২০১৮ সালের শেষ নাগাদ ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা সম্ভব হবে: অর্থমন্ত্রী
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে ২১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটের প্রায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
এই বরাদ্দ প্রস্তাব চলতি অর্থবছরের তুলনায় টাকার অঙ্কে ৬ হাজার ৫৫৭ কোটি এবং শতাংশের হিসাবে প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে মোট ব্যয় ১৪ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত নীতি বিবৃতিতে বলেন, এই খাতের মোট ব্যয় প্রতিবছর ২০ দশমিক ৬ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকায় উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মূল বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হবে।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৮ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন বরাদ্দ ১৮ হাজার ৮৪৫ কোটি এবং অনুন্নয়ন ব্যয় ৪৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়ন ব্যয় ১৩ হাজার ৪২১ কোটি এবং অনুন্নয়ন ব্যয় ২৯ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ২ হাজার ১১১ কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ এবং ১১৩ কোটি টাকা অনুন্নয়ন ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই ব্যয় যথাক্রমে ১ হাজার ৬৮ এবং ৪৩ কোটি টাকা।
নীতি বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী রামপাল, মাতারবাড়ী, পায়রায় একটি করে, মহেশখালীতে আরও চারটি এবং বেসরকারি খাতে মোট ১ হাজার ৪২৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এলএনজি আমদানির মাধ্যমে তিনি গ্যাস–সংকট মোকাবিলার কথাও নীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
বাজেটের এই প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, এই খাতের উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো খুবই দরকারি। তবে সরকার এই খাত থেকে মাত্রাতিরিক্ত হারে রাজস্ব আহরণ করছে। সে তুলনায় বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে না। তা ছাড়া শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না। এই খাতের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও প্রতিযোগিতা না থাকলে দুর্নীতির ঝুঁকি বাড়বে। সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, তা–ও অর্জন করা কঠিন হবে।