বাংলাদেশ সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুগল গ্লাস স্টার্টআপ ও স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি অগমেডিক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা পেলু ট্র্যান ও ভেঞ্চার পার্টনার স্টিভেন ইয়েসিয়েস। বাংলাদেশ থেকে আগামী পাঁচ বছরে সাত হাজার কর্মী (রিমোট স্ক্রাইব) নিয়োগের পরিকল্পনা তাঁদের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর অগমেডিক্স ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিকল্পনার কথা জানান তাঁরা।
অগমেডিক্সের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, বাংলাদেশে বসে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের কাজে সহযোগিতা করার সুযোগ হিসেবে অগমেডিক্স সাত হাজার স্ক্রাইব তৈরির পরিকল্পনা করছে। স্ক্রাইব মূলত দূর থেকে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কাজটি করবেন। চিকিৎসক যখন গুগল গ্লাস চোখে রোগী দেখবেন, তাঁর সামনে রোগীর তথ্য সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার দায়িত্ব থাকবে স্ক্রাইবের। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাসেবার তথ্য বাংলাদেশের এই স্ক্রাইবরা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, অগমেডিক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমাদুল হকসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এখন উঠতি প্রযুক্তির জন্য গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। দেশের মেধাবী তরুণদের উদ্ভাবনের ক্ষেত্র হিসেবে অগমেডিক্স একটি উদাহরণ। সাত হাজার স্ক্রাইব তৈরির বিষয়টি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এলআইসিটি প্রোগ্রাম অগমেডিক্সের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনবল সরবরাহ করতে কাজ করছে।
অগমেডিক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা পেলু ট্র্যান বলেন, ‘অগমেডিক্সের পরিচালনা কাজে ও যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে মেধাবী স্ক্রাইবদের সংযোগ ঘটাতে বাংলাদেশ একটি আদর্শ জায়গা। বাংলাদেশের তরুণেরা এখন ইংরেজি ভালো জানেন। এ ছাড়া দেশের অধিকাংশ মানুষ বয়সে তরুণ। তরুণেরা এখন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হয়ে উঠছেন, যা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতে সম্ভাবনা তৈরি করছে।
অগমেডিক্সের কর্মকর্তারা বলেন, অগমেডিক্সে বাংলাদেশ থেকে স্ক্রাইব নিয়োগ ছাড়াও এর মূল ‘অগমেডিক্স সফটওয়্যার’-এর ধারণা (কনসেপ্ট) ও উন্নয়ন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’।
ভেঞ্চার পার্টনার স্টিভেন ইয়েসিয়েছ বলেন, ‘বাংলাদেশ টিমের মান নিয়ে আমরা খুবই খুশি এবং তারা অগমেডিক্সের উন্নয়নে অনেক অবদান রাখছে।’
২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে অগমেডিক্স। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইয়ান শাকিল ও সহপ্রতিষ্ঠাতা পেলু ট্র্যান অগমেডিক্সের উদ্যোক্তা। এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের বড় পাঁচটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে। অগমেডিক্স যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে প্রাইমারি কেয়ার ডক্টর, স্পেশালিস্ট ও সার্জনদের সেবা দিয়ে আসছে, যারা প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার রোগী দেখেন।