ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন। ছোট-বড় সবার জন্য নানা উপহার তো নিচ্ছেনই। কিন্তু বিপদ-আপদ-অসুস্থতার কথাও মনে রাখবেন। তাই সঙ্গে নেবেন কিছু জরুরি ওষুধপথ্যসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম।
* ডায়াবেটিসের রোগীরা তাঁদের ইনসুলিন তো নেবেন, কিন্তু মনে রাখবেন, অতিরিক্ত তাপ ও রোদে ইনসুলিন নষ্ট হয়। থার্মোফ্লাস্ক থাকলে ভালো। নয়তো রেফ্রিজারেটর থেকে যাওয়ার আগমুহূর্তে বের করে একটি জিপার ব্যাগে রাখুন। এই ব্যাগটি রোদের মধ্যে বা বাসের নিচে লাগেজ রাখার গরম জায়গায় দেবেন না। যথেষ্ট সিরিঞ্জ ও সুইও সঙ্গে নিন।
* হাঁপানি রোগীদের ইনহেলার নেওয়ার সময়ও একই নিয়ম। ইনহেলারের মধ্যে যথেষ্ট ওষুধ আছে কি না, ঝাঁকিয়ে পরখ করে দেখুন। যাঁদের শ্বাসকষ্ট বেশি হয়, তাঁরা নেবুলাইজার যন্ত্রও নিতে পারেন। কাজে আসবে।
* যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান, যেমন উচ্চ রক্তচাপের বা হার্টের রোগী, তাঁরা যথেষ্ট ওষুধ সঙ্গে নিন। দিনরাতের ওষুধ আলাদা জিপার ব্যাগে নিলে ভালো। প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি সঙ্গে রাখুন। কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় চিকিৎসকেরা যেন আপনার রোগ সম্পর্কে ধারণা পান।
* গ্রামে বা মফস্বলেও হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ওষুধের দোকান পাবেন। কিন্তু পথে সব সময় পাবেন না। আর পথ যে কত লম্বা হতে পারে, তা তো জানা নেই। তাই হাতব্যাগে টুকিটাকি প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিসপত্র রাখা ভালো। যেমন খানিকটা তুলা, গজ, পোড়া জায়গায় লাগানোর মলম, অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ ইত্যাদি। এক পাতা প্যারাসিটামল, খাবার স্যালাইনের প্যাকেট নিলেও ভালো।
* যাঁরা যাত্রাপথে অসুস্থ বোধ করেন, তাঁরা আগেই একটি বমির ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। আজকাল মোশন সিকনেসের ভালো ওষুধ পাওয়া যায়। চিকিৎসকের কাছে ডোজ জেনে নিন। ব্যাগের মধ্যেও রাখুন। পথে বমি করলে পানি ও লবণশূন্যতা হতে পারে। তাই এর সঙ্গে এক বোতল ডাবের পানি বা খাওয়ার স্যালাইন নিতে পারেন। পথের ধারের ডাব বা জুসজাতীয় দ্রব্য ভুলেও পান করবেন না।
* পথে অপরিচিত কারও কাছ থেকে কোনো খাবার খাবেন না। এমনকি ফেরিওয়ালা থেকেও না। বাড়ি থেকে পথের খাবার সঙ্গে নিন। খাবার খেয়ে নিজেদের মধ্যে কারও বিপদ দেখা দিলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসা লাগে না। সব সময় ব্যাগে বা পকেটে নিজের বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর লিখে রাখবেন।
ঈদের যাত্রাপথ হোক আনন্দময় ও আশঙ্কাহীন। সতর্ক থাকুন ও ভালো থাকুন।
ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন
মেডিসিন বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ