আপনার শিশুটি কি মুটিয়ে যাচ্ছে?

Author Topic: আপনার শিশুটি কি মুটিয়ে যাচ্ছে?  (Read 2288 times)

Offline taslima

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 515
    • View Profile
এই শতকে বাড়তি ওজনের শিশুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এটা সুস্থতার লক্ষণ নয়।

শিশুর ওজন কত হওয়া উচিত, সেটা তার বয়স ও উচ্চতার ওপর নির্ভর করে। শৈশবে মুটিয়ে যাওয়ার নানা কারণ আছে। যেমন মিষ্টি বা চিনিযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবারের প্রতি অতিরিক্ত ঝোঁক, বাড়িতে প্রতিদিন রান্নার প্রবণতা হ্রাস ইত্যাদি। একেকটা ফাস্টফুডে প্রায় ২ হাজার কিলোক্যালরি ও ৮৪ গ্রাম চর্বি থাকে। পাশাপাশি মিষ্টি পানীয়, জুস প্রভৃতি প্রতিবার গ্রহণে প্রায় ৫৬০ কিলোক্যালরি শক্তির জোগান আসে। এই ক্যালরিই শরীরে বাড়তি মেদ হিসেবে জমা হয়। শহরের শিশুরা যান্ত্রিক যানবাহনে অভ্যস্ত, হাঁটে কম। পড়াশোনার চাপে স্কুলেও খেলাধুলার সময় পায় না বললেই চলে। শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে তাদের ওজন বাড়ে। আবার নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে অনেক অভিভাবক শিশুদের বাইরে বেরোতে দেন না। তার ওপর আছে টেলিভিশন, ভিডিও গেমস, কম্পিউটার আসক্তি। এখনকার শিশুরা ঘুমায়ও কম, এতে করে তাদের শরীরে ‘লেপটিন’-এর মাত্রা কমে এবং ‘গ্রিলিন’-এর মাত্রা বাড়ে। ফলে অনেক শিশুর অতিরিক্ত রুচি বা খাওয়ার স্বভাব বাড়ে। মুটিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে কিছু জিনগত কারণও আছে।

অতিরিক্ত ওজনের বিপদ

অতিরিক্ত ওজনের শিশুদের পরবর্তী জীবনে হৃদ্‌রোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ বেশি। এ ছাড়া তারা ডায়াবেটিস, রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল ও ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয়। কিশোরীরা মুটিয়ে গেলে হরমোনজনিত অসামঞ্জস্যে ভোগে এবং পরবর্তী সময়ে তাদের সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।

মুটিয়ে যাওয়া রোধে করণীয়

শিশু নাদুসনুদুস বলে খুশি হবেন না। তার ওজন সঠিক মাত্রায় আছে কি না, জেনে নিন। ওজন অতিরিক্ত হলে পদক্ষেপ নিন।

* জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু মায়ের দুধ দিতে হবে। ছয় মাস পর দোকান থেকে সিরিয়াল কিনে খাওয়ানোর পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি ভাত-খিচুড়ি সাধারণ খাবার দিতে হবে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত এভাবেই চলবে।

* নির্দিষ্ট সময়ে ও স্থানে শিশুকে নিয়ে পরিবারের সবাই একসঙ্গে খেতে বসবেন এবং ঘরের খাবারই খেতে দেবেন, শিশুর জন্য আলাদা খাবার নয়।

* টেলিভিশন, কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের যান্ত্রিক পর্দা (স্ক্রিন) দেখিয়ে খাওয়াবেন না।

* শিশুকে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় ও চর্বিযুক্ত খাবার দেবেন না। স্কুল টিফিনে প্রতিদিন তেলযুক্ত বা মিষ্টি খাবার নয়, বরং ঘরের রান্না স্বাস্থ্যকর খাবার বা ফলমূল দিন।

* বেশি বেশি ফলমূল ও শাকসবজি খেতে শিশুকে উৎসাহ দিন।

* শিশুকে যখন-তখন চিপস, জুস, চকলেট কিনে দেবেন না। উপহার বা পুরস্কার হিসেবে শিশুর হাতে ফাস্টফুড বা চকলেট নয়।

* শিশুরা তাদের ‘পেট ভরে যাওয়া’ বড়দের চেয়ে আগে বুঝতে পারে। সুতরাং তাকে ‘পুরো প্লেট শেষ করে খেতে হবে’ এ রকম নির্দেশ জারি করবেন না। খাওয়ার জন্য জবরদস্তি তো নয়ই।

* শিশুকে খেলাধুলা ও শারীরিক পরিশ্রমে উৎসাহ দিন। বসে বসে কম্পিউটার ব্যবহার বা গেমস খেলতে নিরুৎসাহিত করুন।

ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

http://www.prothom-alo.com/life-style/article/1128736/%E0%A6%86%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87
Taslima Akter
Sr. Accounts Officer (F&A)
Daffodil International University
Email: taslima_diu@daffodilvarsity.edu.bd