সকালে না বিকেলে? রাতে হাঁটা কি খারাপ? ঘুমের আগে হাঁটলে কি ঘুমের ব্যাঘাত হবে? এ রকম নানা প্রশ্ন মনে। আসলে নিজের জীবনযাত্রার সঙ্গে মিলিয়ে আপনার জন্য যে সময়টা সবচেয়ে উপযোগী সেই সময়টাই বেছে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করাটাই আসল কথা।
নিরাপত্তার বিষয়টিও খেয়াল রাখুন। নির্জন সময়ে ব্যায়াম করতে রাস্তায় বেরোলে বিপদের আশঙ্কা থাকে। রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চললে বা পথ এবড়োথেবড়ো হলে সেখানে ব্যায়াম করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সরু গলিপথে যানবাহনের সঙ্গে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে। বাইরে না যেতে পারলে বাড়ির ছাদ হতে পারে তুলনামূলক নিরাপদ।
বাইরে ব্যায়াম করার সময়-সুযোগ অনেকেই পান না। তাঁরা বাড়ির বারান্দায় ব্যায়াম করতে পারেন। লম্বা বারান্দা বা করিডর থাকলে সেখানেই হাঁটতে পারেন। ঘরের ভেতর বড় জায়গা না থাকলে ঘরের এক কোনা থেকে আরেক কোনা বরাবর বেশ কয়েকবার হাঁটুন। বদ্ধ ঘরে বা জিমে উন্মুক্ত হাওয়া পাওয়া যায় না, তবু না বেরোতে পারলে তাও ভালো।
রোদে ব্যায়াম করলে সহজেই হাঁপিয়ে উঠবেন; ত্বকেও রোদের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই সকাল ১০টার আগে বা বিকেল ৪টার পর বাইরে হাঁটা উত্তম।
ভরপেট খাবার পরপরই ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভরপেট খাবার খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা যায়। সকালে বা বিকেলে হালকা নাশতা করার এক ঘণ্টা পর ব্যায়াম করতে পারেন। আবার ভোরে নাশতার আগেও ব্যায়াম করা যায়। ব্যায়াম শেষে ১০-১৫ মিনিট পর খাবার খেতে পারেন। ব্যায়ামের মাঝেও সামান্য পরিমাণ হালকা খাবার খাওয়া যায়, দুএক ঢোঁক পানিও খাওয়া যায়। যাঁদের দিনে সময় নেই, তাঁরা রাতের খাবারটা জলদি খেয়ে ২ ঘণ্টা পর একটু হাঁটতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীরা একেবারে খালি পেটে ভোরে হাঁটতে যাবেন না, হালকা কিছু খেয়ে নেবেন।
ব্যায়ামের সময়টা যা-ই হোক, প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। এমনকি সপ্তাহে ৫ দিন আধঘণ্টা করে সময় বের করতে না পারলেও একদিন অন্তর ব্যায়াম চালিয়ে যান। তবে পরপর দুই দিন বিরতি দেবেন না।
অধ্যাপক সোহেলী রহমান
বিভাগীয় প্রধান, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল