বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডঃ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি গণিতবিদদের সাফল্য

Author Topic: বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডঃ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি গণিতবিদদের সাফল্য  (Read 780 times)

Offline subrata.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 255
  • Test
    • View Profile
    • https://www.daffodilvarsity.edu.bd/
আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন গণিতকে দিয়ে বিশ্ব দেখতে। তিনি এও বলেছিলেন সমগ্র জগতটাই গণিতে সাজানো। শুধুমাত্র আমাদের দেখার চোখ থাকতে হবে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, অনেক গণিতবিদ বলেন সমগ্র বিশ্বটাই সৃষ্টিকর্তা অপূর্ব গণিতের সমন্বয়ে তৈরি করেছেন। তবে আজ আমরা সে দিকে যাবো না। তারচাইতে বরং আমাদের দেশের দিকে আসা যাক। তবে আলোচনার বিষয় ঐ একটাই, গণিত।

বাংলাদেশে গণিতের চর্চা কিছুটা দমে থাকে তবে গণিত অলিম্পিয়াড বেশ আশা জাগানিয়া খবর নিয়ে আসে প্রতিবছর। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশি গণিতপ্রেমী প্রজন্মকে নতুন করে চেনায় গণিত অলিম্পিয়াড। স্কুল ও কলেজ লেভেলে প্রতি বছর গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রথম গণিত অলিম্পিয়াডের সূচনা হয় ২০০১ সাল থেকে। স্থান ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। এরপর থেকে শুরু হয় বাংলাদেশে গণিতের যাত্রা।

২০০৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি গণিতবিদরা দেশের জন্য বয়ে আনছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। দেশের অন্যতম প্রধান পত্রিকা দৈনিক প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ ও ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করে আসছে। এছাড়াও দেশের যে কোন স্থানে গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হলে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে থাকেন।

যে ফরম্যাটে জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড উৎসব সাজানো হয়ে থাকেঃ

শিক্ষার্থীদেরকে চারটি ক্যাটাগরীতে ভাগ করা হয়ে থাকে।
১) প্রাইমারী- এই ক্যাটাগরীতে তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে।
২) জুনিয়রঃ ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী
৩) সেকেন্ডারিঃ নবম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী
৪) হাইয়ার সেকেন্ডারীঃ একাদশ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী

আঞ্চলিক উৎসবে সমগ্র বাংলাদেশকে ২৪টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রায় ১০০০ গণিতবিদ থেকে ৬০ জন গণিতবিদ নেয়া হয়ে থাকে এই অঞ্চলগুলো থেকে।
ঢাকা বিভাগ থেকে প্রায় ৩০০০ গণিতবিদ থেকে নেয়া হয় ১০০-১৫০ জন। তারপর এদেরকে নিয়ে জাতীয় উৎসবের জন্য বিবেচিত করা হয়। জাতীয় উৎসবে ৭১ জন গণিতবিদকে পুরস্কৃত করা হয়ে থাকে। তারপর এই সেরা গণিতবিদদের নিয়ে নিয়ে হয় জাতীয় ক্যাম্প যেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়াই করবার জন্য প্রশিক্ষণ ও পরিচর্যা করা হয়ে থাকে।

এবার আসা যাক বাংলাদেশের সাফল্যে। ২০০৯ সালে সামিন রিয়াসাত ও নাজিয়া চৌধুরী ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্ত হয়ে দেশের জন্য বয়ে নিয়ে আসেন অসামান্য গৌরব। সামিন রিয়াসাত পড়াশোনা করছেন কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১০ সালে তারিক আদনানও ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। তিনি পড়াশোনা করেছেন বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।  ২০১১ সালে ধনঞ্জয় বিশ্বাস লাভ করেন ব্রোঞ্জ পদক।
২০১২ সালে ধনঞ্জয় দেশের জন্য প্রথম রৌপ্য পদক অর্জন করেন।
২০১৪ সালে নূর মুহম্মদ শফিউল্ল্যাহ দেশের জন্য দ্বিতীয় ও ২০১৫ সালে সানজিদ আনোয়ার তৃতীয় রৌপ্য পদক অর্জন করেন।
২০১৬ সালে আসিফ ই এলাহী দেশের জন্য চতুর্থ রৌপ্য পদক অর্জন করেন।
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ এই পর্যন্ত ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছে ১৭টি ও রৌপ্য পদক পেয়েছে চারটি।

আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরা সারা বিশ্বের নামীদামী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করছেন। হার্ভার্ড, এম আই টি, ক্যালটেক, ক্যামব্রিজ ইত্যাদি বিশ্বসেরা সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা পড়াশুনা করছেন আর দেশের জন্য বয়ে আনছেন অসামান্য গৌরব।
Subrata Banik
Lecturer (Physics)
Department of General Educational Development