মুখে দিলেই তা দ্রুত বের করে আনার চেষ্টা হয়। কিন্তু আঙুরের ব্যাপারে সেই সচেতনতা নেই।
Taslima Akter
Sr. Accounts Officer (F&A)
Daffodil International University
Email: taslima_diu@daffodilvarsity.edu.bd