একজন ছাত্রের গুন বিচার করা হবে নানাবিধ প্রতিভা দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল দিয়ে নয়। বছরের পর বছর মাসের পর মাস পড়ানোর পর লাখে লাখে বেকার তৈরি হচ্ছে স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
আমার দেখা মতে স্কুল কলেজ ফাঁকি দেওয়া ছেলে গুলোয় আজ স্বাবলম্বী কোন না কোন ভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের কর্মের সংস্থান করেছে তার সাথে আরো দশ জনের কর্মের ব্যাবস্থা করতে সক্ষম হয়েছে।
আমি বিশ্বাস করি সাটিফিকেট এ ফলাফল যায় হউক তার বেসিক যদি ভাল থাকে তবে সেই ছাত্র সুযোগ পেতে হবে না সে নিজেই সুযোগ তৈরি করে নিবে তার নিজের জন্য।
মুখস্থ করে ভাল ফলাফল করা যায় কিন্তু প্রতিভা তৈরি করা যায় না।
স্কুল এর দিক থেকে যদি বলি
১। পি এস সি, জে এস সি , এস এস সি , এ লেভেল , ও লেভেল এই পরীক্ষা গুলো আমদের স্কু্লের এর প্রধান উদ্দেশ্য, উদাহরন সরূপ বলি
পি এস সি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ক্লাস ফাইভে, তাহলে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত আমরা একাডেমিক পড়া লেখার পাশা পাশি অন্য বিষয় গুলোর দিকে জোর দিতে পারি একি ভাবে ক্লাস এইট ও টেন এ বছর গুলো আমরা একাডেমিক পড়া শোনায় জোর দিয়ে বাকি বছর গুলো তে আমরা তাদের অন্য প্রতিভা বা আগ্রহর বিষয় গুলোতে জোর দিয়ে এবং ঘষামাজা করে তাদের কে তৈরি করে দিতে পারি।
স্কুল এ ১০ বছর এই সময়টা হল কাদামাটি ঠিক যেই আকার দিতে চাইবো ঠিক সেই আকার এ তাদের আমরা দিতে পারব।
কলেজ এর দিক থেকে বলি যদি
১। এস এস সি তে একজন ছাত্র কি ফলাফল করেছে এ দিক থেকে তার মান বিচার না করে বরং সে স্কুল থেকে মূলত কতটুকু শিখে এসেছে তার উপর লক্ষ্য করুন। কিছু প্রতিভা আছে ঈশ্বর প্রদত্ত যেমন কেউ ভালো নাচে, কেউ ভালো গা্য়, কেউ ভালো খেলে, কেউ আঁকতে পারে ভালো,কেউ কেউ ভালো লিখা লিখিতে, কেউ গয়েন্দাগিরিতে, কেউ কেউ আছে পড়ালেখায় মনযোগ কম কিন্তু ব্যাবসায় দিকে খুবই আগ্রহী এই ছাত্র গুলোর সাথে ওরা যেমন হতে চায় তাদের সাথে ঠিক তেমনি করে ট্রিট করতে পারলে বের করে নিয়ে আসতে পারবো নিদ্রায়িত প্রতিভা। একজন ছাত্র কে আমি জি পি এ ৫ দিতে পারলাম না কিন্তু তাকে নুন্যতম একটা জি পি এ দিয়ে তাকে আমি সমাজে একটি মূল্যবান প্রোডাক্ট হিসেবে তৈরি করে দিতে পারলে তাতেই একজন শিক্ষক হিসেবে আমার সার্থকতা।
২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানে শুধু পুথিগত শিক্ষা কেন্দ্র এই ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানে নৈতিকতা, মানবিকতা , সাহসিকতা সব কিছুরই শিক্ষাক্রেন্দ্র।
বিশ্ববিদ্যালয় দিক যদি চিন্তা করি
১। বড় বড় মনীষীদের বড় বড় মাপের বই পড়ে যখন ডিগ্রি শেষ করে ইন্টারভিউতে বসি ওই বোর্ডের সদস্যরা যে প্রশ্ন গুলো করে থাকে তার সাথে ৪ বছর পড়ে যাওয়া বিদ্যার সাথে কোনো সংযোগ খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে যদি রেফার থাকে মিলে যায় চাকরি, না থাকলে বেকার বসে থাকতে হয়। এখন কথা হল তাহলে আমরা কি শিখলাম এবং আমদের এর ৪ বছর এর ডিগ্রি কি শিক্ষালো আমাদের? এটা অতিক্রম করা সম্ভব যদি কিনা আমরা ছেলেমেয়েদের পুঁথিগত বিদ্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারি এবং বিভিন্ন ছোট বড় প্রতিষ্ঠানে যদি এদের টানা এক বছর বা বেশ কয়েক মাসের জন্য কাজ করাতে পাঠানো যায় এদের পারপরমেন্সের উপর ভিত্তি করে মার্কিং এবং রেজাল্ট। তাতে ওদের রিয়েল অভিজ্ঞতা ও হল আর অভিজ্ঞতাহীন এই কথা টা ও ঘুচলো। এবং কোম্পানি গুলো বেতন দেওয়া ছাড়ায় সার্ভিস পেলো।
২। রেজাল্ট ভালো হলেই সে ভালো শিক্ষক এই ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবেই আমাদের কারন , যে যত ভালো শেখায় সেই তত ভালো শিক্ষক। যারা বিভিন্ন কোম্পানি চাকুরীরত আছে তাদের কে যদি শিক্ষক হিসেবে ছাত্রছাত্রীরা পায় তারা শেখাতে পারবে বর্তমান যুগের সাথে তালমিলিয়ে শিক্ষা ।
রেজাল্ট হল যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বড় লক্ষ্য কিন্তু মুল লক্ষ্য নয়। এটা মানতে হবে এবং মানাতে হবে।
কোনো শিক্ষক কে পরিবর্তন করানো সম্ভব না যদি না তারা নিজ থেকে পরিবর্তন হতে চায়। তাহলে কি করার আমাদের? আমাদের যা করতে হবে তা হলো শিক্ষা পদ্বতি পরিবর্তন করতে হবে ।
সুমাইয়া হায়দার সামিয়া