বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি ঢেলে সাজানো হচ্ছে

Author Topic: বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি ঢেলে সাজানো হচ্ছে  (Read 920 times)

Offline Md. Alamgir Hossan

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 935
  • Test
    • View Profile
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা পদ্ধতিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে লিখিত পরীক্ষায় নম্বর কমানো, পরীক্ষা পদ্ধতির মানোন্নয়ন, সিলেবাসের আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামীতে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সনে প্রশ্ন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থেকে দ্বৈত পরীক্ষা পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ইত্তেফাককে বলেন, আমরা এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি জারি

থেকে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে চাই। আগে একটি বিসিএস সম্পন্ন করতে দুই থেকে আড়াই বছর পার হয়ে যেত। ফলে মেধাবী পরীক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হতো। বিসিএস পরীক্ষা দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি কাজ করছে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিসিএস পরীক্ষার কারিকুলামে কিছু পরিবর্তন আসছে।

কি ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে— এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, এখনো সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতে আগামীতে প্রশ্ন প্রণয়ন করার চিন্তা আছে। এক কথাই বহির্বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ও সবচেয়ে মেধাবীকে নির্বাচিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বিসিএস পরীক্ষায় বর্তমান যে কারিকুলাম আছে, তা পরিবর্তনের জন্য শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে পিএসসিকে পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে পিএসসির পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে কিভাবে স্বল্প সময়ে উন্নত বিশ্বের আদলে সিভিল সার্ভিসে যোগ্যদের নিয়োগের সুপারিশ করা যায়, সেই ব্যবস্থার জন্য কমিশনের উপরে চাপ ছিল। বাস্তবতার নিরিখে পিএসসিও এখন বিসিএসের কারিকুলামে পরিবর্তনের পক্ষে। এজন্য পিএসসির সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে আগামী বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতিতে বেশকিছু পরিবর্তন আসবে। বিশেষজ্ঞ কমিটি বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষার নম্বর কমানো, পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রশ্ন প্রণয়ন, পিএসসিতে শিক্ষকদের খাতা দেখার ব্যবস্থা করা, প্রযুক্তি নির্ভর পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশ্ন থাকাসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ নম্বর থেকে যত কমানো যায় সেই চিন্তা-ভাবনা চলছে। ৯০০ নম্বর থেকে ৫০০ নম্বরে লিখিত পরীক্ষা করা হতে পারে। দীর্ঘসূত্রিতার পাশাপাশি বিদ্যমান ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় একটি নির্দিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাভবান হচ্ছে। যে পরীক্ষা পদ্ধতি ও সিলেবাস আছে তাতে পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ প্রথম শ্রেণির বেশকিছু ভালো ক্যাডার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ক্যাডার নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।

বিসিএসে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যোগ করে মূলত চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হয়। এতে লিখিত পরীক্ষায় খারাপ ফল হলে ভালো ক্যাডার পাওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায়। বর্তমানে বাংলা, ইংরেজি ও বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে ২০০ করে ৬০০ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ করে মোট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কারিগরি ও শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রে আরো অতিরিক্ত ২০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কমিশন চাচ্ছে বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে ১০০ নম্বরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশ্ন রাখতে।

গুঞ্জন আছে, মৌখিক পরীক্ষার নম্বরও কমিয়ে আনা হতে পারে। বিগত ড. শাহাদত্ কমিশন বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় ২০০ নম্বর থেকে ১০০ নম্বর করেছিল। পরবর্তীতে কমিশন এসে ২০০ নম্বর বহাল রাখে। বিসিএসে বাংলার ওপর একক নির্ভরতা কমিয়ে আনা হচ্ছে। বিগত ড. শাহাদত্ কমিশন বাংলার ওপর জোর দিতে গিয়ে বিসিএস পরীক্ষা থেকে ইংরেজি মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়ন বাতিল করেছিল। এতে করে দেখা গেছে, প্রশাসনে ইংরেজি জানা কর্মকর্তার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এজন্য বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সন ও ইংরেজি মাধ্যম থেকে আসা শিক্ষার্থীরা আগামীতে পরীক্ষা দিতে পারবেন ইংরেজি ভাষাতেই।

স্বল্প সময়ে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্যে পরীক্ষার খাতা শিক্ষকরা বাসায় না নিয়ে পিএসসিতে বসেই যাতে দেখতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আছে। এটা করার আগে খাতা দেখার সম্মানী বাড়াবে পিএসসি। পরীক্ষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে কমিশন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ও পিএসসির সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর ইত্তেফাককে বলেন, কমিটি কাজ করছে। আমরা শিগগিরই কমিটির সুপারিশ চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেবো। এর আগে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

৩৬তম বিসিএস থেকে ‘ক্যাডস’

ক্যাডার ডিস্ট্রিবিউশন সফটওয়ারের (ক্যাডস) মাধ্যমে ৩৬ তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করবে পিএসসি। যদিও ক্যাডসের পাশাপাশি ম্যানুয়ালি ফলাফলও প্রস্তুত থাকবে। পরীক্ষামূলক ৩৬তম বিসিএস থেকে এই পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। পিএসসির সদস্য ড. আবদুল জব্বার খানের নেতৃত্বে একদল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এই নতুন সফটওয়ার তৈরি করেছে। সম্পূর্ণ রাজস্ব খাতের বাইরে এই সফটওয়ার তৈরি। এর আগে নন-ক্যাডার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সফটওয়ার ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছে কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাডার পরীক্ষায় আসছে ‘ক্যাডস’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ৩৬তম বিসিএসে ম্যানুয়ালির পাশাপাশি ‘ক্যাডস’ সফটওয়ার ব্যবহারের চিন্তা আছে। আমরা বলতে পারি, পিএসসির পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগছে। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে আগামী দিনগুলিতে পিএসসির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এজন্য পিএসসির সদস্য ড. আবদুল জব্বার খানকে ধন্যবাদ জানান পিএসসির চেয়ারম্যান।

Offline Ratul.JMC

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 279
    • View Profile
Thank you very much for your post. :)
Md. Rashedul Islam Ratul
Lecturer, JMC
Daffodil International University