Rules of ZAKAT

Author Topic: Rules of ZAKAT  (Read 1518 times)

Offline Rasel Prodhania

  • Newbie
  • *
  • Posts: 17
    • View Profile
Rules of ZAKAT
« on: June 28, 2017, 03:34:38 PM »
 মাহে রমজানে সঠিকভাবে যেভাবে যাকাত হিসেব ও আদায় করবেন !

ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের যে কটি উৎস রয়েছে, তারমধ্যে যাকাত অন্যতম। একই সঙ্গে যাকাত ইসলামের তৃতীয় বৃহত্তম ইবাদাত। ঈমানের সাক্ষ্য ও সালাতের পরই যাকাতের অবস্থান। ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের সেই প্রসিদ্ধ হাদীসে রাসূল স. যাকাতকে সালাতের পর উল্লেখ করেছেন।[বুখারী ও মুসলিম]
 

এছাড়া মুয়ায রা. ইয়ামানে যাওয়ার পূর্বে রাসূল স. তাঁকে দাওয়াতের যে পদ্ধতি শিখিয়েছেন, তাতেও সালাতের পরই যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, “যদি ইয়ামানবাসী শাহাদাত ও সালাতের কথা স্বীকার করে নেয়, তাহলে তাদের জানাবে যে, আল্লাহ তা’আলা তাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন। যা তাদের ধনীদের কাছ থেকে উসুল করে গরীবদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে”।[বুখারী ও মুসলিম]

আল্লাহ তায়ালা আল-কুরআনে অধিকাংশ জায়গায় সালাতের সাথে যাকাতকে মিলিয়ে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, “সালাত কায়েম করো আর যাকাত আদায় করো”
[সূরা নূর: ৫৬] ।

যাকাত গরীবের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। যা যোগান বৃদ্ধিতে চাপ প্রয়োগ করে। যোগান বাড়াতে প্রয়োজন হয় বিনিয়োগ বাড়ানোর। গড়ে ওঠে নতুন কারখানা। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, বেকারত্ব হ্রাস পায়। বিনিয়োগ বাড়ালে মুনাফা বৃদ্ধি পায়। কাজেই সম্পদও বৃদ্ধি পায়। ফলে যাকাতও বেড়ে যায়। এভাবেই পুরো অর্থনীতিকে চালিয়ে নিয়ে যায় যাকাত।

যাকাত কী?

যাকাত শব্দের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া। রিবা(সুদ) অর্থও বৃদ্ধি পাওয়া। তবে যাকাত আর রিবার বৃদ্ধির মাঝে পার্থক্য আছে।যাকাত সম্পদের বরকত ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; সম্পদকে পবিত্র করে। অপরদিকে রিবা সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি করে,তবে বরকত নষ্ট করে দেয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহ রিবার সম্পদ ধ্বংস করে দেন, আর যাকাত-সাদাকাতের সম্পদকে বৃদ্ধি করে দেন”।[সূরা বাক্বারা: ২৭৬]

তিনি আরো বলেন, “আপনি তাদের সম্পদ থেকে সাদাকা-যাকাত উসুল করুন। এটা তাদেরকে পবিত্র করবে”।[সূরা তাওবা: ১০৩]

পরিভাষায় যাকাত হলো, শরীয়ত নির্ধারিত ব্যক্তিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি চিত্তে শরীয়ত নির্ধারিত সম্পদের অংশের মালিক বানিয়ে দেয়া।

যাকাত হলো ধনীর সম্পদে গরীবের হক। আল্লাহ বলেন, “আর তাদের সম্পদে গরীব ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে”।[সূরা যারিয়াত: ১৯] কাজেই যাকাত আদায় না করার অর্থ, গরীবকে প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত করা।

যাকাত অনাদায়ের ক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালা কঠিন শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আর যারা স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে,তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে। (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার”।[সূরা তাওবা: ৩৪-৩৫]

যাকাত কখন ফরয হয়?

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের ওপর যাকাত ফরয হয়, যদি তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর পর্যন্ত থাকে।

নেসাবের ব্যাখ্যা:

নেসাব হলো সম্পদের একটি পরিমাপ;সর্বনিম্ন যে পরিমাণ সম্পদ থাকলে ব্যক্তির ওপর যাকাত ফরয হয় এবং তাকে বলা হয় সাহিব-এ-নিসাব।
রাসূল স. সোনা-রূপা, পশু ও ফসলের ভিন্নভিন্ন নেসাব বর্ণনা করে গেছেন।তবে যেহেতু পশু ও ফসল ভিন্ন অন্য সবখাতে সোনা-রূপার নেসাবই ধর্তব্য, তাই আমরা কেবল সেটা নিয়েই আলোচনা করব।

রাসূল স. এর বর্ণিত হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে সোনার নেসাব হয় ৮৭.৪৮ গ্রাম বা ৭.৫ ভরি। আর রূপার নেসাব হয় ৬১২.৩৬ গ্রাম বা ৫২.৫ ভরি। বর্তমান বাজারমূল্য হিসেবে সোনার নেসাব দাঁড়ায় প্রায় তিন লাখ টাকা।আর রূপার নেসাব দাঁড়ায় প্রায় বায়ান্ন হাজার পাঁচ শত টাকা। এই পরিমাণ সম্পদের মালিক কেউ হলে সে সাহিবে নেসাব বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।

যেহেতু যাকাত গরীবের হক, তাই গরীবের যে নেসাবে হিসাব করলে উপকার বেশি হবে, সেটাই হিসাব করা উচিৎ। সে হিসেবে সামর্থ্যবানদের উচিৎ রূপার নেসাবে হিসাব ধরে যাকাত আদায় করা। হ্যাঁ, যদি কারো সামর্থ্য কম থাকে বা কোনো আয়ের কোনো উৎস না থাকে,তাহলে তিনি সোনার নেসাবে উত্তীর্ণ হলেই যাকাত আদায় করবেন।

উল্লেখ্য যে, যাকাত হিসাবের সময় সম্পদের মূল্য হিসাব করতে হয়। আর সম্পদের মূল তা-ই, যা দিয়ে তা বাজারে বিক্রয় করা যায়। কাজেই, সম্পদের বিক্রয়মূল্যই যাকাতের ক্ষেত্রে হিসাব করতে হবে। তা ক্রয়মূল্য বাবাজারমূল্য থেকে কম-বেশী যা-ই হোক।

উদাহরণস্বরূপ, রাশেদ একটি প্লট ক্রয় করেছে চল্লিশ লাখ টাকা দিয়ে। ক্রয়ের সময়ই তা পুন:বিক্রয়ের নিয়্যতে ক্রয় করেছে। যাকাত হিসাবের তারিখে যাচাই করে দেখা গেল যে, প্লটটি এখন পঞ্চাশ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করা যাবে।তখন প্লটটির মূল্য পঞ্চাশ লাখ টাকা ধরেই যাকাত হিসাব করতে হবে।

আবার খালেদ আশি হাজার টাকার শেয়ারক্রয় করেছে, সুযোগ পেলেই বিক্রয় করে দিবে। কিন্তু যাকাত হিসাবের তারিখে বাজারে তার শেয়ারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ত্রিশ হাজার টাকা। কাজেই তাকে ত্রিশ হাজার টাকাই যাকাতের জন্য হিসাব করতে হবে।

যাকাত হিসাবে ঋণের প্রভাব:

যাকাত হিসাব করার সময় ঋণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এ বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

ঋণ দুই রকম হতে পারে।

এক. প্রাপ্য ঋণ বা যে ঋণ অন্যের কাছ থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
দুই. প্রদেয় ঋণ বা যে ঋণ অন্যকে আদায় করতে হবে।

প্রাপ্য ঋণের ক্ষেত্রে বিধান হলো, যখন হাতে আসবে তখন পেছনের বছরসহ যাকাত আদায় করে দিতে হবে। কাজেই পাওয়ার সম্ভাবনাময় ঋণগুলো প্রতিবছর যোগ করে হিসাব করে যাকাত আদায় করে দেয়াই ভালো।

প্রদেয় ঋণ দুই রকম হতে পারে। একবারে পরিশোধযোগ্য ও কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।

যেসব ঋণে কিস্তির সুবিধা নেই এবং তা নগদ আদায় করে দিতে হবে, সেগুলোকে যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ করে নিতে হবে।

আর যেসব ঋণে কিস্তিতে পরিশোধের সুবিধা আছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে পরবর্তী এক বছরের কিস্তি যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ করতে হবে। পুরো ঋণ বিয়োগ করা যাবে না।

যেমন,রাশেদ একটি গাড়ী ক্রয় করল, যার মূল্য বিশ লাখ টাকা। এবং তা পাঁচ বছরে পরিশোধযোগ্য। তো,যাকাত হিসাব করার সময় কেবল এক বছরের প্রদেয় তথা চার লাখ টাকা বিয়োগ দিতে পারবে।

তবে ঋণ যদি প্রয়োজনিতিরিক্ত সম্পদ ক্রয়ের জন্য নেয়া হয়ে থাকে, যেমন, অতিরিক্ত একটি বাড়ি বা গাড়ি,কিংবা ফ্যাক্টরীর একটি অতিরিক্ত মেশিন, যেটার ওপর জীবন নির্ভর করে না, তাহলে তা যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে না।

বরং, এই ঋণ ঐ সম্পদের বিপরীতে ধরা হবে। অর্থাৎ, ঋণ আদায়ে অপারগ হলে তা ঐ সম্পদ বিক্রয় করেই পরিশোধ করা হবে।

বিষয়টা আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক।যাকাতের হিসাব থেকে প্রদেয় ঋণ বিয়োগ দেয়ার কারণ হলো, যেহেতু ঋণ আদায় করতে হবে এই টাকা দিয়েই, তাই তা থেকে খরচ না করা।

কিন্তু প্রয়োজনিতিরক্ত সম্পদে বিনিয়োগের জন্য ঋণ করা হলে, সমস্যা হলে তা বিক্রয় করেই ঋণ আদায় করা সম্ভব।এবং এতে ব্যক্তির জীবন চালাতে কোনো ক্ষতি হবে না। কাজেই এই ঋণ যাকাতের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে না।

উদাহরণস্বরূপ, রাশেদ একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে চল্লিশ লাখ টাকায়। উদ্দেশ্য,দাম বাড়লে বিক্রয় করে দেয়া। রাশেদ তা পাঁচ বছরের কিস্তিতে ক্রয় করেছে। তার মোট প্রদেয় ঋণের পরিমাণ পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা।কিন্তু রাশেদের আরো একটি বাড়ি আছে,যেখানে সে ও তার পরিবার থাকে। কাজেই এই ফ্ল্যাটের টাকা অন্য খাত থেকে পরিশোধ করতে অসমর্থ হলে তা বিক্রয় করেই পরিশোধ করা সম্ভব। কাজেই এই ঋণের টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ দেয়া হবে না।

যাকাত কীভাবে হিসাব করবে?

প্রথমবার নেসাবের মালিক হওয়ার একচান্দ্র বছর পর যাকাত আসে এমন সমুদয় সম্পদের মূল্য টাকায় (বা অন্য কোনোমুদ্রায়) রূপান্তর করে নিবে। এরপর সব যোগ করবে। প্রাপ্য ঋণ থাকলে তাও যোগ করবে। প্রদেয় ঋণ থাকলে, তা নগদে পরিশোধ করতে হলে, পুরোটা বিয়োগ দিবে।আর কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য হলে কেবল পরবর্তী এক বছরের কিস্তি বিয়োগ দিবে।এরপর বিয়োগফলের ২.৫% যাকাত হিসাব করবে।

যাকাতের সম্পদ + প্রাপ্য ঋণ – প্রদেয় ঋণ (নগদ) – প্রদয়ে ঋণ (পরবর্তী এক বছরের কিস্তি) = মোট সম্পদ X২.৫% = যাকাত

যাকাত কাকে দেয়া যায়:

বৈবাহিক সম্পর্ক ও ঔরষজাত সম্পর্কের মানুষকে যাকাত দেয়া যায় না। কাজেই স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র, দাদা-নাতী কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না। অনুরূপভাবে রাসূল স. এর বংশের কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না।

এছাড়া যে কোনো গরীবকে যাকাত দেয়া যাবে।গরীব বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যার হয়ত কোনো সম্পদই নেই। কিংবা আছে, তবে তার প্রয়োজনীয়সম্পদ ও জীবন যাপনে প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিলে তা নেসাবের চেয়ে কম হয়।

আল্লাহ তায়ালা যাকাত আদায়ের সাতটি খাত উল্লেখ করেছেন। ফকীর, মিসকীন, যাকাত উসুল ও আদায়ের কাজে নিয়োজিত, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য, দাসমুক্তির জন্য,ঋণগ্রস্তদের জন্য, জেহাদকারীর জন্য এবং মুসাফির।[সূরা তাওবা:৬০]

যাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। যাকাত আদায়ের সময় ‘যাকাতের টাকা’ উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। আদায়ের সময় বা যাকাতের টাকা আলাদা করার সময় নিয়্যত করলেই হবে। তবে এই দুই সময়ের কোনোটাতেই নিয়্যত না করলে যাকাত আদায় হবে না। এমনিতে কাউকে টাকা দিয়ে পরে তা যাকাতের খাত থেকে দিয়েছে নিয়্যত করলে যাকাত আদায় হবেনা।

এখানে উল্লেখ্য যে, যাকাতের ক্ষেত্রে গরীবকে মালিক বানিয়ে দেয়া শর্ত।কাজেই যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ বানানো, মাদ্রাসা বানানো, রাস্তাঘাট নির্মাণ, কূপ খনন ইত্যাদি করা যাবে না। বরং সরাসরি গরীবকে যাকাতের টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে।

কোনো গরীবকে পড়াশোনা, চিকিৎসা, বিবাহ দেয়ার জন্যও যাকাত দেয়া যেতে পারে। তবে তাকে সে টাকার মালিক বানিয়ে দিতে হবে।

যাকাতের টাকা নগদ না দিয়ে গঠনমূলক কিছুক্রয় করে দেয়া যেতে পারে।যেমন,কেউ কাজ করার সামর্থ্যবান হলে তাকে সেলাই মেশিন, রিক্সা, ভ্যান, কম্পিউটার ইত্যাদি ক্রয় করে দেয়া যেতে পারে। যেন তা দিয়ে উপার্জন করে সে স্বাবলম্বী হতে পারে। এবং এক সময় তাকে আর যাকাত গ্রহণ করতে নাহয়।

অল্প অল্প করে অনেককে না দিয়ে প্রতিবছর প্ল্যান করে কিছু মানুষকে বেশি করে দিলে সে তাকে গঠনমূলক কাজে লাগাতে পারবে।

হারাম সম্পদে যাকাত ও অনাদায়কৃত যাকাত:

যাকাত ফরয হওয়ার পর যাকাত আদায় না করা হলে পরবর্তীতে পূর্বের অনাদায়কৃত সব বছরের যাকাত আদায় করে দিতে হবে।

হারাম সম্পদে যাকাত আসে না এবং হারামসম্পদ দিয়ে যাকাত আদায়ও করা যায়না। যাকাত তো হল সম্পদের কেবল ২.৫শতাংশ। আর হারাম সম্পদ তো পুরো একশশতাংশই দান করে দেয়া ওয়াজীব। কারণ এসম্পদের মালিক ব্যক্তি নয়। কাজেই সুদ,ঘুষ,দুর্নীতি,অন্যায়ভাবে দখলকৃত সম্পত্তি ইত্যাদি সবপ্রকার হারাম সম্পদ তাৎক্ষণিক ভাবে সওয়াবের নিয়্যত ছাড়া দান করে দায়মুক্ত হতে হবে।

ট্যাক্স এবং যাকাত:

সরকারী ট্যাক্স এবং যাকাত এক নয়। যাকাত একটি ইবাদত। কাজেই ট্যাক্সের টাকাকে যাকাত বলে গণ্য করা যাবে না। তবে হ্যাঁ, ট্যাক্সে প্রদেয় টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ দেয়া যাবে।কারণ এটিও একটি ঋণ, যা ব্যক্তির কাছে রাষ্ট্র পাবে।

কাকে যাকাত দেয়াযাবে:

১.মিসকীন: যার কোনো সম্পদ নেই, মানুষের কাছে হাত পেতে চলে।
২.অভাবী: যার সম্পদ আছে, তবে নেসাব পরিমাণ নেই, কারো কাছে হাতও পাতে না সে, অথচ সে তার প্রয়োজন পূরণে অক্ষম।
একাতারে ঋণ আদায়ে অক্ষম ও ভিনদেশী অভাবী মুসাফিরও পড়বে।

চিকিৎসাগ্রহণে অক্ষম ব্যক্তিও এ কাতারে শামিল। অর্থাৎ, কেউ যদি এমনিতে সচ্ছলহয়, কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে অক্ষম হয়, তাহলে তাকেও যাকাতের অর্থ দিয়ে সাহায্য করা যেতে পারে।তবে শর্ত হলো, চিকিৎসার পর্যায়টা এমন হতে হবে যে, যা না করালেই নয়, এবং যে চিকিৎসা করালে তার সুস্থতাও অনেকটা নিশ্চিত।

উদাহরণস্বরূপ, যে চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব, তা যদি সিরফ বিলাসিতা বশত বিদেশে গিয়ে করাতে চায়, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাকে যাকাত দেয়া যাবে না। কিন্তু চিকিৎসকরা যদি বলেন যে, তাকে অমুক দেশে নিতেই হবে, এ ছাড়া কোনো গতি নেই, তখন তাকে সাহায্য করা যেতে পারে। মোটকথা, চিকিৎসা যদি কারো সত্যিই প্রয়োজন হয়, এবং এ প্রয়োজন মেটাতে যদি সে সত্যিই অক্ষম হয়, তাহলে সেও এই অভাবীর পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাকাতগ্রহণ করতে পারবে।

তবে দুই সম্পর্কের মানুষকে যাকাত দেয়া যাবে না।

১.ঔরসজাত সম্পর্ক। যেমন- পিতা ছেলেকে, বা ছেলে পিতাকে।

২.বৈবাহিক সম্পর্ক। যেমন- স্বামী স্ত্রীকে, বা স্ত্রী স্বামী।

এ দুই গ্রুপ ছাড়া অন্য সকল অভাবীকে (উপরোক্ত সংজ্ঞানুসারে) দেয়া যাবে।

যাকাতবিষয়ক কিছু জরুরী জ্ঞাতব্য:

১.যাকাতের ক্ষেত্রে নিয়ত করা (যাকাত দিচ্ছি এই জ্ঞান করা) আবশ্যক। সেটা প্রদান করার সময়ও হতে পারে বা যাকাতের সম্পদ হিসাব করে পৃথক করার সময়ও হতে পারে।
২.প্রতিটা সম্পদের উপর এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরী নয়। বরং, বছরের মাঝে যে সম্পদ অর্জিত হবে, তাতেও যাকাত আসবে।
৩.যাকাত আদায়ের তারিখে যে যে সম্পদ থাকবে, সে সে সম্পদের যাকাত আদায় করবে।
৪.যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণে মনগড়া/অনুমাননির্ভর হিসাব করবে না। বরং পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করে যাকাত আদায় করবে। যেন কোনো ক্রমেই পরিমাণের চেয়ে কম আদায় না হয়।
৫.যাকাত যেদিন হিসাব করে পৃথক করবে, সেদিনের মূল্য ধর্তব্য হবে।
৬.চন্দ্র মাস হিসাব করে যাকাত দিবে। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিবছর রমজানের বা মুহাররমের এক তারিখ যাকাত আদায় করবে।

আল্লাহ আমাদের সকলকে তাঁর বিধান মেনে চলার তাওফীক দিন। আমীন।

Ref:http://bangla.crushbd.com/religion/4528/