The world is surprised by the miracles of the Holy Qur'an

Author Topic: The world is surprised by the miracles of the Holy Qur'an  (Read 1190 times)

Offline rumman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1020
  • DIU is the best
    • View Profile
The world is surprised by the miracles of the Holy Qur'an
« on: May 29, 2017, 01:28:40 PM »
কোরআনের মাস রমজান দরজায় কড়া নাড়ছে। মুমিনের হৃদয়মাত্রই আকুল হয়ে আছে রমজানকে বরণ করে নিতে। রমজানুল মুবারকে নাজিল হওয়া পবিত্র কোরআনুল কারিম পৃথিবীর অনন্য এক বিস্ময়। মানুষের সঙ্গে যেন কোরআনের নাড়ির সম্পর্ক। এর আলোকোজ্জ্বল অলৌকিকতা ঐশী চুম্বকের মতো পৃথিবীবাসীকে কাছে টেনে আলোকিত করেছে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যে-ই কোরআন পড়েছে, শুনেছে, অনুধাবন করার চেষ্টা করেছে, সে-ই কোরআনের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছে। কোরআনুল কারিমের মতো আর কোনো গ্রন্থ নেই পৃথিবীতে। এর কিছু অলৌকিকতা নিচে তুলে ধরা হলো :

পৃথিবীর একমাত্র অবিকৃত গ্রন্থ : পৃথিবীর একমাত্র অপরিবর্তিত ও অবিকৃত গ্রন্থ হলো আল কোরআন। পবিত্র কোরআনুল কারিম অবতীর্ণ হওয়ার দেড় হাজার বছর পরেও এর একটি অক্ষরেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। আজ পর্যন্ত কেউ কোরআনকে পরিবর্তন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে সফল হতে পারেনি, হতে পারবেও না। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আমি এ উপদেশগ্রন্থ  (কোরআন) নাজিল করেছি, আর আমি নিজেই এর সংরক্ষক। ’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ০৯)

সপ্তম আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর আবদুল্লাহ আল মামুন (খলিফা মামুন) তাঁর পিতার প্রতিষ্ঠিত বায়তুল হিকমাহকে সমৃদ্ধ করেন। এর সেমিনারকক্ষে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া হতো। একদিন তিনি দেখলেন সেমিনারকক্ষে সুন্দর পোশাকধারী, সুন্দর চেহারার এক ইহুদি জনগণের সামনে চমৎকার বক্তব্য দিল। সেমিনার শেষে খলিফা মামুন লোকটিকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি ইহুদি? লোকটি বলল, হ্যাঁ। খলিফা মামুন তাকে বিভিন্ন পুরস্কারের প্রস্তাব করে তাকে ইসলাম গ্রহণের আমন্ত্রণ জানালেন। কিন্তু লোকটি তার বাবা-দাদার ধর্ম ছাড়তে রাজি হলো না। এক বছর পর আবার সে সেমিনারকক্ষে লোকটিকে দেখা গেল ইসলামের সৌন্দর্য নিয়ে বক্তব্য দিতে। খলিফা মামুন তাকে প্রশ্ন করলেন, আপনিই কি সে লোক নন? লোকটি বলল, হ্যাঁ। খলিফা তাকে ইসলাম গ্রহণের কারণ জিজ্ঞেস করলে লোকটি বলল, ‘আমি আপনার দরবার থেকে ফিরে গিয়ে ধর্মগুলোকে পরীক্ষা করার ইচ্ছা করলাম। তাওরাতের তিনটি পাণ্ডুলিপি লিখলাম। আর তাতে আমার মনগড়া অনেক কথা ঢুকিয়ে দিলাম। এরপর সেগুলোকে একটি গির্জায় নিয়ে বিক্রি করে দিলাম। দেখলাম, লোকজন আমার লেখা ভেজাল তাওরাত কিনে নিল। তারপর ইঞ্জিল শরিফের প্রতি মনোনিবেশ করলাম। এতেও তাওরাতের মতো মনগড়া কথা ঢুকিয়ে দিয়ে ইঞ্জিলেরও তিনিটি কপি লিখলাম। খ্রিস্টানদের উপাসনালয়ে নিয়ে গেলে সেগুলোও নির্বিঘ্নে বিক্রি করতে পারলাম। এরপর আমি পবিত্র কোরআনুল কারিমের অলৌকিকতা পরীক্ষা করার জন্য এরও তিনটি কপি লিখলাম, আর সেগুলোতে ফাঁকে ফাঁকে মনগড়া কথা ঢুকিয়ে দিলাম। সেগুলো মসজিদে মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করতে গিয়ে বারবার ধরা খেলাম। তারা একে গ্রহণের আগে যাচাই করে দেখে। মুসলমানরা সেগুলো নিল না। বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর আমার মন বলে দিল যে ভেজাল তাওরাত ও ইঞ্জিল বাজারে চললেও ভেজাল কোরআন চলে না। একমাত্র কোরআনকেই অপরিবর্তনশীল ঐশী গ্রন্থ পেলাম। তাই এর শুদ্ধতা যাচাই করে তাতে মুগ্ধ হয়ে আমি ইসলাম কবুল করেছি। (তাফসিরে কুরতুবি : সুরা হিজর, আয়াত-৯)

কোরআনের শুদ্ধতায় বিশ্বাস করার জন্য কোনো গবেষণার দরকার নেই। কোনো গবেষণা ছাড়াই আমরা বিশ্বাস করি যে পবিত্র কোরআন আল্লাহ তাআলার সংরক্ষিত কিতাব। এতে কোনো পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হবে না। এ যাবৎ কৃত কোনো গবেষণাই কোরআনের বিকৃতির প্রমাণ করতে পারেনি। যাঁরাই গবেষণা করেছেন, তাঁরাই এর অলৌকিকতায় মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ২০১৫ সালে আলবা ফাদেলি নামক বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (যুক্তরাজ্য) এক পিএইচডি গবেষক গবেষণা করতে গিয়ে পুরনো বইপত্র অনুসন্ধান করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে পবিত্র কোরআনের পুরনো পাণ্ডুলিপি খুঁজে পান। চামড়ায় লিখিত পাণ্ডুলিপিটি কত বছরের পুরনো তা পরীক্ষা করার জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রেডিওকার্বন পরীক্ষাগারে পাঠান। পরীক্ষায় একেবারেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে এ পাণ্ডুলিপি এক হাজার ৩৭০ বছর আগে লিখিত। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বর্তমান কোরআনের সঙ্গে সেই কোরআনকে মিলিয়ে ঘোষণা করে যে বর্তমান কোরআনের সঙ্গে এক হাজার ৩৭০ বছর আগের চামড়ায় লিখিত কোরআনের কোনো ব্যবধান তাঁরা খুঁজে পাননি। এমনকি আজও একটি অক্ষরেরও পরিবর্তন হয়নি কোরআনে। (দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস : ২৩-০৭-২০১৫)

সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ : পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ হলো পবিত্র কোরআনুল কারিম। অন্য জনপ্রিয় গ্রন্থগুলো বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে পঠিত আর পবিত্র কোরআনুল কারিম তার নিজস্ব ভাষা আরবিতেই পড়া হয় পৃথিবীর সব দেশে। পৃথিবীর দিক-দিগন্তে অবস্থানরত ১৬০ কোটি মুসলমান তাঁদের নামাজে বাধ্যতামূলকভাবেই পড়েন কোরআন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে সারা পৃথিবীতেই কোরআন আজ সর্বোচ্চ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত। অনেক অমুসলিম দেশেও কোরআন সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনলাই জরিপ প্রতিষ্ঠান লাভরিডিংডটকমইউকে (ষড়াবত্বধফরহম.পড়.ঁশ) উপন্যাস, গল্প, সাহিত্যসহ সব ধরনের বইয়ের মধ্যে কোনটি সর্বাধিক পঠিত তা নিয়ে জরিপ করে। এতে সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থের স্থান দখল করে পবিত্র কোরআনুল কারিম। জরিপ বলছে, পবিত্র কোরআনের তিন বিলিয়নেরও বেশি কপি ছাপা হয়ে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে। তাদের জরিপ অনুযায়ী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাইবেলের ২.৫ বিলিয়ন কপি ছাপা হয়েছে। (ঝঃুষরংঃ গধমধুরহব : ০৯-১২-২০১৪). পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সর্বাধিক বিক্রির তালিকায় পবিত্র কোরআন। এমনকি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বইমেলায়ও ক্রেতাদের সর্বোচ্চ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু আল কোরআন। সম্প্রতি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় অনুষ্ঠিত ২৩তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রি হয়েছে কোরআনুল কারিম। (বাংলানিউজ : ২৬-০২-২০১৭)

সর্বাধিক মুখস্থকৃত গ্রন্থ : পবিত্র কোরআনুল কারিমের আরেকটি বিস্ময়কর দিক হলো এর মুখস্থকরণ। কোরআন শুধু সর্বাধিক পঠিতই নয়, বরং মুখস্থকরণের দিক থেকেও কোরআন শীর্ষে। কোরআন যত মানুষ মুখস্থ করেছে, পৃথিবীর আর কোনো গ্রন্থ সে পরিমাণ মানুষ মুখস্থ করেনি। এমনকি ধারে-কাছেও নেই অন্যান্য গ্রন্থের মুখস্থকারীর সংখ্যা। পৃথিবীতে প্রায় ৮০ লাখ হাফেজে কোরআন রয়েছেন। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাও যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন হাফেজদের এ মুবারক মিছিলে। বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারে জন্ম নেওয়া পাঁচ বছর বয়সী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশু হোসাইন মুহাম্মদ তাহের কোরআন মুখস্থ করে পৃথিবীকে চমকে দেয়। বাংলাদেশের জন্মান্ধ হাফেজ তানভির ২০১২ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ৭৩টি দেশের প্রতিযোগীদের হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে লাল-সবুজের পতাকাকে পৃথিবীর বুকে উজ্জ্বল করেছিলেন। কোরআনের মুখস্থকরণের মতো মুখস্থকারীও আরেক বিস্ময়। আল্লাহ তাআলার রহমতে আচ্ছাদিত হয় তাদের ধন্য জীবন। মৃত্যুর পরও তাদের আত্মার পাশাপাশি দেহও যেন সম্মান পায়। কুমিল্লার হাফেজ মাসুদ ২০০৪ সালে ইন্তিকাল করলে তাঁকে কবরস্থ করা হয়েছিল। দাফনের দীর্ঘ ১৩ বছর পর ১৪ মে ২০১৭ পুকুরের পানিতে কবর ভেঙে গেলে বেরিয়ে আসে হাফেজ মাসুদের অক্ষত তরতাজা লাশ। (বাংলাদেশ প্রতিদিন : ১৬-০৫-২০১৭)

কোরআন তিলাওয়াতে আত্মার প্রশান্তি : পৃথিবীর অনেক অমুসলিমেরই ইসলাম গ্রহণের পেছনে মূল কারণ কোরআনের তিলাওয়াত শ্রবণ। কোরআনের কাছে যে-ই নিজেকে নিবেদন করে তাকেই কোরআন আলোকিত করে দেয়। তার দেহ-মনকে দেয় এক বেহেশতি প্রশান্তির আভা। মহান আল্লাহ তাআলা মানবগোষ্ঠীকে কোরআনের তিলাওয়াত শুনতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পড়া হয় তখন তোমরা তাতে কান লাগিয়ে শোনো এবং নিশ্চুপ থাকো। যাতে তোমাদের ওপর রহমত (নাজিল) হয়। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২০৪)

আল্লাহ তাআলার রহমত নাজিল হলে নিশ্চয়ই বান্দারা প্রশান্তি লাভ করবে। সত্যি মানুষের আত্মা কোরআনের পরশ পেলে প্রশান্তি লাভে ধন্য হয়। যুক্তরাজ্যের সালফোর্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক মানবদেহে কোরআনুল কারিমের তিলাওয়াতের বিস্ময়কর ইতিবাচক প্রভাব আবিষ্কার করেছেন। মনোবিজ্ঞানের ১৫ জন পুরুষ ও ১৫ জন মহিলা শিক্ষার্থীকে নিয়ে পরিচালিত এ গবেষণায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের আগে তাঁদের রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন মাপেন। কিছুক্ষণ তাঁদের কোরআন তিলাওয়াত করানো বা তিলাওয়াত শোনানোর পর আবার তাঁদের রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন মেপে দেখেন, তাঁদের মধ্য থেকে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত হৃৎকম্পন ছিল, তাঁদের সবার রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

Source: লেখক : খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar