আমার বাবা ছিলেন লৌহ মানব। ১৮ - ১৯ বছরের গ্রামের ছেলে যাকে বাবা - মা পরিবার সব কিছু পিছনে ফেলে কঠিন জীবনে আসতে হয় সে কঠিন মনের হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
আমাদের পাবনা ক্যাডেট কলেজের কোন প্যারেন্টস ডে তে তিনি যেতেন না। কেননা তার অফিস কামাই যাবে। যখন ছুটি শেষে আবার কলেজে যেতাম আমার বাবা আমাকে বাসে উঠিয়ে দিতে যেতেন না। এই সবই খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো আমার কাছে। মনে পড়ে শুধু একবারই উনি আমাকে বাসে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। যখন বাস চলা শুরু করলো আমি আশ্চর্য হয়ে দেখলাম আমার বাবাও পিছনে পিছনে চলা শুরু করেছেন। তার মুখের অভিব্যক্তি তার সন্তানের জন্য স্নেহ আর আবেগ তিনি আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। এই একটি স্মৃতিই আমার মনে ঘুরে ফিরে আসে। আর অন্য সব ঘটনা ক্লিয়ার করে দেয়।
আমার বাবা তার স্নেহের সব টুকুই লুকিয়ে রাখতেন। কখনো বুঝতে দিতেন না। আমি দেখেছি আমার বাবার লৌহ কঠিন অভিব্যক্তির পিছনে সজতনে লুকিয়ে রাখা স্নেহ ও আবেগ।
আমার বাবা যেমন ছিলেন লৌহ মানব তেমন আমিও ছিলাম একটি প্রব্লেম বয়। কিছুই সহজ ভাবে করতে পারতাম না। শুধু আমি জানি আমার জন্য উনি কত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। আমি জানি উনি
আবেগের অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখতেন যেন আমরা মানুষ হই। নিজেদের সব দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করি।
আমার বাবা ২০ বছর আগে মারা গিয়েছেন। জীবনে বেশ কিছু বিপদ আপদ এসেছে। অনেক সময়ই তা অনেক বড় বড় ছিল। বিপদ গুলো পার হয়েছিও। আমার সব সময়ই মনে হয় এই প্রব্লেম বয়ের পক্ষে বিপদ গুলো পার হওয়া সম্ভব হয়েছে কেননা আমার বাবা অন্তর থেকে আমার জন্য দোয়া করে গেছেন।
আল্লাহ আমার বাবাকে শান্তিতে রাখুন সব সময় এই দোয়া করি মনের অন্তঃস্থল থেকে।
(আমার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)