শিরোনাম দেখে আপনি হয়তো ভাবছেন আমরা ব্রোকলি বা পালং শাকের কথা বলছি। কিন্তু না রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে বড় যোদ্ধা হচ্ছে বাদাম। হ্যাঁ মুখরোচক এই স্ন্যাক্সটিই আপনার জীবন বাঁচাতে পারে।
বিএমসি মেডিসিন নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত নতুন এই গবেষণায় জানা যায় যে, যারা প্রতিদিন অন্তত একমুঠো বাদাম খান তাদের হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মত মারাত্মক রোগ এবং অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে। নরওয়ের অসলো এর বিজরকনেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের পোষ্ট ডক্টোরাল রিসার্চ ফেলো ও গবেষণার সহ লেখক ড্যাগফিন অনি বলেন, ‘বাদামে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ফাইবার, পলিআনস্যচুরেটেড এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এর পাশাপাশি ভিটামিন এবং মিনারেলও থাকে’। তিনি বলেন, ‘আখরোটের মত কিছু বাদাম ও সূর্যমুখীর বীজে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যাল থাকে’।
গবেষণাটি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ এবং নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজির দ্বারা পরিচালিত হয়। তারা বাদাম এবং রোগের ঝুঁকির সম্পর্ক নিয়ে গবেষণার জন্য ২৯ টি গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেন যাতে সারাবিশ্বের ৮,১৫,০০০ জনের বেশি লোক অংশগ্রহণ করে। ফলাফলে দেখানো হয় যে, দিনে গড়ে একমুঠো বা ২০ গ্রাম বাদাম খেলে করোনারি হার্ট ডিজিজ হওয়ার ঝুকি ৩০ শতাংশ, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৪০ শতাংশের কাছাকাছি, ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৫ শতাংশ এবং অন্য কারণে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ২২ শতাংশ কমে।
যদিও গবেষণাটিতে বাদামের কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির সাথে ক্যান্সার বা অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমার সরাসরি সম্পর্ক আছে বলে দেখা যায়নি। গবেষকেরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, চিনা বাদাম স্ট্রোকের ঝুঁকি কমার সাথে সম্পর্কিত এবং গাছ বাদাম (কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট ইত্যাদি) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমার সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
ডা. অনি বলেন, করোনারি হার্ট ডিজিজ, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, ক্যান্সারে মৃত্যু হার, শ্বসনতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস, সংক্রমণ এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমেছিল বলে দেখা গেছে।
এটি জানার পরেও কী আপনি অনেক বেশি বাদাম খাওয়ার বিষয়ে উৎসাহিত হবেন না? গবেষকেরা আরো দেখতে পান যে, ৪.৫ মিলিয়ন অকাল মৃত্যুকে প্রতিহত করা যেত যদি ঐ মানুষগুলো দৈনিক ২০ গ্রাম বাদাম খেত। যদি আপনি ওজন কমানোর চেষ্টায় থাকেন এবং স্ন্যাক্স হিসেবে বাদাম খান তাহলে চিন্তা করবেন না। ডা. অনি বলেন, ‘যদিও মনে করা হয় যে স্থূলতা এবং ওজন বৃদ্ধিতে বাদামের অবদান আছে, কিন্তু বেশীর ভাগ গবেষণাতেই দেখা গেছে উভয়ের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই’। তাই বাদামকে এড়িয়ে চলার কোন কারণ নেই। বরং বাদাম খাওয়ার অনেক কারণ আছে।
পরিশেষে ডা. অনি বলেন, ‘যদি আপনার বাদামের অ্যালার্জি না থাকে তাহলে বাদাম খান’।
তথ্যসূত্র : The best disease fighter is already in your pantry